ইন্টারনেট
হোম / ধর্ম / বিস্তারিত
ADS

যাদের হাতে ধরে তাবলিগ আজ বিশ্বময়

9 February 2024, 6:27:05

মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভী

তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা ও আমির হলেন মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভী (রহ.)। তিনি ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগর জেলার অন্তর্গত কান্ধলা নামক স্থানে ১৮৮৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাঈল। শিশুকালেই কুরআনের হিফজ সম্পন্ন করেন এবং প্রাথমিক শিক্ষা নিজ ঘরে অর্জন করেন। তিনি বড়ভাই ইয়াহইয়া কান্ধলভীর সঙ্গে মাওলানা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহীর সান্নিধ্যে থেকে ১০ বছর আধ্যাত্মিক সাধনা করেন। ১৩২৬ হিজরিতে দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন। দেওবন্দে শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দি (রহ.)-এর কাছে তিনি বুখারি ও তিরমিজি শরিফ পড়েন। তিনি দ্বীনহারা মানুষকে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনার মহৎ উদ্দেশ নিয়ে ১৯২৬ সালে উত্তর ভারতের মেওয়াত অঞ্চল থেকে শুরু করেন তাবলিগের কাজ। বিংশ শতাব্দীর এ মহান ধর্মপ্রচারক ১২ জুলাই ১৯৪৪ সালে এ পৃথিবী ছেড়ে আল্লাহতায়ালার সান্নিধ্যে চলে যান।

মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী

মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভী (রহ.) এর পর তাবলিগ জামাতের আমিরের পদে অধিষ্ঠিত হন মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী (রহ.)। তিনি মাওলানা ইলিয়াস (রহ.)-এর ছেলে। ভারতবর্ষের উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগর জেলার কান্ধলা নামক স্থানে ২০ মার্চ ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দ রোজ বুধবার জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মাত্র ১০ বছর বয়সে কুরআনের হিফজ সম্পন্ন করেন। হিফজ সম্পন্ন করে বাবা মাওলানা ইলিয়াস (রহ.)-এর কাছেই প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। শায়খুল হাদিস যাকারিয়া (রহ.)-এর কাছে সুনানে আবু দাউদ পড়েন। মাজাহিরুল উলুম মাদ্রাসায় মাওলানা আবদুল লতিফ (রহ.)-এর কাছে সহি বুখারির পাঠ গ্রহণ করেন। শায়খ ইলিয়াস (রহ.)-এর মৃত্যুর পর তাবলিগের মুরব্বিরা তার মাথায় আমিরের পাগড়ি পরিয়ে দেন। তখন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি তাবলিগ ও দাওয়াতের মেহনতের কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ (রহ.) বাংলাদেশে তাবলিগের সফরে আসেন। সেই সময় ঢাকার কাকরাইল মসজিদে এসেছিলেন তিনি। এর আগে তাবলিগের কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে শুরু হলেও মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ (রহ.)-এর আগমনের মাধ্যমেই কাকরাইল মসজিদকেন্দ্রিক আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম শুরু হয়। তাবলিগের এক সফরে ২ এপ্রিল ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি ইন্তেকাল করেন।

মাওলানা এনামুল হাসান

তাবলিগের কাজকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে যারা আমরণ চেষ্টা করেছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম একজন মাওলানা এনামুল হাসান। তিনি গোটা জীবনকে দ্বীনি দাওয়াতের জন্য উৎসর্গ করেছেন। তিনি তাবলিগ জামাতের তৃতীয় মুরব্বি। তিনি ১৯১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের উত্তরপ্রদেশের কান্ধালা নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মাওলানা ইকরামুল হাসান। বাবার কাছেই তার প্রাথমিক শিক্ষার হাতেখড়ি হয়। আনুমানিক নয় কিংবা দশ বছর বয়সে তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মুরব্বি মাওলানা ইলিয়াস (রহ.)-এর তত্ত্বাবধানে নিজামুদ্দিন চলে আসেন এবং মাওলানা ইলিয়াস ও মাওলানা এহতেশামুল হাসানের কাছে আরবি ভাষা-সাহিত্যসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। প্রাথমিক পর্যায়ের কিতাবাদি অধ্যায়ন করার সময়ই শিক্ষক-মুরব্বি মাওলানা ইলিয়াসের নজর কাড়েন এনামুল হাসান। ১৯৬৫ সালে বিশ্ব তাবলিগ জামাতের আমির মাওলানা ইউসুফ কান্দলভী (রহ.) ইন্তেকালের পর শায়খুল হাদিস মাওলানা জাকারিয়া (রহ.) তাকে বিশ্ব তাবলিগ জামাতের আমির হিসাবে মনোনীত করেন। এ মহান মনীষী ১৯৯৫ সালের ১০ জুন ইন্তেকাল করেন।

মাওলানা জুবায়েরুল হাসান

মাওলানা জুবায়েরুল হাসান ছিলেন বিশ্ব তাবলিগ জামাতের অন্যতম নীতিনির্ধারক। ভারতের নিজামুদ্দীন মারকাজের শুরার অন্যতম শীর্ষ সদস্য। তাবলিগ জামাতের একক কোনো আমির না থাকলেও তাকেই শীর্ষ মুরব্বি হিসাবে মানতেন সবাই। তার জন্ম ১৯৫০ সালের ৩০ মার্চ। প্রাথমিক পড়াশোনা বাবা মাওলানা এনামুল হাসানের কাছে সম্পন্ন করেন। আক্বসাদ রায়পুরি (রহ.)-এর কাছে কুরআন শরিফ হিফজ সম্পন্ন করেন। ১৯৭১ সালে ভারতের প্রখ্যাত দ্বীনি প্রতিষ্ঠান জামেয়া মাজাহিরুল উলুম সাহারানপুর থেকে তিনি পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনে শিক্ষাদান ও দাওয়াতি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৪ সালের ৯ আগস্ট প্রথম মাদ্রাসায়ে কাদিমের মসজিদে তাবলিগ জামাতের সঙ্গীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। এর পর থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত জড়িত ছিলেন নবিওয়ালা এ কাজের সঙ্গে। প্রতি বছর টঙ্গীর তুরাগতীরে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমায় তিনি নিয়মিত আসতেন। ইজতেমার বিশেষ আকর্ষণ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করতেন তিনি। তার দোয়ার কারণে হৃদয়ভেজা কান্না আর আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হতো তুরাগতীর। ১৮ মার্চ ২০১৪ সালে রোজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: