ইন্টারনেট
হোম / অর্থনীতি / বিস্তারিত
ADS

বৈদেশিক ঋণের সুদ হার কমবে

2 January 2024, 5:29:47

নতুন বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি সুখবর মিলেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বৈদেশিক ঋণের সুদ হার কমবে।

বৈশ্বিকভাবে মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে আসায় বড় অর্থনীতির দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদ হার আর বাড়াবে না। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে বৈদেশিক ঋণের সুদ হারও কমে আসবে। এতে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণের স্থিতির বিপরীতে সুদ পরিশোধ কমবে।

একই সঙ্গে নতুন ঋণ মিলবে কম সুদে। আমদানির বিপরীতে যে ঋণ নেওয়া হয় সেগুলোর বিপরীতে সুদ হার কমায় আমদানি খরচও কিছুটা কমবে। ইতিমধ্যে ঋণের সুদ হার কমতে শুরু করেছে।

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে বৈদেশিক ঋণের বড় অংশের লেনদেন হয় লন্ডন ইন্টার ব্যাংক অফার রেট বা লাইবর হারে। ছয় মাস মেয়াদি ডলার বন্ডের লাইবর রেটকে বৈদেশিক ঋণের সুদ হারের ভিত্তি ধরা হয়। এর সঙ্গে ২ থেকে ৪ শতাংশ যোগ করে ঋণ সুদ হার নির্ধারিত হয়।

করোনার আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ছয় মাস মেয়াদি ডলার বন্ডের লাইবর রেট ছিল ২ শতাংশ। করোনার সময় ২০২১ সালের ১১ আগস্ট এ হার কমে সর্বনিম্ন দশমিক ১৫ শতাংশে নেমে আসে। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে তা আবার বাড়তে থাকে।

সদ্য বিদায়ী বছরের ২৯ আগস্টএ হার বেড়ে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশে ওঠেছিল। এরপর থেকে ওই হার কমতে শুরুকরেছে। গত ২৯ ডিসেম্বর এ হার আরও কমে ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশে নেমেছে। গত ১৫ মে এ হার সর্বনিæ ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমেছিল।

লাইবর রেট কমার কারণে চলমান বৈদেশিক ঋণের সুদ হার যেমন কমবে, তেমনি কমে যাবে সুদ পরিশোধের বোঝাও। একই সঙ্গে কমবে ঋণের স্থিতি। একই সঙ্গে সুদের হার কমার কারণে দেশের উদ্যোক্তারা বেশি ঋণ নিতে উৎপাহিত হবেন। এতে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে চাপও কিছুটা কমবে।

এদিকে মার্কিন মুদ্রা বাজারে চালু হওয়া সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেটের (সোফর) মাধ্যমেও কিছু ঋণ নেওয়া হচ্ছে। এর হারও কমতে শুরু করেছে। আগে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৪০ শতাংশ। এখন তা কমে ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছে।

এদিকে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমস (ফেড) জানিয়েছে মূল্যস্ফীতির হার নতুন করে আর না বাড়লে তারা নীতি সুদ হার আর বাড়াবে না। ইউরোপেও এ হার কমতে শুরু করেছে। ফলে চলতি বছরে বৈশ্বিকভাবে ঋণের সুদ হার কমবে বলে আভাস দিয়েছে আইএমএফ। তাদের মতে চলতি বছরের শেষ দিকে করোনা মহামারির আগের পর্যায়ে চলে যাবে বৈশ্বিক ঋণের সুদ হার।

করোনার আগে লাইবর রেট ছিল ২ শতাংশ। সংস্থাটি বলেছে, চলতি বছরে বৈশ্বিক ঋণ সংকটও কিছুটা কমবে। ফলে ঋণের প্রবাহ বাড়বে।

বর্তমানে লাইবর রেটের সঙ্গে ২ থেকে ৪ শতাংশ যোগ করে সুদ হার নির্ধারিত হচ্ছে। এ হিসাবে সুদ হার দাঁড়াচ্ছে ৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ থেকে ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশে। যা অনেক বেশি। সুদ হার করোনা মহামারির আগের পর্যায়ে নেমে এলে বৈদেশিক ঋণের সুদ হার কমে দাড়াবে ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশে।

এদিকে বাংলাদেশ যে বৈদেশিক ঋণ নিচ্ছে তার প্রায় ৭০ শতাংশের সুদ হার বাজারভিত্তিক। অর্থাৎ যখন যে সুদ হার থাকবে, তা পরিশোধ করতে হবে। এ কারণে বর্তমানে বেশি সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশকে ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছে ১০৪ কোটি ডলার। গত বছরে আরও বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে। কারণ ওই বছরে সুদ হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠেছিল।

দেশের মোট বৈদেশিক ঋণের স্থিতি গত জুনে ছিল ৯ হাজার ৮১১ কোটি ডলার। গত সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৬৫৫ কোটি ডলারে। আলোচ্য তিন মাসে ঋণের স্থিতি কমেছে ১৫৬ কোটি ডলার। তবে গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় স্থিতি বেড়েছে। গত বছরের জানুয়ারিতে স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৫০০ কোটি ডলার।

ঋণের মধ্যে আমদানির বিপরীতে নেওয়া বায়ার্স ক্রেডিটের পরিমাণ গত অক্টোবরে দাঁড়িয়েছে ৬৫৫ কোটি ডলার। আমদানির বিপরীতে স্থগিত বকেয়া ৮৬ কোটি ডলার ও বৈদেশিক ব্যাক টু ব্যাক এলসির দায় ৯৫ কোটি ডলার।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: