ইন্টারনেট
হোম / অর্থনীতি / বিস্তারিত
ADS

হঠাৎ তেলের কৃত্রিম সংকট, খোলা সয়াবিন ২০০ টাকা

27 April 2022, 2:24:48

ফরিদপুর জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার হাট-বাজারে হঠাৎ সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক স্থানে বোতলজাত করা সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। অসাধু ব্যবসায়ীরা ঈদকে সামনে রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে খোলা তেল দুইশো টাকা করে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে বোয়ালমারী উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। খোলা তেলের লিটার দুইশো টাকা করে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ভোজ্য তেল আমদানি কম থাকায় মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সয়াবিন তেল ২শ’ টাকা লিটার বিক্রি হয়েছে। ঈদ সামনে রেখে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি করায় চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

তবে বিক্রেতাদের দাবি, গত প্রায় এক সপ্তাহ যাবত কোনো কোম্পানি সয়াবিন তেল পাঠায়নি। তাই বাজারে তেলের সংকট দেখা দিয়েছে।

সদরপুর বাজারের মেসার্স আল বারাকা খাদ্য ভান্ডারসহ বিভিন্ন স্থানের একাধিক মুদি দোকানদার বলেন, বাজারে কোনো সয়াবিন তেল নেই, কোনো কোম্পানি তেল সাপ্লাই দিচ্ছে না। বিভিন্ন স্থান থেকে চড়া দামে সংগ্রহ করে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তাদের দাবি, ইন্দোনেশিয়া তেল রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর থেকেই মুনাফা লোভীরা তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারে অস্থিরতা ছড়াচ্ছে।

সদরপুরের নুরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার হাট-বাজারে মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় অসাধু মজুতকারীরা মনগড়া দাম নির্ধারণ করে সাধারণ ক্রেতাদের ঠকানোর সুযোগ পাচ্ছে।

এ ব্যপারে বোয়ালমারী উপজেলার তেলজুড়ী এলাকার বাসিন্দা ও ক্রেতা তৈয়েবুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে দেখি কোম্পানির বোতলজাত তেল উধাও। খোলা তেল দুইশো টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে অধিক মুনাফা অর্জনের লোভে হঠাৎ বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে।

ফরিদপুর শহরের মোহম্মদীয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্ট্যুরেন্টের স্বত্বাধিকারী মো. দাউদুজ্জামান দাউদ বলেন, কিছুদিন আগেও পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক থাকলেও ঈদকে সামনে রেখে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ফের বাজারে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক করে তুলেছে। তিনি প্রশানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ ব্যপারে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ফরিদপুরের সভাপতি শেখ ফয়েজ আহমেদ বলেন, ভোজ্য তেল নিয়ে অনেক দিন যাবৎ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির পায়তারা করছে একটি অসাধু ব্যবসায়ী মহল। এখানে ডিলার ও পাইকারদের হাত রয়েছে বলে আমাদের ধারণা। এ বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থার কঠোর নজরদারি ও বিশেষ অভিযান নিয়মিত করা হলে সরবরাহ স্বাভাবিক হতে পারে।

তিনি বলেন, একাধিক ভোক্তার কাছ থেকে এমন অভিযোগ জানতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে আমাদের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, এ বিষয়ে আমরা বাজার পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। দাম বৃদ্ধি করলে উপজেলার সব বাজারের অবৈধ তেল মজুতকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, বাজারে বিভিন্ন অনিয়ম ও অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অবৈধভাবে মুনাফা অর্জন করতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। প্রায় দিনই বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। খোঁজ খবর নিয়ে এর সত্যতা মিললে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: