![ADS](https://www.protichhobi.com/wp-content/uploads/2021/02/Dhaka-Bazar-24-online-shop-in-Bangladesh.gif)
মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর বইয়ে পাঠকের চোখ
![](https://www.protichhobi.com/wp-content/uploads/2021/03/image-405079-1616523332.gif)
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আনন্দলগ্নে আছে পুরো জাতি। চারদিকে উদযাপন চলছে। বইমেলাও এর থেকে বাইরে নয়। মেলায় প্রকাশ হওয়া গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধে উদ্ভাসিত হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু।
এ বিষয়ের বইয়ে পাঠকের বেশ আগ্রহও আছে। প্রায় সব প্রকাশনা থেকেই আলাদাভাবে দুটো বিষয়ে বই প্রকাশ হয়েছে। তবে যে বইগুলো এসেছে সেগুলোর মান নিয়ে অনেক প্রশ্নও আছে।
এ বিষয়ে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির যুগান্তরকে বলেন, সংখ্যার বিচারে অনেক বই প্রকাশ হয়েছে ও হচ্ছে। কিন্তু মানের বিচারে বইয়ের সংখ্যা খুব বেশি নয়। এদিক থেকে আমি হতাশ। প্রকাশিত এসব বই বেশির ভাগই একই তথ্য নিয়ে প্রকাশ হচ্ছে। এতে বেশির ভাগ বইয়ের মধ্যে বিষয়গত দিক থেকে কোনো তফাত নেই। যারা এ কাজগুলো করছেন তারা দায়সারাভাবে বই প্রকাশ করছেন।
এদের অনেকেই গবেষক নন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে বইয়ের চাহিদা তৈরি হওয়ায় প্রকাশকরা যেনতেনভাবে লেখা এসব বই প্রকাশ করছেন। এটি খুব হতাশাজনক বঙ্গবন্ধুর জন্মের একশ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও সরকারিভাবে তার জীবনী প্রকাশ করা হয়নি।
এদিকে মেলায় ঘুরে কয়েকজন পাঠকের সঙ্গে এ বিষয়ে তাদের মতামত নেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শোভন আহমেদ বলেন, সত্যি বলতে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে আমরা আরও জানতে চাই। কিন্তু বাজারে এত বইয়ের ভিড়ে কোন বইটি যে আসলে পাঠযোগ্য, তা বুঝে ওঠা সত্যি কষ্টসাধ্য। আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধু বা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে বই প্রকাশের ক্ষেত্রে এবং বিষয় নির্বাচনে আরও যত্নবান হওয়া উচিত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী টিনা মাহমুদ বলেন, কার বই কোথা থেকে বের হচ্ছে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বা ‘কারগারের রোজনামচা’ যখন প্রকাশ হলো, তখন আমাদের বুঝতে কষ্ট হলো না এগুলো নির্ভরযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ। পড়ার পর সত্যি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। একইভাবে অন্যরকম এক বঙ্গবন্ধুকে পাওয়া গেল ‘আমার দেখা নয়াচীন’ গ্রন্থে। এই বইগুলো আমাদেরকে আলোকিত করেছে। বই প্রকাশ হলে এমন হওয়া উচিত, যেগুলো আমাদেরকে নতুন পথ দেখাবে।
মেলায় এবার বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বেশকিছু বই প্রকাশ হয়েছে। এর মধ্যে অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশ হয়েছে হারুন হাবীবের ‘কলকাতা ৭১’, হারুন-অর-রশীদের ‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা’, গ্রন্থকুটির থেকে এসেছে হাবীবুল্লাহ সিরাজীর কাব্যগ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা’। আগামী প্রকাশনী থেকে এসেছে মোনায়েম সরকারের ‘স্বাধীন স্বদেশে জনকের প্রতিধ্বনি’, হুমায়ুন মালিকের উপন্যাস ‘মুজিব’, আসাদ মান্নানের কাব্যগ্রন্থ ‘এলিজি মুজিব নামে’, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর ‘শেখ কামাল যদি আজ বেঁচে থাকতেন’ এবং মইনুল আহসান সাবেরের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই ‘পাথর সময়’, অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরীর বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’, আহমদ পাবলিশিং হাউস থেকে ড. আনু মাহমুদের প্রবন্ধ ‘বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের স ষ্টা’ প্রভৃতি।
মূলমঞ্চ : বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : মুক্তিযুদ্ধ ও নারী’ শীর্ষক আলোচনা। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মনিরুজ্জামান শাহীন। আলোচনায় অংশ নেন মোহাম্মদ জাকীর হোসেন ও একেএম জসীমউদ্দীন। সভাপতিত্ব করেন সেলিনা হোসেন। প্রাবন্ধিক বলেন, সাধারণত মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকাকে দেখা হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হিসেবে।
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে আমাদের দেশে নারী সমাজের রয়েছে অসাধারণ ভূমিকা। দেশমাতৃকার টানে জীবনবাজি রেখে তাদের অনেকে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রতিরোধ ও রণাঙ্গনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সংগঠকের দায়িত্ব পালন, মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিপর্বে প্রশিক্ষণ গ্রহণ, মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়দান, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা, মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী হিসাবে থাকা, শত্রুশিবিরের তথ্য সংগ্রহ করা, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখাসহ বিভিন্ন ভূমিকা পালন করেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা ছাড়াও দেশে-বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন গড়ে তোলায় নারীরা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে নারীর অসীম সাহসিকতা ও বহুমাত্রিক ভূমিকার কথা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে সেলিনা হোসেন বলেন, নারী-পুরুষের যৌথ শক্তিতেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সফলতা লাভ করে।
মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি নারীরা যে অসীম সাহস ও বীরত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তা আমাদের স্মরণ রাখতে হবে। প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ ছাড়াও নারীরা সমাজের নেপথ্য শক্তি হিসাবে সমাজ-কাঠামো ধরে রেখেছিল বলেই স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দেশ পুনর্গঠন সম্ভব হয়েছিল।
মঙ্গলবার লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন মোহিত কামাল, জাহেদ সারওয়ার ও অনন্ত উজ্জ্বল।
আজকের মেলা : আজ বুধবার অমর একুশে বইমেলার সপ্তম দিন। মেলা চলবে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : মুক্তিযুদ্ধে সংবাদ সাময়িকপত্র’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জাফর ওয়াজেদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মোহাম্মদ সেলিম, মো. এমরান জাহান ও কুতুব আজাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।
![ADS](https://www.protichhobi.com/wp-content/uploads/2021/03/protichhobi-job.gif)
![ADS](https://www.protichhobi.com/wp-content/uploads/2021/03/aain-upodestha-kendro.gif)
প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Comments: