ইন্টারনেট
হোম / তথ্য-প্রযুক্তি / বিস্তারিত
ADS

ফাইভ জি নিয়ে যা বললেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

12 December 2021, 7:16:45

পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ফাইভ-জি প্রযুক্তির উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, আমার নিজের ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও ফাইভ-জি প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত সকল অংশীজনদের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি – কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

ডিজিটাল বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় বিশ্বে নতুন সভ্যতার রূপান্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি, রোবোটিক্স, বিগডাটা, ব্লকচেইন, আইওটি, স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রাদি ও অন্যান্য প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্ক অপরিহার্য এক প্রযুক্তির নাম। এই প্রযুক্তি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বংলা ও শেখ হাসিনার উন্নত , সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বা সোসাইটী ৫.০-এর জন্য অপরিহার্য।

২০১৮ সালে বার্সিলোনায় ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসে ফাইভ-জি ধারণাটি পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা জনাব সজীব আহমেদ ওয়াজেদ – জয় মহোদয়ের সরাসরি উপস্থিতিতে আমরা ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় এই প্রযুক্তির প্রথম পরীক্ষা সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করেছি। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি আগামীকাল ১২ ডিসেম্বর ২০২১ সালে পঞ্চম ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসে বাংলাদেশ ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। মাননীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা ভাচুর্য়ালি উপস্থিত থেকে এই ঐতিহাসিক যাত্রার শুভ উদ্বোধন করবেন।

উদ্বোধনের এই মাহেন্দ্রক্ষণটি ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত দূরদৃষ্টি কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ফাইভ-জি যুগে প্রবেশ করছে। ২০২০ সালে বিশ্বের ৬/৭টি দেশ ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু করতে সক্ষম হয়। মালয়েশিয়া আগামী মার্চে পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভ-জি চালু করতে যাচ্ছে। আমাদের জন্য অহংকারের বিষয় হচ্ছে বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যেখানে ফাইভ-জি যুগে যেতে পারেনি, অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করা একসময়ের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির বাংলাদেশ প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে উন্নত বিশ্বের সমান্তরালে চলছে। বাঙালি জাতির এই অর্জন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ১৯৭৩ সালে আইটিইউ ও ইউপিইউ এর সদস্য পদ অর্জন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন এবং ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভি-স্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালু, মোবাইল ফোনের মনোপলি ব্যবসা বন্ধ করে ৪টি মোবাইল অপারেটরকে লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে মোবাইল ফোন সাধারণের নাগালে পৌঁছে দেওয়া এবং কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার করে কম্পিউটারে সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা সর্বোপরি ২০০৯ সাল থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতারই ফসল। আমি ডিজিটাল যুগে প্রবেশের প্রাক্কালে জাতির হাজার বছরের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর প্রতি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের স্থপতি জনাব সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়-এর প্রতি আমি আমার নিজের ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

বন্ধুগণআপনারা জানেন, ২০১৮ সালে ঘোষিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ফাইভ-জি চালু করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একমাত্র মোবাইল অপারেটর টেলিটক সীমিত পরিসরে মাননীয় উপদেষ্টার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ১২ ডিসেম্বর ফাইভ-জি চালু করতে যাচ্ছে।

ফাইভ-জি প্রযুক্তি সেবা কেবল গ্রাহকদের জন্য মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও ভয়েস কলের প্রযুক্তি নয়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আইওটি, রোবোটিক্স, বিগডাটা, ব্লকচেইন, আইওটি প্রযুক্তির আইওটি, হিউম্যান টু মেশিন, মেশিন টু মেশিন, ইত্যাদি প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ক্রিটিক্যাল মিশন সার্ভিস, স্মার্ট গ্রিড, স্মার্ট সিটি, স্মার্ট হোম, স্মার্ট ফ্যাক্টরী সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।

এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল গ্রাহকরা অধিকতর উন্নত গুণগত মানের ভয়েস কল ও ৪জি হতে বহুগুণ দ্রুত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে সক্ষম হবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকায় বসে প্রত্যন্ত অঞ্চলে রোগীর রোবট সার্জারি করা যাবে। ড্রাইভার বিহীন গাড়ি চালানো যাবে, স্মার্ট ফ্যাক্টরী স্থাপনের মাধ্যমে অটোনোমাস উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা যাবে। প্রাথমিকভাবে টেলিটক ঢাকা শহরের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, ধানমন্ডী ৩২, বাংলাদেশ সচিবালয়, মানিক মিয়া এভিনিউ এবং ঢাকার বাইরে সাভার ও টুঙ্গিপাড়া এই ছয়টি এলাকা ফাইভ-জি কাভারেজের আওতায় আনা হচ্ছে। পরবর্তীতে টেলিটক ঢাকা শহরের ২০০টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এ প্রযুক্তি সেবা চালু করবে। আগামী বছর মার্চে বেতার তরঙ্গ বরাদ্দ নিলামে দেওয়ার পর বেসরকারি তিনটি মোবাইল অপারেটর এই প্রযুক্তি চালু করবে । দুই হাজার ২২ সালের পর টেলিটক ও বিটিসিএল এর মাধ্যমে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চল বিশেষ করে স্পেশাল ইকোনোমিক জোনসমূহে এই সেবা চালু করার প্রস্তুতির কাজ চলছে। প্রিয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরাডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে প্রেরণাদায়ী এক দর্শন। এই কর্মসূচি দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়ার সোপান। ডিজিটাল প্রযুক্তি উদ্ভাবন, উপযোগী মানব সম্পদ সৃষ্টি, ডিজিটাল প্রযুক্তির আধুনিক সংস্করণের সাথে জনগণের সেতুবন্ধন তৈরি সরকারের লক্ষ্য। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির গৌরবোজ্জ্বল আলোকচ্ছটা গত ১৩ বছরে বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে ইংল্যান্ড, ভারত, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের দেশে দেশে উদ্ভাসিত হয়েছে – অনুকরণীয় হচ্ছে। পিতৃভূমি কেনিয়ার রূপান্তরে বাংলাদেশকে অনুসরণ করার জন্য কেনিয়াবাসিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জনাব বারাক ওবামার পরামর্শ প্রদান বাংলাদেশের অগ্রগতির এক ঐতিহাসিক দলিল। বারাক ওবামার বাংলাদেশকে অনুসরণ করার এই পরামর্শ তাঁরই পূর্বসূরি সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব হেনরি কিসিঞ্জারের তলাহীন ঝুড়ি হিসেবে কটুক্তি করার কঠিন জবাব। আগামী দশ বছরে পাকিস্তানকে উন্নয়নে বাংলাদেশের সমপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাক-প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতি পাকিস্তানি নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা বাংলাদেশকে মহিমান্বিত করেছে। প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন কর্মসূচি দিনবদলের সনদ ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি – পাল্টে দিয়েছে চিরচেনা বাংলাদেশ – অভাবনীয় রূপান্তর ঘটেছে মানুষের জীবনযাত্রার। অনাহার, অর্ধাহার, দারিদ্র্য এবং অনুন্নত যোগাযোগসহ অভাব আর অপ্রতুলতার মতো শব্দ গুলো আজ হারিয়ে যেতে বসেছে ৫৫ হাজার বর্গমাইলের এই জনপদ থেকে। সুদক্ষ কাণ্ডারির মমতাময়ী হাতের ছোঁয়ায় চিরায়ত দু:খিনী বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল – ডিজিটাল দুনিয়ার অহংকার। জাতি হিসেবে আমরা ধন্য। বন্ধুগণডিজিটাল প্রযুক্তি খাতকে ঘিরে দেশে প্রতিনিয়ত গড়ে উঠছে ব্যবসা ও সেবানির্ভর প্রতিষ্ঠান। আমি আগেই বলেছি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ উন্নয়নের এক যুগান্তকারী দর্শনের নাম – বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার দীপ্ত অঙ্গিকারে পথচলার শপথ। আপনারা জানেন,ডিজিটাল শব্দটির উৎপত্তি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। এ দর্শন শিক্ষা, স্বাস্হ্য, ব্যবসায়-বাণিজ্য, কর্মসংস্হান, দারিদ্র্য বিমোচনসহ সকল ক্ষেত্রে ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে প্রযুক্তির লাগসই প্রয়োগের একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা। এ উন্নয়ন দর্শনে ডিজিটাল প্রযুক্তির সম্প্রসারণ এবং প্রযুক্তির বহুমাত্রিক ব্যবহার অন্যতম। সুপ্রিয় বন্ধুগণপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্বভার গ্রহণকালে বাংলাদেশের টেলিডেনসিটি ছিল ৩০ শতাংশ। বর্তমানে এই হার প্রায় শতভাগে উন্নীত হয়েছে। (৩)২০০৮ সালে যেখানে মোবাইল গ্রাহক ছিল ০৪ কোটি ৪৬ লাখ, বর্তমানে তা ১৭ কোটি ৬৪ লাখে অতিক্রম করেছে। এই সময়ে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল মাত্র ৮ লক্ষ, বর্তমানে এ সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৯ লাখ। ব্যান্ডউইডথের ব্যবহার যেখানে ছিল ৭ দশমিক ৫ জিবিপিএস বর্তমানে তা ২৭শত জিবিপিএস অতিক্রম করেছে। ২০০৮ সালে টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত লাইসেন্স ছিল ৬০৮টি, বর্তমানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এ সংখ্যা ৩,৩৯৬টি। ২০০৮ সালে এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইডথ চার্জ ছিলো ২৭০০০/ টাকা যা ২০১৮ সালের পর সর্বনিম্ন ২৮০ টাকা নির্ধারিত হয়। এখন সেটি এমনকি একশো টাকার নিচে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল সংযোগ প্রতিষ্ঠায় ডিজিটাল অবকাঠামো সম্প্রসারণে ২০১৮ সালের পর গত তিন বছরে অভাবনীয় পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ফোর-জি বেতার তরঙ্গ নিলাম এবং ২০ ফেব্রুয়ারি মোবাইল অপারেটরদের ফোর-জি লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে ফোর-জি সেবা চালু করা হয়। মহাকাশে বাংলাদেশের পদচারণার প্রথম সোপান “বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১” ১২ মে ২০১৮ তারিখ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। (৫)মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ এর পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণের অভিযাত্রা শুরু হয়েছে। কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের পর দেশের তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে টেলিযোগাযোগ খাতে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয় সিগনিফিকেন্ট মার্কেট পাওয়ার বা এসএমপি নীতিমালা। মোবাইল ফোনের নিরবচ্ছিন্ন গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন নীতিমালার পাশাপাশি সর্বশেষ ২০১৮ সালের পর ২০২১ সালের ৮ মার্চ নিলামে তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি উদ্বোধন করা হয়েছে আইএমইআই ডাটা সেন্টার। রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা বিধানে অনিবন্ধিত সিমকার্ড বিক্রি, অনুমোদনহীন মোবাইল হ্যান্ডসেট বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ১৫০ টাকায় বিটিসিএল ল্যান্ড ফোনে যতখুশি তত কথা বলা চালু লাইনরেন্ট মওকুফ এবং ৫২ পয়সা মিনিটে অন্য অপারেটরে কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট এই সেবাটি চালু করা হয়। বিনামূল্যে দেশের ৫৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্রিওয়াইফাই জোন স্হাপনের কার্যক্রম আমরা বাস্তবায়ন করেছি। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবল সম্প্রসারণ করা হয়েছে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল, হাওর, পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম পাহাড় উপকূলীয় ও দ্বীপ এলাকায় স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক সমপ্রসারিত হচ্ছে। ইন্টারনেটের একদেশ একরেট নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ৬ জুন ২০২১ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে একদেশ এক রেট চালু করা হয়। কোভিডকালে মানুষের জীবন যাত্রা সচল রাখতে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত শতভাগ টাওয়ার ফোরজি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। দেশ ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও রপ্তানি শুরু হয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার স্হাপন, রক্ষণাবেক্ষেণ ও অবকাঠামো ব্যবস্হাপনায় বিপুল ব্যয়ের পাশাপাশি টাওয়ারের অনিয়ন্ত্রিত সংখ্যা, ভূমি ও বিদ্যুতের সংকট ছাড়াও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবের বিভিন্ন দিক বিবেচনায় মানসম্মত টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানে গত ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর ৪টি কোম্পানিকে এ লাইসেন্স দেওয়া হয়। মোবাইল ফোন ও নেটওয়ার্ক এখন মানুষের জীবনের শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রযুক্তি বান্ধব বিনিয়োগ নীতির ফলে দেশে বর্তমানে মোবাইল ফোনের চাহিদার শতকরা ৬৩ ভাগই বাংলাদেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। স্যামসাং ও শাওমিসহ দেশে ১৪টি মোবাইল কোম্পানি অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে মেড-ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ডের ফাইভজিসহ সকল ধরণের সেট রপ্তানি করছে। হাওর ও দুর্গম দ্বীপ অঞ্চলে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক সমপ্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসওএফ এর অর্থায়নে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। টেলিফোন শিল্প সংস্হা ডিজিটাল ডিভাইস নির্মাণের উপযোগী করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দেশের বাইরে বাংলাদেশের তৈরি ল্যাপটপ ও কম্পিউটার রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। টেলিটক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণ ও প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, দমন, বিচার ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়নকল্পে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ প্রণয়ণ ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এছাড়াও বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত দুর্গম ও উপকুলীয় এলাকায় বিভিন্ন জনপদ ও স্হাপনায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ এর মাধ্যমে সংযোগ স্হাপনে ৬৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এবং সুবিধা বঞ্চিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্হা ডিজিটাল করণে ৮৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। গত ৯ নভেম্বর ২০২১ তারিখে আমরা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারিদের জন্য এবং অপারেটর সমূহের প্যাকেজ বিড়ম্বনা যৌক্তিক মাত্রায় নির্ধারণ করার মাধ্যমে গ্রাহক সুবিধা নিশ্চিত করতে একটি অ্যাপ চালু করেছি। গত ৯ নভেম্বর ২০২১ তারিখ বিটিআরসি কর্তৃক মোবাইল ডেটা প্যাকেজ নির্দেশিকা এবং টেক্সট এর মাধ্যমে ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার ও ডিসকভার অ্যাপ উদ্বোধন করা হয়। প্রিয় সাংবাদিক বৃন্দআসুন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ বিনিমর্াণে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা গৃহীত ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন সফল করি – উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াই। আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা ও সুস্বাস্হ্য কামনা করে বক্তব্য শেষ করছি।

খোদা হাফেজ। জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধুবাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: