ইন্টারনেট
হোম / বিনোদন / বিস্তারিত
ADS

আনন্দের বাঁধ ভেঙেছে তারকাদের মনেও

25 June 2022, 10:53:41

উদ্বোধন হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। আনন্দে আত্মহারা নদীর দুই পাড়ের মানুষ। এই সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হয়ে গেল। তারপর আবার বিশাল বাজেটের এ সেতুটি নির্মিত হয়েছে সম্পূর্ণই সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে। ফলে সাধারণ জনতার পাশাপাশি পদ্মা সেতু নিয়ে গর্বিত ও বাঁধ ভাঙা আনন্দ তারকাদের মধ্যেও।

চলুন তবে এক নজরে দেখে আসি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে শোবিজের তারকারা কে কী বলছেন-

চিত্রনায়িকা নিপুন আক্তার বললেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের আত্মমর্যাদা, আমাদের অহংকার। শত বাঁধা, ষড়যন্ত্র অতিক্রম করে পদ্মা সেতু আজকে চালু হলো। এটি শুধুমাত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যই সম্ভব হয়েছে। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী আপনাকে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন আরেক চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববিও। তিনি বলেছেন, ‘খুব ভালো লাগছে। এত বছরের একটা অপেক্ষা শেষ হয়েছে। খুবই সুন্দর একটি জিনিস প্রধানমন্ত্রী বাস্তবে রূপায়িত করেছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক বলেন, ‘পদ্মা সেতু সারা বাংলাদেশের মানুষকে এক করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, বাঙালি জাতি চাইলে অনেক কিছু করতে পারে। আমরা আবারও প্রমাণ করেছি আমাদের সক্ষমতা কতটা। নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে তা বুঝিয়ে দিয়েছি। শুভ কামনা।’

এ প্রজন্মের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ফাতেমা তুয জাহরা ঐশী বলেছেন, ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সে স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়ে গেছে। ব্যাপারটি আমাদের জন্য যতটা আনন্দের, ঠিক ততটাই আবেগের। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সঙ্গে অন্যরকম সংযোগ স্থাপন হয়েছে। এতে করে দেশের অর্থনীতির অনেক উন্নতি সাধন হতে যাচ্ছে।’

অভিনেতা ও নির্মাতা মীর সাব্বিরের বিশ্বাস, ‘পদ্মা সেতুর সুবাদে বাংলাদেশের নাটক-চলচ্চিত্র এখন আর আগের মতো ঢাকাকেন্দ্রিক থাকবে না। দুটি শিল্পেরই পরিসর আরো বড় হবে। তাতে আমরা যেমন উপকৃত হবো, তেমনি যারা আমাদের কাজ দেখেন, সেই দর্শকদের মধ্যেও এটি চমৎকারভাবে ছড়িয়ে যাবে।’

অভিনেতা আরও বলেন, ‘বরগুনার গ্রামের বাড়ি থেকে লঞ্চে চড়ে প্রথমবার ঢাকায় আসতে তার দেড় দিন লেগেছিল। তিনি এখন ভাবছেন, ‘পদ্মা সেতু হয়ে যাওয়ায় ঢাকা থেকে বরগুনা চলে যেতে পারবো পাঁচ-ছয় ঘণ্টার মধ্যে। এটি আমার কাছে খুব অবিশ্বাস্য লাগে। পদ্মা সেতু আমাদের বরিশাল, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠির জন্য একটি বিস্ময়।’

ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নাদিয়া আহমেদ বলেছেন, ‘সত্যি কথা বলতে, লঞ্চে যাতায়াত করতে হবে বলে দক্ষিণাঞ্চলে গিয়ে কাজ করা হতো না। পদ্মা সেতুর ফলে এখন প্রচুর শুটিং হবে ওইদিকে। তাছাড়া ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের জেলারগুলোর যে সংযোগ স্থাপন হলো পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে, বর্তমান সরকারের এই কীর্তির কথা সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে।’

সাবেক মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীর দৃষ্টিতে, ‘পদ্মা সেতুর মাধ্যমে শুটিংয়ের জন্য নতুন লোকেশন পাওয়া যাবে। একইসঙ্গে এটি আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পকে অনুপ্রেরণাও জোগাবে।’

পিরোজপুরের মেয়ে ঐশী আরও বলেন, ‘ফেরির ভয়ে বছরের পর বছর বাড়ি যাওয়া হয়নি। এমনও হয়েছে যে, বিমানে উড়ে যশোর গিয়েছি, সেখান থেকে বাড়ি গিয়েছি। এখন আমার জন্য বাড়ি যাওয়া খুব সহজ হয়ে যাবে। এজন্য অসম্ভব আন্দ লাগছে। আমি একদিন ছুটি পেলেও এখন গ্রামের বাড়িতে বাবা-মায়ের কাছে চলে যাবো।’

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক নিয়াজ মাহবুব বলেন, ‘পদ্মার ওপারে কিছু জায়গাকে শুটিং স্পটে রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন অনেকে। সেতু চালু হওয়ায় এখন অনেক সুন্দরভাবে শুটিং করা যাবে। পূবাইল আর মানিকগঞ্জ ছাড়া কিন্তু আমাদের সেভাবে শুটিং স্পট নেই। শরীয়তপুর ও বরিশালে আমার অনেক বন্ধুবান্ধব আছে, তারা ইতোমধ্যে শুটিং স্পট বানানোর চিন্তা-ভাবনা করেছে।’

সংগীতশিল্পী প্রতীক হাসান বলেন, ‘পদ্মা সেতুর সুবাদে কনসার্টের সংখ্যা বাড়বে। যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন অনেক ভালো। দক্ষিণবঙ্গে অনেকে গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। আজ (২৫ জুন) থেকে পদ্মার ওপারে আমার কয়েকটি কনসার্ট শুরু হবে। মাদারীপুরের শিবচর থেকে শুরু করবো। তারপর খুলনায় শো আছে। বলা যায়, পদ্মা সেতু সংগীতশিল্পীদের জন্য একটি নতুন ডানা।’

গায়ক আরও বলেন, ‘এখন আমার নিজের গ্রামের বাড়ি যেতে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগবে। অথচ আগে লাগতো ৯ ঘণ্টা। আমি এখন ইচ্ছে হলেই গ্রামে চলে যেতে পারবো। আগে ইচ্ছে থাকলেও শরীর চাইতো না। শরীর চাইলেও সময় হতো না। বিশেষ করে ফেরির ঝক্কি মেনে নেওয়া কষ্টকর ছিল। সেই ঝক্কি এখন আর পোহাতে হবে না।’

ছোটপর্দার এই প্রজন্মের অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব বলেন, ‘শুটিংয়ের জন্য আমাদের অনেক লোকেশনে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলে পুরো ইউনিট নিয়ে যাওয়া অনেক খরচের ব্যাপার। এ কারণে কেউ সেই চিন্তাই করতো না। আজ থেকে ৩০ জুন আমার একটি নাটকের শুটিং হওয়ার কথা ভোলায়। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ইউনিটের মাইক্রোবাস ব্যবহার করে ভোলা চলে যেতে পারবো। এভাবে আমাদের জন্য বিভিন্ন লোকেশনে যাওয়া এখন থেকে অনেক সহজ হবে।’

তৌসিফ আরও বলেন, ‘তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে যেতে পারবো। এখন শুধু বরিশাল থেকে ভোলা পর্যন্ত ফেরি পার হওয়া লাগবে। এতে খরচ অনেক কমবে। অনেক সময়ও বাঁচবে। মোট কথা, আগে ভোলায় যেতে ভাবতে হতো, অর্ধেক দিন লাগবে। এখন আর সেই দুশ্চিন্তা নেই। এখন খুব সকালে রওনা দিলে হয়তো গ্রামে গিয়ে নাশতা করাও সম্ভব।’

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: