ইন্টারনেট
হোম / অর্থনীতি / বিস্তারিত
ADS

ঈদের পর সবজির দামে নাভিশ্বাস

6 May 2022, 6:14:08

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে মরার ওপর খড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে সবজির দাম। ৫০ টাকার নিচে ভালো কোনো সবজি মিলছে না বাজারে। হাতে গোনা দু একটি ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম হাফ সেঞ্চুরি পেরিয়েছে। ফলে দিন স্বল্প আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ সবজির দামই চড়া। ক্রেতারা দাম শুনে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিক্রেতারা পেছন থেকে হাঁকডাক দিলেও ক্রেতারা তাতে সাড়া দিচ্ছেন না।

স্বল্প আয়ের মানুষের প্রশ্ন আমরা খাবটা কি, অল্প আয়ে সংসার চালাব কি করে। সব জিনিসের দাম যে হারে বাড়ছে, সে হারে তো আয় বাড়ছে না।

বিক্রেতাদের দাবি, ঈদের সময় সবজির সরবরাহ কম থাকায় পাইকারি বাজারে দাম একটু বেশি। তাদেরও বাড়তি দামে কিনতে হয়েছে। তাই তারাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

রাজধানীর হাতিরপুল বাজারে কথা হয় নিউ মার্কেটের কাপড়ের দোকানের কর্মচারী হাবিবের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদের পর বাজারে এসে জিনিসপত্রের দাম শুনে মাথা ঘুরাচ্ছে। সব জিনিসের দামই বেশি। হাতে গোনা দু একটি ছাড়া অন্যান্য সবজির দামই ৫০ টাকার উপরে। সব কিছুর দাম যদি এভাবে বাড়তে থাকে তাহলে আমরা খাবোটা কি?

নিউমার্কেট কাঁচা বাজারে গিয়ে হতাশ বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক আব্দুল জলিল। তিনি কি কিনবেন সেটা বুঝতে পারছেন না। বাজার ঘুরে সাধ্যের মধ্যে সবজি না পেয়ে হতাশ। কারন, প্রায় সবজির দামই বেশি।

জানতে চাইলে নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের বিক্রেতা লিটন বলেন, ঈদের সময় সরবরাহ কম, তাই সবজির দাম কিছুটা বাড়তি।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শসা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা আর গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ১০০ টাকা, চাল কুমড়া পিস ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, পেঁপের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবাটির কেজি ৬০ টাকা, মটরশুটির কেজি ১২০ টাকা।

তবে অন্যান্য সবজির তুলনায় পেঁপের দাম বেশি।বাজারে পেঁপের দাম এত বেশি কেনো এ প্রশ্নের জবাবে কৃষিমার্কেটের সবজি বিক্রেতা কাওসার হোসেন বলেন,আসলে এটা পেঁপের সিজন না। বাজারে যা আছে সবই পুরাতন গাছের পেঁপে। এছাড়া সরবরাহও কম, তাই পেঁপের দাম বাড়তি। নতুন পেঁপে বাজার আসার পর দাম স্বাভাবিক হবে।

তবে আলু এবং পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, পেঁয়াজ ৩৫ টাকা কেজি। এছাড়া কাঁচামরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা।

মাছের দাম কমলেও পোয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজিতে। বাজারে বড় রুই দুই কেজি ওজনের প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ঈদের আগে ছিল ৩২০-৩৫০ টাকা। ছোট রুই (নলা) ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ২০০ টাকা, রুই এক-দেড় কেজি ওজনের প্রতি কেজি ২৩০ টাকায়। কাতল মাছ তিন-চার কেজি ওজনের প্রতি কেজি ৩২০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, পাঙাশ ১৫০ টাকা, মৃগেল দেড় কেজি ওজনের প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। শিং মাছ ৩৮০ টাকা আর বড় ইলিশ ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

ঈদের পরে গরুর মাংসের দাম ৭০০ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি।

বেড়েছে মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা। লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেই দাম ছিল ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের মুরগি বিক্রেতা আফজাল হোসেন বলেন, ‘মুরগির সাপ্লাই কমে গেছে। ফলে আমাদের বেশি দামে কিনতে হয়। এমনিতেও ক্রেতাদের চাহিদা কম, তারপরেও মুরগির দাম বেশি। ক্রেতাদের চাহিদা বাড়লে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।’

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: