ইন্টারনেট
হোম / সারা বাংলা / বিস্তারিত
ADS

বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে তিস্তার পানি

5 October 2025, 10:42:48

ভারিবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। তিস্তা নদীর বাংলাদেশের প্রবেশদ্বার নীলফামারীর ডিমলার কালিগঞ্জ সীমান্তের জিরোপয়েন্টে অবস্থিত বাংলাদেশ ভারতের তিস্তা নদীর ডান তীরে নির্মিত যৌথবাঁধে আঘাত হানতে শুরু করেছে তীব্র স্রোতে।

এতে যৌথবাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। এটি বিধ্বস্ত হলে তিস্তা নদীর পানি লোকালয়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

রোববার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়ার বাইশপুকুর পয়েন্টে পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ২৮ মিটার; যা বিপৎসীমার (৫২.১৫) ১৩ সেন্টিমিটার উপরে ছিল। এতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইচগেট খুলে রেখেছে।

ডিমলার কালিগঞ্জ এলাকার জনপ্রতিনিধি বাবুল হোসেন জানান উজান থেকে তিস্তার পানি তীব্রগতিতে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। কালিগঞ্জ জিরো পয়েন্ট নামক স্থানে যৌথবাঁধটি রীতিমতো হুমকির মুখে পড়েছে। ওপারে ভারতের মেখলিগঞ্জ এলাকা। তবে বাংলাদেশ অংশের স্থানে এটি বিধ্বস্ত হলে তিস্তা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্বছাতনাই বালাপাড়া, খগাখড়িবাড়ী ডিমলা সদর হয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

তিনি বলেন তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেও পানি অপসারণ ঠিক মতো হচ্ছে না। এখন ফাড বাইপাস ওপেন করে দিলে যৌথবাঁধটি রক্ষা পেতে পারে। সেখানে এলাকাবাসী নিজস্ব বস্তায় বালি ভরে যৌথবাঁধটি রক্ষা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

ডোমার ও ডিমলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বলেন, যৌথবাঁধটি রক্ষার্থে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। পাশাপাশি বিএনপির ডিমলা উপজেলার নেতাকর্মীরা যৌথবাঁধে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বস্তা ফেলে রক্ষার চেষ্টা করছে।

এদিকে হু-হু করে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা পূর্বছাতনাই, খগাখগিবাড়ি, গয়াবাড়ি, টেপাখরিবাড়ি, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছচাঁপানী ইউনিয়নের চরগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালিগঞ্জ, আদিতমারী, সদর এলাকার চর ও নিন্মাঞ্চলে নদীর পানি প্রবেশ করে প্লাবিত করছে।

জনপ্রতিনিধিরা জানান, সকাল ৯টা পর্যন্ত তিস্তা নদী ছিল শুকনা। হঠাৎ করে হু-হু করে উজানের ঢল প্রবেশ করতে থাকে।

নীলফামারীর ডালিয়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, রোববার সকাল ৯টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। দুপুর ১২টার দিকে ভারিবর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গর্জে উঠে তিস্তার পানি এক লাফে ৫২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিকাল ৩টায় আরও ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এরপর সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার (৫২.২৮) উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তা অববাহিকায় লাল সংকেত জারি করা হয়েছে জানিয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, তিস্তা অববাহিকার লোকালয়, চরগ্রাম ও নিন্মাঞ্চলের মানুষকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। বর্তমানে তিস্তা অববাহিকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (উত্তরাঞ্চল) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মোহা. সরফরাজ বান্দাসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা অবস্থান করছেন। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইচ গেট খুলে রাখা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কালিগঞ্জ এলাকায় যৌথবাঁধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নজরদারি করছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: