বাঞ্ছারামপুরে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, গুলিতে ছাত্রদল নেতা নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নয়ন মিয়া (২২) নামে ছাত্রদলের এক নেতা পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের ইটপাটকেলে ছয়জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। শনিবার বিকালে উপজেলা সদরের মোল্লা বাড়ির সামনে এই ঘটনা ঘটে।

গুলিতে নিহত নয়ন মিয়া উপজেলার চরশিবপুর গ্রামের রহমত উল্লাহর ছেলে। তিনি উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি।

উপজেলা বিএনপি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির মহাসমাবেশকে সফল করতে শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার সময় বাঞ্ছারামপুরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপজেলা সদরে প্রচারপত্র বিলি করেন।

প্রচারপত্র বিতরণ শেষে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতা ভিপি সায়েদুজ্জামান কামালের নেতৃত্বে উপজেলা সদরের মোল্লা বাড়ি থেকে একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি উপজেলা সদরের বাজার, বাঞ্ছারামপুর থানা ও উপজেলা পরিষদ এলাকা ঘুরে পুনরায় মোল্লা বাড়ির মসজিদের সামনে গিয়ে শেষ হয় এবং নেতাকর্মীরা সেখানে জড়ো হন।

সেখানে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দলও জড়ো হয়। পুলিশ এ সময় সায়েদুজ্জামানকে আটক করতে যায়। একপর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি ও পরে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেলও ছোড়ে। এ সময় নয়ন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

আশপাশের লোকজন নয়নকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির দুই কর্মী রফিকুল ইসলাম (৪২) ও সাইদুর রহমানকে (২৫) গ্রেপ্তার করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের ছয় সদস্য আহত হয় বলে পুলিশ জানায়।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরে আলম (৪১), পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে (৩২), উপ-পরিদর্শক আফজাল হোসেন (৩০) ও বিকিরণ চাকমা (৩২), কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম (৩৩) ও বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস (২৬)।

এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, বিকালে বিএনপির একশ থেকে দেড়শ নেতাকর্মী আকস্মিক মিছিল নিয়ে থানার সামনে জড়ো হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। সেখানে থাকা টহল দলের দুই কনস্টেবলের কাছ থেকে তারা অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় কনস্টেবল একটি ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে।

ওসি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় আমিসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের (বিএনপির) এক কর্মীও আহত হয়েছে।