মিয়ানমার জান্তার ওপর আসছে ইইউ’র কঠোর নিষেধাজ্ঞা
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির অংশ হিসাবে সেনা অভ্যুত্থানে জড়িত দেশটির সেনাবাহিনীর ১১ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর দেওয়া হবে এই নিষেধাজ্ঞা।
সোমবারই এর অনুমোদন দিতে পারেন ইইউ পরাষ্ট্রমন্ত্রীরা। এমনটাই জানিয়েছেন ইউরোপীয় কূটনীতিকরা।
মিয়ানমারে সেনার জারি করা মার্শাল ল’ অমান্য করে রাস্তায় অব্যাহতভাবে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে অভ্যুত্থানবিরোধীরা। কিন্তু শান্তিপূর্ণ এসব বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে মারণাস্ত্র ব্যবহার করছে সেনা কর্তৃপক্ষ।
সর্বশেষ শুক্রবার দিনজুড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন প্রায় ১৩ জন। ফলে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)। গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার বিক্ষোভকারীকে।
মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি লক্ষ্য করে শুক্রবার জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস মিয়ানমারের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ ও সেনাবাহিনীর ভূমিকার নিন্দা জানান।
পরদিনই জাতিসংঘের বিশেষ কর্মকর্তা টম অ্যান্ড্রুজ বিশ্বনেতাদের প্রতি মিয়ানমারে সঙ্গে অস্ত্র ও অর্থসংক্রান্ত সহায়তা বন্ধ করার আহ্বান জানান।
জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র মহাসচিবের বরাত দিয়ে বলেন, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বিশ্বসম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ পালটা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তার এ আহ্বানের পর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
গত মাসে ২৭ দেশের এই সংগঠন মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে সম্মত হয়।
ইউরোপভিত্তিক এক কূটনীতিক জানান, ব্রাসেলসের বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিয়ানমারের যে ১১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সম্পদ জব্দ ও ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা।
প্রথম পর্যায়ে যাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক টার্গেট কেউ নেই। তবে আগামী সপ্তাহগুলোতে সে ধরনের কিছু কিছু পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হতে পারে।
ইইউর ওই কূটনীতিক আরও বলেন, এ পর্যায়ে মিয়ানমার সেনা সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না থাকলেও আগামী সপ্তাহগুলোতে সেগুলোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা আসার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
এ নিয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে তিনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা সদস্যরা কেবল প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতেই শক্তি প্রয়োগ করছে।
মিয়ানমার জান্তাদের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে এশিয়ার দেশগুলোও। মিয়ানমারকে সেনাবাহিনীকে অতিসত্বর এই সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ফিলিপাইনসহ আসিয়ান দেশগুলোর নেতারা।
প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Comments: