ইন্টারনেট
হোম / ধর্ম / বিস্তারিত
ADS

রমজান পেয়েও হতভাগা যারা

15 March 2024, 9:34:59

একদা মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা প্রদানের উদ্দেশ্যে মসজিদে নববিতে তাশরিফ নিয়ে গেলেন। মিম্বারের প্রথম সিঁড়িতে পা রেখে তিনি বললেন— ‘আমিন।’ দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখার পর পুনরায় তিনি বললেন— ‘আমিন।’ তৃতীয় সিঁড়িতে পা রেখে তিনি আবারও বললেন ‘আমিন।’

এর পর তিনি খুতবা প্রদান করলেন। খুতবা শেষে মিম্বার থেকে নেমে আসার পর সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন— ‘হে আল্লাহর রাসুল! আজ আপনি মিম্বারে আরোহণ কালে কোনো দোয়া করা ছাড়াই তিনবার ‘আমিন’ বলেছেন। এর কারণ কী?

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাবে বললেন— মূলত ব্যাপারটি হলো যখন আমি মিম্বারে আরোহণ করতে যাচ্ছিলাম, ঠিক সেই সময়-ই হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম আমার সামনে হাজির হয়ে তিনটি দোয়া করলেন। আর আমি এই দোয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই ‘আমিন’ বলেছি।’ প্রকৃত অর্থে এগুলো দোয়া ছিল না; বরং এগুলো ছিল বদদোয়া।

এখন আপনিই চিন্তা করুন, মসজিদে নববির মতো পবিত্র স্থান, আবার সম্ভবত জুমার দিন, তারপর খুতবা প্রদানের সময় যখন দোয়া কবুল হওয়ার সময়।

দোয়াকারী হলেন আল্লাহতাআলার সর্বশ্রেষ্ঠ ফেরেশতা হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম। আর ‘আমিন’ বলেছেন স্বয়ং হজরত রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে— কোনো দোয়া গৃহীত হওয়ার জন্য এর চেয়ে বেশি গ্যারান্টি আর কি হতে পারে? যাতে এতসব বিষয়ের সমন্বয় ঘটেছে, সে দোয়া নিশ্চয়ই বিফলে যাওয়ার নয়।

নামাজ, সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি

অতঃপর মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, হজরত জিবরাইল (আ.) প্রথম বদদোয়া এই করেছেন, ‘ধ্বংস হোক ওই ব্যক্তি যে বৃদ্ধ অবস্থায় মাতাপিতাকে পেল, অতঃপর সে তাদের খেদমত করে নিজের গুনাহ ক্ষমা করিয়ে জান্নাত অর্জন করতে পারল না।’ হজরত জিবরাঈলের এই বদদোয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছি— ‘আমিন।’

এখানে উল্লেখ্য, কোন কোন সময় সন্তানের সামান্য কাজে সন্তুষ্ট হয়ে মাতাপিতা অন্তর থেকে খুশি হয়ে সন্তানের জন্য এমন দোয়া দিয়ে থাকেন, যা তার মুক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং যে ব্যক্তি মাতাপিতা বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর তাদের সেবাযত্ন করে জান্নাতের ঠিকানা অর্জন করতে সক্ষম হলো না এবং নিজের গুনাহ মাফ করাতে পারল না এ জাতীয় ব্যক্তির ধ্বংস হওয়াটাই যুক্তিযুক্ত।

হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম দ্বিতীয় বদদোয়া এই করেছেন: ‘ধ্বংস হোক ওই ব্যক্তির যে পুরো রমজান মাস পাওয়া সত্ত্বেও নিজের গুনাহ ক্ষমা করাতে সক্ষম হলো না।’ হজরত জিবরাঈলের এই বদদোয়ার পরিপ্রেক্ষিতেও আমি বলেছি- ‘আমিন’।

কেননা, রমজান মাস রহমতের মাস, নাজাত ও মাগফিরাতের মাস। এমন একটি সুবর্ণ সুযোগ হাতে আসার পরও সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে না পারা খুবই দুঃখজনক বিষয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম তৃতীয় বদদোয়া এই করেছেন: ‘ধ্বংস হোক ওই ব্যক্তি, যার সামনে আমার নাম আলোচিত হলো, অথচ সে আমার ওপর দরুদ শরিফ পাঠ করল না।’

হজরত জিবরাঈলের এই তিনটি বদদোয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আমি বলেছি- ‘আমিন’।

দুরূদ শরীফ পাঠ না করার ব্যাপারে কতবড় খোদায়ী ধমকি। অথচ আমরা বিষয়টিকে একেবারেই হালকা জ্ঞানে উড়িয়ে দিচ্ছি। এটি হালকা কোনো বিষয় নয়। তাই যখন-ই মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম উল্লেখ হবে, বিলম্ব না করে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই দরুদ শরিফ পাঠ করে নেওয়া উচিত।

লেখক: ইসলামিক কলামিস্ট, মজলিশপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: