ইন্টারনেট
হোম / রাজনীতি / বিস্তারিত
ADS

তাপস-খোকন বিতর্কে বিব্রত আওয়ামী লীগ

29 June 2021, 7:37:04

আবারও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে নিয়ে সরব হলেন একই নগরের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করে তাপসের বিরুদ্ধে তুললেন অনিয়মের অভিযোগ। সম্প্রতি আদালতের আদেশে আটটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ হয়েছে সাঈদ খোকন ও তার পরিবারের। এর পেছনে তাপসের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এই সদস্য।

তাপসকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করতেই পারে। কিন্তু কারও প্ররোচণায় কোনো দলাদলিতে নিজেকে দুর্নীতি দমন কমিশন জড়াবে একজন নাগরিক হিসেবে আমি এটা প্রত্যাশা করি না।’

এর আগে চলতি বছরের শুরুতে ঢাকার ফুলবাড়িয়ায় সরকারি জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে তাপসের বিরুদ্ধে সরব হন সাঈদ খোকন। তিনি বর্তমান মেয়রের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ উত্থাপন করেন। এমনকি শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়রের পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন সাঈদ খোকন। পরে তার ওই বক্তব্যকে মানহানিকর উল্লেখ করে তাপস বলেন, ‘তিনি (সাঈদ খোকন) মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন। সুতরাং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পরে সারোয়ার আলম এবং আনিসুর রহমান নামে দুইজন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি দুইটি মানহানির মামলা করেন সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার পাঁচ মাসের মাথায় আবারও তাপসের বিরুদ্ধে সরব হয়ে দ্বন্দ্ব উস্কে দিলেন সাঈদ খোকন। আক্রমণাত্মক বক্তব্যে জর্জরিত করলেন নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচিত মেয়রকে।

বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাইছেন না আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। গণমাধ্যমের সামনে মেয়রকে নিয়ে সাঈদ খোকনের এমন ঢালাও অভিযোগে বিব্রত বোধ করছেন তারা। বলছেন, সাঈদ খোকন দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির একজন সদস্য। অপর দিকে শেখ ফজলে নূর তাপস আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত মেয়র। দলের কেন্দ্রীয় নেতা হয়ে নৌকা প্রতীকের মেয়রের বিরুদ্ধে তিনি যে ব্যক্তিগত আক্রমণ করছেন তা দলীয় শিষ্টাচার পরিপন্থী। এটি দলের জন্য বিব্রতকর। প্রকাশ্যে এ ধরনের আক্রমণাত্মক বক্তব্য-বিবৃতি দলীয় নেতাকর্মীসহ জনগণের মধ্যেও ভুল বার্তা দেবে। এটি দলীয় শৃঙ্খলাও বিনষ্ট করে।

মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ করে সাঈদ খোকন বলেন, ‘ব্যর্থতা চারিদিক। আমি লাশ দাফন ফ্রি করে দিয়েছিলাম। আমার ঢাকাবাসী দাফনের পয়সাটুকু দিতে পারে না। গরিব-দুঃখী মানুষ। হঠাৎ করে মরে গেলে একটা দাফন-কাফন করতে গেলে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা লাগে। আমি ফ্রি করে দিয়েছিলাম। আজ মিরপুরে গিয়ে দেখেন একটা লাশ নামানোর আগে টিকিট লাগে। ব্যর্থ বলব না তাহলে কী বলব?’

খোকন উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, ‘আপনার ব্যর্থতার দায় ঢাকার জন্য আর মানুষ পান নাই? বারবার শুধু আমার উপরই? কেন? কেন?…কী বলব? নগর পরিচালনা করতে পারে না। আরও বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখো। আরে বড় হওয়ার পথে সাঈদ খোকন বাধা নাকি? তুমি বড় হও তাতে আমার কী? আমাকে মেরে বড় হইতে হইব নাকি? যে দায়িত্ব পাইছো ওইটা মিয়া পালন করো, তারপর বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখো।’

তবে মঙ্গলবার সাঈদ খোকনের সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে মেয়র ফজলে নূর তাপস কিছু বলতে ‘নিরুৎসুক’ বলে জানা গেছে । মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও মুখপাত্র আবু নাছের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিষয়টি মহামান্য আদালত ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংশ্লিষ্ট। বিচারাধীন কোনো বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস কোনো ধরনের বক্তব্য বা প্রতিউত্তর দিতে নিরুৎসুক।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য বলেন, ‘সাঈদ খোকনের নিয়ে অনেক সমালোচনা দলকে শুনতে হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উঠেছিল এই জন্য পুনরায় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি৷ এর আগেও তিনি অনেক কথা বলেছিলেন৷ দলের নেতা হয়ে, দলের মেয়রের বিরুদ্ধে কথা বললে বিরোধীদের সুযোগ করে দেওয়া হয়। এতে আমরাও বিব্রত হই।’

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখন আমি কোনো মন্তব্য করব না।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: