উদ্বেগ থাকলেও এখনই লকডাউনের কথা ভাবছি না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন হানা দেওয়ার পর দেশে অব্যাহতভাবে সংক্রমণ বাড়ছে। এই অবস্থায় সরকার উদ্বিগ্ন। তবে এখনই লকডাউনের কথা ভাবছে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সোমবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এই কথা বলেন।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখনই লকডাউনের বিষয়ে ভাবছি না। লকডাউনের পরিস্থিতি এখনো হয়নি। আমরা সুপারিশও করিনি। লকডাউনের পর্যায় পর্যন্ত যাতে না যেতে হয়, সেজন্যই আজকের বৈঠক। যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার, সেগুলো আমরা নিচ্ছি। এরপর দেখা যাক কী দাঁড়ায়।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওমিক্রনে করণীয় নিয়ে বৈঠক হলেও আলোচনায় আসে করোনাভাইরাস নতুন করে বৃদ্ধির বিষয়টি। আমরা করোনাভাইরাস মোকাবেলা করছি। তাই অনেক কিছুই জানতে পারছি। কীভাবে কী করতে হবে। ওমিক্রনের বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোও পরে জানানো হবে।’
বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, ‘ঢিলেঢালা কোয়ারেন্টাইন নয়, পুলিশ পাহারায় কঠোর কোয়ারেন্টাইনের ওপর জোর দেওয়ার ক্ষেত্রেও আলোচনা হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সবাইকে ভ্যাকসিন নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা রেস্টুরেন্টে খেতে পারবেন, অফিসে যেতে পারবেন, স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারবেন। তবে এই কাজগুলো তারা করতে পারবেন মাস্ক পরা অবস্থায়। কিন্তু ভ্যাকসিন না নেওয়া থাকলে কেউ রেস্টেুরেন্টে খেতে পারবেন না।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘কেউ রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেতে চাইলে তাকে ভ্যাকসিন কার্ড দেখিয়ে বলতে হবে যে, তিনি ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তাহলেই তাকে সেই রেস্টুরেন্ট এন্টারটেইন করবে। যদি কোনো রেস্টুরেন্ট ভ্যাকসিন না নেওয়া কাউকে এন্টারটেইন করে, তাহলে সেই রেস্টুরেন্টকেও জরিমানা করা হবে।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হবে কি না এ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টিকা নেওয়ার ওপর জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। লক্ষ্য করা গেছে, শিক্ষার্থীরা টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে তেমন আগ্রহী নয়।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতের বিষয়ে বৈঠকে কথা হয়েছে। মাস্ক না পরলে জরিমানার বিষয়টিও উঠেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত বিষয়টি নিশ্চিত করবে।’ এছাড়া গণপরিবহনে যাত্রী চলাচলের ক্ষেত্রে নির্ধারিত আসনের চেয়ে কম যাত্রী পরিবহনের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় যত অনুষ্ঠান আছে, সেগুলোতে মানুষের সংখ্যা যাতে কম হয়, সেই বিষয়েও তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
কোন কোন ক্ষেত্রে কেমন কড়াকড়ি আসছে, তা ১৫ দিনের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ থেকে প্রজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া , তথ্য সচিব মো. মকবুল হোসেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমসহ অন্য কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
এছাড়া মাঠ পর্যায় থেকে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), বিভাগীয় কমিশনার, স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক, সিভিল সার্জনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Comments: