![ADS](https://www.protichhobi.com/wp-content/uploads/2021/02/Dhaka-Bazar-24-online-shop-in-Bangladesh.gif)
বিচিকলার যত গুণ
![](https://www.protichhobi.com/wp-content/uploads/2023/05/102263870_106882837722607_6219913789152690176_n.jpg)
বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের কলার চাষ হয়। এর মধ্যে অমৃতসাগর, সবরি, চম্পা, কবরী, মেহেরসাগর, বারি কলা-১, বারি কলা-৩, বারি কলা-৪ জাতগুলো বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। এছাড়া বিভিন্ন জাতের আনাজি বা কাঁচাকলা ও বিচিকলা সীমিত আকারে উৎপাদিত হয়। বিভিন্ন কলার মধ্যে অন্যতম স্বাদের ফল বিচিকলা। এটি কাঁচা ও পাকা দুভাবে খাওয়া যায়। ছোট মাছ দিয়ে কাঁচা বিচিকলা রান্না বেশ স্বাদের।
বিচিকলা (Musa acuminata), Musaceae পরিবারভুক্ত একটি ফল। এর উৎপত্তি দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় (নিউগিনি, আগ ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন)। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৮০০০ বছর পূর্ব থেকে এটি মানুষ চাষ করে আসছে। বসতবাড়িতে চাষ করা হয় এমন গাছপালার মধ্যে এটি প্রথম দিকের উদাহরণ। কলা বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ফল, যা সারা বছর পাওয়া যায়। বিচিকলা অত্যন্ত পুষ্টিগুণসম্পন্ন, সুস্বাদু ফল।
সাধারণত কলা বীজবিহীন ফল হলেও বিচিকলাতে প্রচুর বীজ থাকে। বিচি কলার গাছ বেশ উঁচু, লম্বা ও অত্যন্ত কষ্টসহিষ্ণু হয়ে থাকে। ফলে ঝড়, তুফান কিংবা জলাবদ্ধতা তেমন ক্ষতি করতে পারে না। বিভিন্ন ধরনের কলা রোপণের পর থেকে ১০-১২ মাসে ফল আহরণ করা গেলেও, বিচি কলা পরিপক্ব হতে ১৮ মাস সময় লাগে। বিশেষ কোনও যত্ন ছাড়াই বিচিকলা ভালোভাবে জন্মানো যায়। ফলের ওজন ১৫০-২০০ গ্রাম। পাকা ফল হলুদ রঙের এবং মিষ্টি, চামড়া তুলনামূলকভাবে পুরু, সুমিষ্ট এবং তাপমাত্রায় অধিক সময় সংরক্ষণ করা যায়। দেশের গ্রামাঞ্চলে সর্বসাধারণের কাছে বিচিকলা অত্যন্ত জনপ্রিয়।
একটি বিচিকলায় ১৫ থেকে ৬২টি বীজ থাকতে পারে। একটি কাঁদিতে ৬১ থেকে ১৬২টি ফল থাকতে পারে। প্রতিটি বীজ তার ৪ গুণ আকারের শর্করাযুক্ত পাল্প তৈরি করে।
কলার পুষ্টিমান : বিচিকলা নিয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক রম্যকথা প্রচলিত থাকলেও এটি পুষ্টিতে অনন্য। কোষ্ঠকাঠিন্যের ভয়ে অনেকে এই কলা খেতে চান না। তবে পাকা বিচি কলায় প্রচুর পরিমাণে শর্করা বিদ্যমান, যা শক্তির অন্যতম উৎস। বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন এ, বি৬, সি এবং ডি এর একটি অসাধারণ উৎস। এটি পটাশিয়ামের একটি অনন্য উৎস, যেখানে একজন মানুষের দৈনিক প্রয়োজনের ২৩% পটাশিয়াম একটি কলা থেকে পাওয়া যায়। পটাশিয়াম পেশি নিয়ন্ত্রণ করে। কলার পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমায়। শারীরিক ও মানসিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় বি৬ এর ৪১% ই কলায় থাকে। কলায় প্রচুর লৌহ থাকে।
ঔষধিগুণ: বিচি কলার অনেক ঔষধি গুণ আছে। কলায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, নাইট্রোজেন এবং ফসফরাস থাকে, যা শরীরে স্বাস্থ্যকর টিস্যু গঠনে কাজ করে। কলা গাছের সব অংশের ঔষধি ব্যবহার রয়েছে। ফুল ব্রংকাইটিস, আমাশয় এবং আলসার, রান্না করা ফুল ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। গাছের কষযুক্ত রস হিস্টেরিয়া, কুষ্ঠ, জ্বর, রক্তক্ষরণ বন্ধ, স্থায়ী আমাশয়, ডায়রিয়া রোধে সহযোগিতা করে। গাছের শিকড় পরিপাকজনিত সমস্যা এবং আমাশয়ে ব্যবহৃত হয়। কলার বীজের মিউসিলেজ ডায়রিয়া হলে ব্যবহৃত হয়। সম্পূর্ণ পাকা কলার খোসা ও পাল্পে ছত্রাক বিরোধী ও অ্যান্টিবায়োটিক গুণাবলি পাওয়া যায়। সবুজ কলার খোসা ও পাল্পের দ্বারা তৈরি ছত্রাকনাশক টমেটোর ছত্রাকজনিত রোগ দমনে ব্যবহৃত হয়। কলা অন্ত্রীয় সমস্যা বিশেষত আলসার নিরাময়ের জন্য কাজ করে, গ্যাস্ট্রিকজনিত অম্লত্ব প্রশমন করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে সাহায্য করে। কলার ভুয়া কাণ্ডের ভেতরের কোনও অংশ থেকে প্রস্তুত রস কিডনি ও মূত্রাশয়ের পাথর দূরীকরণে উপকারী। কলা মানুষের কৃমিজনিত সমস্যা দূরীকরণে ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, শুধুমাত্র ২টি কলা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে ৯০ মিনিটের কাজ করার শক্তি পাওয়া যায়। কলা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
বিচিকলার কিছু স্থানীয় নাম আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ কলা এঁটে কলা, বাইশ্যাকলা, আইট্টা কলা, বিচি কলা নামে পরিচিত।
তথ্য সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস)।
![ADS](https://www.protichhobi.com/wp-content/uploads/2021/03/protichhobi-job.gif)
![ADS](https://www.protichhobi.com/wp-content/uploads/2021/03/aain-upodestha-kendro.gif)
প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Comments: