ইন্টারনেট
হোম / আইন-আদালত / বিস্তারিত
ADS

করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা

12 January 2022, 9:19:46

নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বেশ কয়েকজন বিচারক আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে হাইকোর্টের চারজন ও আপিল বিভাগের একজন বিচারকের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে বেশ কয়েকজন এরই মধ্যে সুস্থ হয়েছেন বলেও জানা গেছে।

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে দায়িত্ব পালন করে আসা চার বিচারককে গত ৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই দিনই নিয়োগ পাওয়া চার বিচারেকর মধ্যে বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ শপথ নিলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এফ আর এম নাজমুল আহসান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় শপথ নিতে পারবেন না বলে প্রধান বিচারপতি নিজেই জানিয়েছিলেন।

এদিকে গত ১৭ ডিসেম্বর আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম। সেখানে গিয়ে সপরিবারে তিনি কভিড আক্রান্ত হন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তাপস কান্তি বল।

কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন,’চেয়ারম্যান স্যার আমেরিকায় গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে বাংলাদেশ সময় আজ সকালে তাঁর কভিড টেস্টে নেগেটিভ এসেছে। স্যার সুস্থ আছেন। সেখানে তিনি তাঁর ছেলের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’

ট্রাইব্যুনালের আরেক বিচারক আবু আহমেদ জমাদার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, গত সোমবার কভিড টেস্টের ফল নেগেটিভ এলে তিনি বাসায় ফেরেন। হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি জে বি এম হাসানও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার পরীক্ষায় কভিড নেগেটিভ হলে বুধবার থেকে তিনি বিচারকাজ শুরু করেন।

এদিকে হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার বিচারকাজ চলার মধ্যে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসাপাতালে গেলে তাঁর কভিড ধরা পড়ে।

তবে সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত দুই-তিন সপ্তাহে কমপক্ষে ১১ জন বিচারক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে দেশে এক দিনে শনাক্ত কভিড রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত মঙ্গলবার দৈনিক শনাক্তের হার পৌঁছে ৯ শতাংশের কাছাকাছি। বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৫৪ লাখ ৮৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ৩১ কোটি ছয় লাখের বেশি রোগী।

২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের সব আদালতেও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ওই সময় দেশের বিচারব্যবস্থা কার্যত বন্ধ ছিল। পরে সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্য বা যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় দিতে পক্ষদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে আদালতকে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা দিয়ে আইন হয়। ১১ মে দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথম ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকলে প্রথমে কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক উপস্থিতিতে নিম্ন আদালতের কার্যক্রম চালু করা হয়। পরে হাইকোর্টের কয়েকটি বেঞ্চেও শারীরিক উপস্থিতিতে বিচারিক কার্যক্রম চালু করা হয়। পাশাপাশি ভার্চুয়াল আদালতও চালু থাকে। তবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত, অর্থাৎ আপিল বিভাগ এবং চেম্বার আদালত ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেই চলে আসছিল। দেড় বছরের বেশি সময় এ প্রক্রিয়ায় বিচারকাজ চলার পর গত ১ ডিসেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে শারীরিক উপস্থিতিতে বিচারকাজ শুরু হয়।

তবে কয়েক দিন ধরে নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ভার্চুয়ালি চালানোর সিদ্ধান্ত এসেছে। আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহে চার দিন (রবি, সোম, মঙ্গল ও বুধবার) ভার্চুয়লি বিচারকাজ পরিচালনা করবেন চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। বুধবার এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: