ইন্টারনেট
হোম / আইন-আদালত / বিস্তারিত
ADS

কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট, কাল আদেশ

3 November 2021, 10:39:12

রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলাম (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

রংপুরের পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত ঘটনা এবং এ ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা আদালতকে জানাতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্তকে বলা হয়েছে।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) এ বিষয়ে আদেশ দেবেন হাইকোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন। ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ঘটনাটি আদালতের নজরে আনলে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত সোমবার (১ নভেম্বর) রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হারাগাছের নতুন বাজার বছি বানিয়ার তেপতি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাজুল ইসলাম উপজেলার হারাগাছ নয়াটারী দালালহাট গ্রামের বাসিন্দা।

জানা যায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নয়া বাজার বছি বানিয়ার তেপতি থেকে তাজুল ইসলামকে মাদকসহ আটক করে পুলিশ। এ সময় তিনি পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে পালানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ তাঁকে মারধর করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তাজুল। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানা ঘেরাও করে। বিক্ষুব্ধ জনতা ইটপাকটেল ছুড়ে মারার পাশাপাশি পুলিশের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিন মামলা চার সদস্যের তদন্ত কমিটি
রংপুর অফিস ও পীরগাছা প্রতিনিধি জানান, রংপুরের হারাগাছে গত সোমবার আটকের পর পুলিশের নির্যাতনে তাজুল ইসলাম (৫০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেলে থানা ঘেরাও করে ভাঙচুর ও বিক্ষোভের ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। একটি মামলায় থানা ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধাসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অভিযোগ আনা হয়। আরেকটিতে অপমৃত্যু এবং তৃতীয়টিতে মাদক উদ্ধারের অভিযোগ আনা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার হারাগাছ থানায় মামলা তিনটি করা হয়। নিহতের ছোট ভাই মোর্তুজা রহমান বাদী হয়ে অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলাটি করেন। পুলিশ বাদী হয়ে করে অন্য দুটি মামলা।

এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মেহেদুল করিমকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপপুলিশ কমিশনার আবু বকর সিদ্দীক ও কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুল ইসলাম।

গত সোমবার সন্ধ্যায় রংপুরের হারাগাছ থানার পুলিশ নতুনবাজার বছিবানিয়ার তেপতিতে অভিযান চালায়। এ সময় হারাগাছের দালালহাট নয়াটারী এলাকার মৃত শওকত আলীর ছেলে তাজুল ইসলামকে মাদক সেবনের অভিযোগে আটক করে পুলিশ। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশের নির্যাতনে তাজুলের মৃত্যুর অভিযোগ তোলে স্থানীয় লোকজন।

খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে হারাগাছ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ থানা ভবনে ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় ভবনের সামনে রাখা পুলিশ ভ্যান ও মোটরসাইকেল। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

সোমবার রাতে তাজুলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাঁর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনার পর এখনো কাউকে আটক করা হয়নি।

হারাগাছ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম ফিরোজ বলেন, কয়েক মাস আগেও তাজুল ইসলামকে মাদকসহ আটক করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে কাউনিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।

হারাগাছ থানার ওসি শওকত আলী সরকার জানান, আটক করে তাজুলকে হাতকড়া পরালে ভয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পুলিশ হাতকড়া খুলে দেয়। পুলিশ তাজুলকে স্থানীয়দের জিম্মায় দিয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে আসে। এর কিছুক্ষণ পরই খবর আসে তাজুল মারা গেছেন। এ ঘটনায় ভুল তথ্য পেয়ে থানা ঘেরাও করে ভাঙচুর করেছে এলাকাবাসী।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, পুলিশের অভিযানে আটকের পর ভয়ে হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে তাজুলের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: