জেনে নিন বুকে গ্যাসের ব্যথার ধরন এবং কারন

সারাক্ষণ বসে থাকলে অনেকেরই শরীরের ব্যথা বেদনা বেড়ে যায় । কারোর হাঁটুর ব্যথা তো কারোর কোমরে কিংবা হাড়ের জয়েন্ট এর সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন । তবে গ্যাসের সমস্যা সম্পূর্ণ আলাদা । যদিও গ্যাসের ব্যথা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পেটেই হয় তবে এটি বুকেও হতে পারে । যা খুবি অস্বস্তিকর ; বুকে গ্যাসের ব্যথা কিছু সময় পর যদি না নিরাময় হয় তখন এটির দিকে মনোযোগ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি অন্যান্য গুরুতর পরিস্থিতি নির্দেশ করতে পারে । চলুন আজ বুকে গ্যাস ব্যথার ধরন এবং কারন সম্পর্কে জেনে নেয়া জাক :-

বুকের মধ্যে গ্যাসের ব্যথা বা বুকের কোন অঞ্চলে ১টি সাধারণ টান লাগার মতো অনুভব হতে পারে । অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে – ঢেকুর তোলা ; বদহজম ; অতিরিক্ত গ্যাস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় বের হওয়া ; ব্যথা অনুভব হওয়া ; ক্ষুধামন্দ্যা ; পেট ফোলা ; ব্যথা যা পেটের বিভিন্ন অংশে স্থানান্তর করে থাকে ।

অনেকের পক্ষে এটি বলা মুশকিল যে বুকে গ্যাসের ব্যথা অনুভব করছে নাকি এসিড রিফ্লাক্সের মতো অন্যান্য পরিস্থিতি অথবা হার্ট অ্যাটাকের মতো আরো মারাত্মক কিছু ভোগ করছে কিনা । যদি বুকে ব্যথার সাথে নীচের লক্ষণ গুলো অনুভব করা যায় ; তবে এটির হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত হতে পারে বলে জরুরি চিকিৎসা নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে –

১// পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক আলাদাভাবে প্রকাশ পায় । মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের তুলনায় শ্বাসকষ্ট ; বমি ভাব ; পিঠ বা চোয়ালের ব্যথা বেশি হয় তাদের বাহুতে ব্যথা হওয়ার হালকা সম্ভাবনাও থাকে ।

২ // নিঃশ্বাসের দুর্বলতা ; বুকের অস্বস্তি যা চাপ বা ব্যথার মতো অনুভব করতে পারে ; যা ধীরে ধীরে স্থানান্তর হতে পারে বাহু ; পিঠ ; ঘাড় ; পেট কিংবা চোয়াল সহ দেহের অন্যান্য অঞ্চলে ।

৩// অস্বস্তি ১ টি ঠান্ডা ঘাম মধ্যে বিরতি ; বমি বমি ভাব ; হালকা মাথা ঘোরা ইত্যাদিও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলির মধ্যে বিদ্যমান ।

যেহেতু গ্যাসের ব্যথা প্রায়শই নীচের বুকে অনুভূত হয় এবং কিছু কিছু খাবার বা খাবারের অতিরিক্তাংশ এর দুর্বল প্রতিক্রিয়া হিসাবেও গ্যস এর ব্যথা হতে পারে । উদাহরণস্বরূপ – কার্বনেটেড পানীয় এবং চিনিযুক্ত অ্যালকোহল ; কারো কারো অতিরিক্ত পরিমাণে গ্যাসের কারণ হতে পারে । অন্যদের মধ্যে ; যারা সংবেদনশীল বা অ্যালার্জি হতে পারে এমন খাবারগুলি গ্যাস ব্যথার কারণ হতে পারে ।

কখনও কখনও খাবারের অসহিষ্ণুতা বুকে গ্যাসের ব্যথার জন্য দায়ী করা হয় । কেউ যদি ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু হয়ে থাকে তবে দুগ্ধ খাওয়া অতিরিক্ত গ্যাস তৈরির কারণ হতে পারে । যার ফলে বুকের ব্যথা হয় ; একইভাবে যদি আঠালো খাবারের প্রতি সংবেদনশীল হয় বা সিলিয়াক রোগ থেকে থাকে তবে ১টি গমের পরিমাণ মতো ১ টি গন্ধযুক্ত খাবারও দূষিত খাবার খাওয়ার অনুরূপ লক্ষণ দেখা দিতে পারে । আঠালো দূষণ অন্ত্রের মধ্যেও প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে যা পুরোপুরি নিরাময়ে ৬ মাস পর্যন্ত সময় নেয় ।

সাধারণ মানুষের যদি আগে কখনও এটির অভিজ্ঞতা না পায় তবে জেনে রাখা ভালো যে ; খাদ্য বিষক্রিয়া থেকে বুকে হঠাৎ গ্যাসের ব্যথা হতে পারে । যা ব্যাকটিরিয়া ; ভাইরাস বা পরজীবী দ্বারা দূষিত খাবার খাওয়ার কারণে ঘটে থাকে । অন্যান্য লক্ষণগুলি যা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত যে কোনও জায়গায় স্থায়ী হতে পারে । এর মধ্যে প্রায়শই অন্তর্ভুক্ত থাকে – বমি বমি ভাব ; বমি ; জ্বর ; পেটে ব্যথা ; জলযুক্ত বা রক্তাক্ত ডায়রিয়া ।