বাদাম খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকে ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস এমনই একটি রোগ, যা কখনো সারে না। কিন্তু এই রোগকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। রোগের সুস্থতা অনেকাংশে নির্ভর করে আপনি কী খাচ্ছেন তার ওপর। ডায়াবেটিসের মতো অসুখে এই নির্ভরতা অনেকটাই বেশি। সুগার রোগীরা কার্বহাইড্রেট যত কম খাবেন তত ভালো বলে পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
যখন কারও ডায়াবেটিস হয়, তখন ওই মানুষের শরীরে ইনসুলিন হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়। ফলে দেহের কোষে গ্লুকোজ পৌঁছাতে পারে না। এতে করে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এতে করে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো প্রকাশিত হতে থাকে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে, আপনার প্রথমে খাওয়া পরিবর্তন করা উচিত। ডায়েটে এমন কিছু খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যা রক্তে শর্করার বর্ধিত স্তরকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা। ডায়াবেটিস রোগীরা অনেক সময় কী খাবেন আর কী খাবেন না, এসব ভেবে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তবে জানেন কি, ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আদর্শ এক খাবার হলো বাদাম।
ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়েটে বিশেষত শুকনো ফল অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডায়াবেটিস-এর সঙ্গে সম্পর্কিত ঝুঁকির কারণগুলো রোধ করতে বাদাম উপকারী হতে পারে।
বাদাম পুষ্টির চমৎকার উৎস। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম, আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড। সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিন একমুঠো বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আপনি ডায়াবেটিস-এর রোগী হলে সব ধরনের বাদাম খাওয়া আপনার জন্য ভালো নয়, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। তবে কিছু বাদাম রয়েছে, যেগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। বাদাম সচেতনভাবে খেলে সুগারের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বাদামে রয়েছে পুষ্টিকর উপাদান ক্যালোরি ১৬১, ফাইবার ৩.৫ গ্রাম, প্রোটিন ৬ গ্রাম, কার্বস ২.৫ গ্রাম, ফ্যাট ১৪ গ্রাম, ৩৭% ভিটামিন ই, ৩২% ম্যাগনেসিয়াম।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা রোজ বাদাম খেতেন তাদের ডায়াবেটিস এবং খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল কোলেস্টেরল) উভয়ই নিয়ন্ত্রণে ছিল। অন্যদিকে ভালো কোলেস্টেরল অর্থাৎ এইচডিএল স্তর ভালো বলে দেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও, তাদের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ছিল। অন্যদিকে যারা বাদাম খাননি তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। তাই ডায়াবিটিসের ঝুঁকি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে বাদামই একমাত্র উৎস।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী তিন বাদামের কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা
চিনাবাদাম
চিনাবাদাম আঁশ ও প্রোটিনের চমৎকার উৎস। টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি খুব উপকারী। এটি রক্তের সুগারকে নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করে। প্রতিদিন ২৮ থেকে ৩০টি কাঁচা বাদাম খেতে পারেন।
কাঠবাদাম
গবেষণায় বলা হয়, কাঠবাদাম ডায়াবেটিস রোগীদের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিকঠাক রাখতে কাজ করে। এ ছাড়া এটি দৈনিক ম্যাগনেসিয়ামের চাহিদাও পূরণ করে। তবে কাঠবাদাম খাওয়ার ক্ষেত্রে লবণহীন ও ভাজা হয়নি এমন বাদাম খাবেন।
ওয়ালনাট
ওয়ালনাটের মধ্যে রয়েছে উচ্চ পরিমাণ ক্যালরি। তবে এটি তেমন ওজন বাড়ায় না। ওবেসিটি অ্যান্ড মেটাবোলিজম জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়, ওয়ালনাট খেলে পেট ভরা ভরা লাগে। এতে অন্য খাবার খাওয়ার আগ্রহ কমে। আরেকটি গবেষণায় বলা হয়, এটি ইনসুলিনের মাত্রা ঠিকঠাক রাখতে কাজ করে।
প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Comments: