ইন্টারনেট
হোম / শিক্ষা / বিস্তারিত
ADS

ছুটির প্রভাব কাটেনি রাকসু নির্বাচনে

9 October 2025, 1:57:40

দীর্ঘ ছুটির পর শিক্ষার্থীরা ফিরলেও রাকসু নির্বাচনে প্রাণচাঞ্চল্য ফেরেনি ক্যাম্পাসে। নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে প্রার্থীরা। তবে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে সমাধান না হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে রয়ে গেছে শঙ্কা। সেখান থেকে ভোটারদের মধ্যে অনাগ্রহ তৈরির ফলে নির্বাচনি আমেজ ফেরেনি ক্যাম্পাসে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে তারা সর্বাত্মক প্রস্তুত। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া নির্বাচনের আগে কোনো কর্মসূচি করবে না জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন আশ্বাস দিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ছুটির কারণে অনেক শিক্ষার্থী এখনো ক্যাম্পাসে ফেরেননি। আবার শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মসূচির বিষয় সুরাহা না হওয়ায় অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে ক্যাম্পাসে। ক্যাম্পাসে যারা ফিরেছেন, তাদেরও নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ তেমন নেই। অনেকে জানেন না কোন প্যানেল থেকে কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ইতিহাস বিভাগের রাতুল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, রাকসু নির্বাচন নিয়ে আগে যেমন আলোচনা হতো, এবার তা নেই। প্রচারণা চলছে, কিন্তু সেই উৎসবের আবহ পাওয়া যাচ্ছে না।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদ হোসেন বলেন, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মসূচির বিষয়টা এখনো সুরাহা হয়নি। তারা যে আলটিমেটাম দিয়েছিল তা প্রায় শেষ। তারা আবারও কর্মসূচি দিবে বলে ধারণা করছে অনেকে। এর প্রভাব পড়েছে নির্বাচনের ওপরও। অনেকেই ভাবছে, নির্বাচন আদৌ হবে কি না এমন অনিশ্চয়তাও আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে।

এদিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকটি প্যানেল দাবি করছে, ছুটির কারণে প্রচারণা বিলম্বিত হলেও দুই-একদিনের মধ্যেই রাকসুর আমেজ ফিরবে ক্যাম্পাসে। ছাত্রদল ও শিবির সমর্থিত প্যানেলের পাশাপাশি বামপন্থি সংগঠনগুলোর জোটও পুরোদমে প্রচারণায় নেমেছেন, থেমে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও।

সরেজমিন দেখা যায়, বুধবার দিনের শুরু থেকেই ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাম জোটভুক্ত সংগঠন সমর্থিত প্যানেলসহ অধিকাংশ প্রার্থী নবোদ্যমে প্রচারণার কাজ শুরু করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের সামনে, টুকিটাকি চত্বর, পরিবহণ মার্কেট, আমতলা, আবাসিক হল সবখানেই ভোটারদের কাছে তারা নিজেদের ইশতেহার ও ব্যালট নাম্বারসহ লিফলেট পৌঁছে দিচ্ছেন। প্রচারে তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন তাদের ব্যালট নম্বরটি ভোটারদের মনে করিয়ে দেওয়ার বিষয়টি। তারা চেয়ে নিচ্ছেন দোয়া এবং তাদের মূল্যবান ভোট।

ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছি, প্রচারণা থেমে নেই আমাদের। তবে শিক্ষকদের কর্মসূচির বিষয়টি সুরাহা হওয়া দরকার। এটা শিক্ষার্থীদের মনে প্রভাব ফেলছে। আমরা আশা রাখি দুই-এক দিনের মধ্যেই অবস্থা বদলে যাবে, উৎসবমুখর পরিবেশ ফিরবে।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রার্থীদের কার্যক্রম গুরুত্বসহকারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করাই এখন মূল লক্ষ্য।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ‘শিক্ষক লাঞ্ছনার’ অভিযোগ তুলে জড়িতদের শাস্তি ও পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে শাটডাউন কর্মসূচি দেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থী শূন্য হয়ে পড়ে ক্যাম্পাস। পরে নির্বাচন কমিশন এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর নির্ধারণ করেন। দুই দিন পর (২৪ সেপ্টেম্বর) ৭ কর্মদিবসের আলটিমেটাম দিয়ে পূর্বঘোষিত শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বুধবার দিয়ে সেই আলটিমেটামের ৭ কর্মদিবস পেরিয়েছে। এখন এ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মসূচি আবারও শুরু হবে কিনা এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দানা বেঁধেছে সংশয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ ও সাক্ষ্য যাচাইয়ের পর প্রতিবেদন সিন্ডিকেটে পেশ করা হবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তদন্ত শেষ হতে কতদিন লাগবে এমন তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।

এদিকে বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) কর্মসূচি স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলোচনা করবেন বলে জানায়।

পোষ্য কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মোক্তার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন বলেন, গত ৬ অক্টোবর উপাচার্য স্যারের সঙ্গে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে তারা আশ্বাস দিয়েছেন, নির্বাচনের আগে কোনো কর্মসূচি তারা করবেন না।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: