মিল মালিকরা বলছেন ‘তেল দিচ্ছি’, পাইকাররা বলছেন ‘পাচ্ছি না’
দেশে ভোজ্যতেলের দাম ও সরবরাহ নিয়ে সঙ্কট চলার মধ্যে পাইকারি ব্যবসায়ী ও মিল মালিকদের নিয়ে সভা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সেই মতবিনিময় সভায় উঠে এসেছে পরস্পরবিরোধী নানা বক্তব্য।
সভায় মিল মালিকরা দাবি করেন, তারা সরবরাহ ঠিক রেখেছেন। অন্যদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ তারা চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না। তেল আনতে যাওয়া ট্রাকগুলো আটকে রাখা হচ্ছে।
মিলগেট থেকে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নিশ্চিত থাকলে লিটারে সর্বোচ্চ এক টাকা লাভে ভোজ্যতেল বিক্রির ঘোষণাও এসেছে পাইকারি ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে মিল মালিকরা কত টাকায় তেল দেবেন, সেটির ঘোষণা দেয়ার দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে বুধবার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেলের মিল মালিক ও বাজার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১ মার্চ থেকে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব সরকার গ্রহণ না করার পর থেকে বাজারে তৈরি হয়েছে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, মিল থেকে তারা চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পাচ্ছেন না।
তেল সংকটের কারণে বোতলজাত তেল কিনতে গিয়ে সঙ্গে অন্য পণ্য কেনার শর্ত মানতে হচ্ছে ক্রেতাদের। আর খোলা তেল অনেক ক্ষেত্রেই না পাওয়ার অভিযোগ করছেন ভোক্তারা।
মতবিনিময়ে একজন পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘মিলাররা কত টাকা দরে তেল বিক্রি করবেন, সে বিষয়ে এই মতবিনিময় সভায় বলে যেতে হবে।’
মতবিনিময়ের শুরু থেকেই মিল প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা একে অন্যের ওপর দোষ চাপাতে থাকেন।
পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা বলেন, ‘এই রমজান পর্যন্ত যদি আমাদের মাধ্যমে এ চেইনটা দেন, তাহলে আমরা বাজার স্থির করতে পারব। এক টাকার বেশি লিটারে লাভ করতে চাই না। আপনারা বলেন, কত টাকা করে বিক্রি করবেন। সেটা আজকে বলে যান। সরকারি রেটে পাই না। যদি পাই তাহলে আমরা অন্যায় করলে যা বিচার করবেন, তাই মাথা পেতে নেব।’
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘রিফাইনারিরা বলেছেন তেলের ঘাটতি নেই, মিল পর্যায়ে মূল বৃদ্ধি করে নাই। তাহলে দামটা বাড়ল কেমনে? মিলার এবং ডিলার বলেন, গ্যাপটা কোথায় হয়েছে।’
মতবিনিময় সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যতগুলো এসও (সাপ্লাই অর্ডার) যাবে তাতে মূল্য লেখা থাকবে। ৯ তারিখের এসও ২৪ তারিখের মধ্যে পরিষ্কার করতে হবে। আগামীকাল থেকেই মিলগেটে তদারক করতে বসবে ভোক্তা অধিকারের টিম। সরকারি সংস্থা টিসিবির হাতে চার কোটি লিটার তেল আছে বলে জানান তিনি।’
সব অভিযোগ অস্বিকার করে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘প্রতিদিন ২ হাজার ১০০ টন ডেলিভারি দিচ্ছি। আমি যে স্টেটমেন্ট দিয়েছি তাতে দেখুন প্রতিটা পার্টিকে সেই দামে দিচ্ছি কি না।’
প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Comments: