ইন্টারনেট
হোম / অর্থনীতি / বিস্তারিত
ADS

মধ্য-নিম্নবিত্তের ওপর চাপ বাড়বে

5 November 2021, 10:39:53

করোনার পর প্রায় সব পণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে তিনগুণের বেশি। এর সঙ্গে স্থানীয়ভাবে বেড়েছে ডলারের দাম।

এসব কারণে বাজার পরিস্থিতি উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এর প্রভাবে স্থানীয় পর্যায়ে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম গড়ে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে বুধবার রাত থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয়েছে।

দেশে মোট জ্বালানির মধ্যে ডিজেলই ব্যবহার হয় ৭৩ শতাংশ। সেই ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে পণ্য উৎপাদন, পরিবহণ এবং গণপরিবহণ ব্যয় বাড়বে।

একই কারণে আমদানি করা জিনিসপত্রের দামও বাড়বে। এছাড়া কৃষিতে সেচ, সার, বেসরকারি খাতে উৎপাদিত বিদ্যুতের খরচও বৃদ্ধি পাবে।

কমবে টাকার মান, বাড়বে মূল্যস্ফীতির হার। যার প্রভাবে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত চাপের মুখে পড়বে। তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বাড়ানো হয়েছে এলপিজির দাম। এতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ২৫৯ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩১৩ টাকা।

এদিকে করোনাকালে অনেকে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। তাদের অনেকেই কাজে ফিরতে পারেননি। মহামারিতে কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের মন্দা এখনো কাটেনি।

অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কার্যক্রমও স্বাভাবিক হয়নি। সার্বিকভাবে মানুষের আয় বাড়েনি, উলটো কমেছে। অথচ পণ্যের মূল্য বাড়ছে। ফলে সব মিলে ভোক্তাকে জীবনযাত্রার মানের সঙ্গে আপস করতে হবে। অর্থাৎ, অনেক ব্যয় কাটছাঁট করতে হবে। পণ্যমূল্য বাড়ায় দেশে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে। জ্বালানির দাম বৃদ্ধি এ হারকে আরও উসকে দেবে।

বুধবার রাত ১০টায় পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটারে ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়েছে।

নতুন দাম বুধবার রাত ১২টা থেকে কার্যকর করা হয়। এদিকে গত জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে, যা এখন বেড়ে প্রতি ব্যারেল ৯০ ডলারে পৌঁছায়।

গত বছর এপ্রিলে দাম সর্বনিম্ন ২০ ডলারে নেমে গিয়েছিল। এদিকে দেশে জ্বালানি তেলের দাম এমন সময় বাড়ানো হলো, যখন ভারতে দাম কমানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক দরও নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ৯০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, অর্থনীতি ও ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেলের প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে। এর দাম বৃদ্ধিতে সব খাতের পণ্য ও সেবার দাম বাড়বে। এতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে গিয়ে ভোক্তার ওপর চাপ তৈরি করবে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা চাপে পড়বে।

তিনি আরও বলেন, জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে সরকার হয়তো টাকার হিসাবে ভর্তুকির দিক থেকে একটু সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় বেশি ডলার খরচ করে তেল আনতে হবে।

এতে বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ বাড়বে। ফলে দুইদিক থেকেই সরকারকে চাপ মোকাবিলা করতে হবে। অভ্যন্তরীণভাবে সব পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের ক্ষোভ বাড়বে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার চাপও বাড়বে।

সূত্র জানায়, করোনার পর বিশ্ব অর্থনীতি দ্রুত স্বাভাবিক হতে শুরু করায় বিশ্ববাজারে প্রায় সব পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। জ্বালানিবহির্ভূত পণ্যের দাম গত বছরের জুনে ছিল গড়ে ৭৫ ডলার। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১১০ ডলার। খাদ্য উপকরণের দাম একই সময়ে ৮০ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ১১৫ ডলার। সয়াবিন তেলের দাম প্রতি টন ৭০০ থেকে বেড়ে হয়েছে দেড় হাজার ডলার।

নিট সুতার দাম বেড়েছে ৫৩ শতাংশ, ফেব্রিক্সের দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়ায় এমনিতেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এর মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সব ধরনের পরিবহণ খরচ বেড়ে গেছে। জাহাজে পণ্য পরিবহণ ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৭৩ শতাংশ।

এটাও পণ্যের সঙ্গে যোগ হয়েছে। ফলে দাম আরও বেড়েছে। এর সঙ্গে আছে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি। এই তিন কারণে পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ অবস্থায় দেশের বাজারে ডিজেলের দাম বাড়ায় সব খাতে আরও এক দফা মূল্য বাড়বে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়বে গণপরিবহণ ব্যয়। কেননা এ খাতে জ্বালানির প্রভাব সবচেয়ে বেশি।

এদিকে দেশে বৃহস্পতিবার থেকেই প্রায় সব অঞ্চলে ট্রাক, লরি ও পিকআপ ভাড়া বেড়ে গেছে। গণপরিবহণের মধ্যে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাস ভাড়া ৩৬ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে। যদিও সরকার এখনো বাস ভাড়া বাড়ায়নি। কুষ্টিয়া থেকে ঢাকা আসতে বাড়তি দামের কারণে ১ হাজার টাকার বেশি তেল লাগবে বলে ট্রাকচালকরা জানিয়েছেন। সে অনুপাতে পণ্যের দাম বাড়বে।

পরিবহণ খরচ বাড়ায় বাজারে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় প্রতিদিনই একটি করে নতুন পণ্য ও সেবা যোগ হচ্ছে। খোদ সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে-বাজারে গত বছর একই সময়ের তুলনায় নিত্যপণ্য সর্বোচ্চ ৫৪ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর সঙ্গে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বৃদ্ধির কারণে আরও বেশি কিছু পণ্যের দাম বাড়বে। পাশাপাশি গ্রাহক পর্যায়ে কেজিতে সাড়ে ৪ টাকা বাড়িয়ে এলপিজির নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে ব্যয় বাড়ায় সংসার টানতে আরও চাপে পড়বে ভোক্তা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষিতে পানি সেচ দিতে ডিজেল ব্যবহার করা হয়। তাই ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বৃদ্ধিতে এবার কৃষিপণ্য উৎপাদনে খরচ বাড়বে। স্বাভাবিকভাবে পণ্য বিক্রি করতে হবে বেশি দরে। পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল যন্ত্রাংশ চালনায় বাড়তি দরে ডিজেল ব্যবহারে প্রসেসিং ফুড তৈরিতে খরচ বৃদ্ধি পাবে।

পাশাপাশি ডিজেলের দাম বাড়ায় পরিবহণ ভাড়া বাড়ানোরা দাবি জানিয়েছেন মালিকরা। এতে ভোক্তার খরচ আরও বাড়বে।

অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, সেবা খাতের খরচ বাড়লে মূল্যস্ফীতির হার বেশি বাড়ে। এর মধ্যে গণপরিবহণের ভাড়া বাড়লে মূল্যস্ফীতিতে চাপ বেশি পড়বে।

জ্বালানি তেলের সঙ্গে প্রায় সবকিছু সম্পর্কিত। বিদ্যুৎ উৎপাদনেও এখন জ্বালানি তেল ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের দামে এর প্রভাব পড়বে।

সরকার দাম না বাড়ালে ভর্তুকি বাড়াতে হবে। দেশে মোট জ্বালানির মধ্যে ডিজেল ব্যবহৃত হয় ৭৩ শতাংশ। বাকি ২৭ শতাংশ অন্যান্য জ্বালানি। ফলে ডিজেলের দাম বাড়ায় সব খাতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সব মিলে বেশি ভোগান্তিতে পড়বেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, জ্বালানি এমন একটা পণ্য যার দাম বৃদ্ধি মূলত সবকিছুর ওপর প্রভাব ফেলে। সার্বিকভাবে জীবনযাত্রার ব্যয়ও বেড়ে যাবে। আজকের ডিজেলের দাম বেড়ে গেল কালকেই পরিবহণের ভাড়া বাড়বে। ফলে পরিবহণে যেসব পণ্য আসবে সেগুলোর দামও বাড়বে। পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে। করোনাকালে এমনিতেই মানুষের আয় হ্রাস পেয়েছে। ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের টিকে থাকাটাই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। সেখানে এভাবে তেলের মূল্যবৃদ্ধি করে প্রান্তিক পর্যায়ের সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জায়গাটা দুর্বল এবং আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং করা হয়েছে।

এদিকে জ্বালানি তেলে দাম বাড়ায় ইতোমধ্যে বাজারে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ৬ পিস রুটি কেকের দাম ১০ টাকা বাড়িয়ে ৭০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। ১৫ টাকা দামের পাউরুটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা। প্লাস্টিক আইটেমের মধ্যে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বসার জন্য মাঝারি আকারের মোড়ার দাম বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। প্লাস্টিকের ফুলের টবের দাম বেড়েছে আকার ভেদে ১০-৩০ টাকা। এছাড়া পুরুষের সেভ করার ওয়ান টাইম রেজারের দামও বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, আগে যে রেজার প্রতি পিস সর্বনিম্ন ১৫ টাকায় বিক্রি করা হতো এখন তা ২০ টাকা হয়েছে। এছাড়া একাধিক পণ্যের দাম নতুন করে পাইকাররা বেঁধে দিয়েছেন। যা বেশি দরে বিক্রি হবে।

অন্যদিকে গ্রাহক পর্যায়ে কেজিতে সাড়ে ৪ টাকা হারে বাড়িয়ে এলপিজির নতুন দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এতে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ২৫৯ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩১৩ টাকা। বৃহস্পতিবার বিইআরসি এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এ আদেশ ৪ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে। যা পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ দামই বহাল থাকবে।

জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে দেশের সাধারণ মানুষের আয়ের ওপরও এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। ফলে দেশের একটি বড় অংশ মানুষের আয় কমেছে। এর বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার মধ্যেই জ্বালানির এই দাম বৃদ্ধির প্রভাব সাধারণ মানুষের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে। জ্বালানি তেলে দাম বাড়ায় সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে পরিবহণ খাতে। তারা রাতারাতি পরিবহণ ব্যয় বাড়িয়ে দেবে। এতে সব ধরনের পণ্য ও সেবার দাম বাড়বে। তিনি জানান, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে বিদ্যুতের দামও বাড়তে পারে। কারণ আমাদের এখনও অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ডিজেলচালিত। একইসঙ্গে সেচকাজে ডিজেলের ব্যবহার হওয়ায় কৃষিতেও এর প্রভাব পড়বে। তাই এ দাম বাড়ানো অযৌক্তিক।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, সরকার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। এই দামের তুলনায় বেশি দরে বিক্রি হয় কিনা সেটা তদারকি করা হবে। পাশাপাশি ভোক্তা স্বার্থে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে উৎপাদিত পণ্যের দাম বেশি রাখা বা অযৌক্তিক ভাবে বাড়ালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জ্বালানি তেলের দাম
সূত্কর
ঃ মানো হয়েছিল। সেই সময় ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৩ টাকা কমিয়ে ৬৮ টাকা থেকে ৬৫ টাকা করা হয়। তার আগে ২০১৩ সালে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ছিল ৬৮ টাকা। এর আগে ২০১২ সালে ছিল ৬৩ টাকা।

২০১১ সালে ৪ দফা দাম বাড়ানো হয়। তখন এই দুই পণ্যের দাম ছিল ৬১ টাকা। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গণমাধ্যমকে জানান, ভারতে ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তেল পাচার হবে এ আশঙ্কায় দাম বাড়ানো হয়েছে।

তবে কেরোসিনের চাহিদা তেমন নেই। যেহেতু ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে সেজন্য কেরোসিনের দাম না বাড়ালে এটি মিশিয়ে ভেজাল করা হবে। সেজন্য কোরোসিনর দাম বাড়ানো হয়েছে।
সূত্রঃ যুগান্তর

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: