ইন্টারনেট
হোম / সারা বাংলা / বিস্তারিত
ADS

পঞ্চম ধাপে নৌকার ভরাডুবি

6 January 2022, 6:53:23

পঞ্চম ধাপে ইউপি নির্বাচনে তুলনামূলক এগিয়ে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা শুধু জামানত বাজেয়াপ্ত নয়-মাত্র ৪২ ভোট পেয়ে সবচেয়ে কম ভোটের রেকর্ড ঝিনাইদহ জেলার ফলসী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিমাই চাঁদ মন্ডলের। পঞ্চমধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামানত হারানোর পাশপাশি তিনশোর ঘরে পৌঁছাতে পারেনি আওয়ামী লীগের বেশকজন প্রার্থী।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ১৯৩ প্রার্থী বাদে আওয়ামী লীগের জয় মাত্র দেড়শোর মতে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আড়াইশো আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ১১৭ ইউনিয়নে।

ভোটের দিনের সহিংসতা আগের নির্বাচনগুলোর চেয়ে ছিল বেশী। দলীয় ব্যানারে বিএনপি অংশ না নিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে ছিলো দলটির নেতা কর্মীরা। তবে, মূল লড়াই ছিলো নৌকা ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে।

প্রাপ্ত ফলাফলে বেশকটি ইউপিতে নৌকার প্রার্থীর ভোট ছিল লজ্জাজনক। তেমনি একটি ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ড উপজেলার ফলসী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিমাই চাঁদ মন্ডল পেয়েছেন মাত্র ৪২ ভোট। যেখানে নয়টি কেন্দ্রের তিনটিতে তিনি পেয়েছেন এক ভোট করে। আর ছয় ভোট করে পেয়েছেন দুটি কেন্দ্রে। শুধুমাত্র নিজের কেন্দ্রে পেয়েছেন কেন্দ্রে পেয়েছেন ১৫ ভোট। যেখানে চার হাজার ৬’শো ২৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। এ উপজেলার আট ইউনিয়নের মাত্র দুটিতে জয়ী হয়েছেন নৌকা সমর্থিত প্রার্থী।

একই অবস্থা কুষ্টিয়ার সদরে। ১১ টি ইউনিয়নে মাত্র একটিতে জয়লাভ করেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী। এর মধ্যে তিনটি ইউনিয়নের নৌকা প্রতিকের রয়েছে কম ভোটের রেকর্ড। কুষ্টিয়া বটতৈল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম এ মমিন মন্ডল পেয়েছেন মাত্র একশো ৪২ ভোট। আলমপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল হান্নান পেয়েছেন ১১৭ ভোট। আর হাট শরিয়তপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতিক নিয়ে সম্পা মাহমুদ পেয়েছেন মাত্র ২৩২ ভোট।

বগুড়াতেও ডুবেছেন আওয়ামী লীগের এক প্রার্থী। কালাই ইউনিয়নে মাত্র ১১২ ভোট পেয়েছেন আজহার আলী।

প্রাপ্ত ভোটের হিসেবে দেখা যায়, দেশের অনেক জেলায় নৌকার চেয়ে এগিয়ে স্বতন্ত্র ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এরমধ্যে নীলফামারির দুই উপজেলার এগারোটি ইউনিয়নের নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও স্বতন্ত্র জয়ী ৮টিতে। যেখানে আওয়ামী লীগ মাত্র তিনটিতে।

বগুড়ার ২২ ইউনিয়নের ১১টিতে জয়ী হয়ে এগিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। যেখানে নৌকার জয় ৯টি ইউনিয়নে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী জয়ী ২টি ইউনিয়নে আর জয়ী হয়েছেন জামায়াতের চার নেতাও। কুড়িগ্রামেও এগিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছে ৩টিতে।

রাজশাহীর তিন উপজেলার ১৯ ইউনিয়নেও এগিয়ে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগ ৬টিতে জয়ী হলেও বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৭টি ইউনিয়নে।

ব্রাক্ষণবাড়িয়ার ১৮ ইউনিয়নেও এগিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগ ৬টিতে জয়লাভ করলেও ১২টি ইউনিয়নে জয়ী হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী। চাঁদপুরে ২৯টি ইউনিয়নের ১২টি বিদ্রোহী প্রার্থী জয়লাভ করে এগিয়ে রয়েছে নৌকার চেয়ে।

এছাড়া, নাটোর, পাবনা, শেরপুর, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, কুমিল্লা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জেও এগিয়ে স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থীরা। তবে, কিশোরগঞ্জের ১৫ ও গোপালগঞ্জের ১৮ ইউনিয়ন এবং মাদারীপুরের শিবচরের ২টি ও শরীয়তপুরের ১৫ ইউনিয়নে দলীয় কোন প্রতিক না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে।

৫ম ধাপের এই নির্বাচনেও দুইটি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে। সে হিসেবে নির্বাচন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বাদ দিলে এগিয়ে রয়েছে বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে ৯টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: