ইন্টারনেট
হোম / সারা বাংলা / বিস্তারিত
ADS

কুমিল্লায় পল্লী চিকিৎসক ও স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

6 September 2021, 7:06:01

কুমিল্লায় এক পল্লী চিকিৎসক ও তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে জেলার সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের সুর্বণপুর এলাকার মীর বাড়িতে এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের সুবর্ণপুর গ্রামের মীর বাড়ির পল্লী চিকিৎসক সৈয়দ বিলাল হোসেন (৭৫) ও তার স্ত্রী সফুরা বেগম (৫৫)। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে পল্লী চিকিৎসকের বড় ছেলে প্রবাসী আমান উল্যাহর স্ত্রী নাজমুন নাহার শিউলীসহ দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ বলছে- হত্যার সাথে পারিবারিক কলহ কিংবা ডাকাতির সূত্র থা-ই থাকুক না কেন দ্রুত তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তবে পুত্রবধূর পরকীয়া ও জমি নিয়ে বিরোধের বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পিবিআই, সিআইডি ও থানা পুলিশের একাধিক টিম বিষয়টি তদন্ত করছে।

নিহত দম্পতির মেয়ে বিলকিস আক্তার বলেন- তাঁরা দুই ভাই ও দুই বোন। তাঁর দুই ভাই বিদেশে ও তাঁরা দুই বোন শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। আমি খবর পেয়ে জানতে পারি রোববার মধ্যরাতে বৃষ্টির সময় ৭-৮ দুর্বৃত্ত চিকিৎসক ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা আমার মা-বাবা’র হাত-পা বেঁধে মূল্যবান জিনিসি ও স্ট্যাম্পসহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের খোঁজ করছিল। ধারণা করছি, সেগুলো না দেয়ায় শ্বাসরোধ করে তাদেরকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন- আমাদের ধারনা আমার ভাইয়ের স্ত্রী শিউলী এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে। গত রমজানে বাবার মায়ের সাথে শিউলীর পারিবারিক কলহের ঘটনা ঘটেছে। সে সময় তার সাথে কিছু বিষয়ে চুক্তি স্ট্যাম্পে লেখা হয়। সে সব স্ট্যাম্পের জন্য কিংবা মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিতেই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছে। তবে এ খুনের ঘটনায় কারা জড়িত তা বের করবে পুলিশ। আমি হত্যাকারীদের দ্রুত শাস্তি চাই। বিলকিসের দাবি, তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী নাজমুন নাহার দুর্বৃত্তদের ঢোকার জন্য দরজা খুলে দেন। নাজমুনের সঙ্গে এক ব্যক্তির বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আছে। এই সম্পর্কের জেরে এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে। এ ছাড়া মা-বাবার সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ আছে বলে তাঁর জানা নেই।

নিহত চিকিৎসকের ভাই সুলতান আহমেদ জানান-রাত আনুমানিক ১২টার সময় আমার ভাতিজা বাউ শিউলী আমাদের ঘরের সামনে এসে ডাকাডাডিক শুরু করে। সে জানায় তাদের ঘরে ডাকাত ঢুকেছে। আমরা দৌগে গিয়ে দেখি-বিল্লাল ভাইকে সোফার সাথে হাত পিছনের দিকে দিয়ে বাঁধা। তার গায়ের উপর হাত পা বাঁধা অবস্থা ভারীও পড়ে আছে। ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা করা হচ্ছে গলায় রশি পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহতদের এক প্রতিবেশী বলেন, প্রায় দুই মাস আগে বিলাল হোসেনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। লুট হওয়া মালামাল কিছুদিন পরে তার পুত্রবধূ শিউলী বেগমের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে শিউলী স্বীকার করে বলেছিলেন, ডাকাতির ঘটনা তিনিই সাজিয়েছেন। এরপর এমন কাজ আর কখনও করবেন না বলেও জানান।

পাঁচথুবী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন বলেন, রবিবার মধ্যরাতে সাত থেকে আট জনের একটি দল বিলাল হোসেনের ঘরে ঢুকে কিছু একটা চেয়েছিলো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে তাদেরকে মারধর করে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। শিউলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল আজিম বলেন, পুত্রবধূর পরকীয়া ও জমি নিয়ে বিরোধের বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে অপরাধীদের চিহ্নিত করা যাবে। নিহত দুজনের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। কৌশলে স্বামী-স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: