Friday 3 May, 2024

For Advertisement

বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশি হুসাইন

24 September, 2022 6:45:22

বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা একটি ছেলে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন। অথচ অজপাড়াগাঁয়ে সুযোগের অভাবে বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ার সুযোগই হয়নি তাঁর। মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার ঘুল্লিয়া গ্রামের মো. হুসাইন আলম সেই ছেলে। যিনি নিরুপায় হয়ে দাখিল ও আলিম পাস করেছেন মাদ্রাসা থেকে। ইউনিভার্সিটি অব রকলা পোল্যান্ড থেকে পিএইচডি (ডক্টর অব ফিলোসফি) করে বর্তমানে ওই বিশ্ববিদ্যালয়েই টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত আছেন হুসাইন।

দৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
তার একাডেমিক কৃতিত্ব ইউরোপ এবং সারা বিশ্বে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সাড়ে ৪০০ বছরের পুরাতন ওই ইউনিভার্সিটি থেকে নয় জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান বাংলাদেশের ছেলে হুসাইন; বিষয়টি অবশ্যই গর্বের। হুসাইন বাংলাদেশের সুযোগ্য প্রতিনিধি।

হুসাইন পোল্যান্ডে ব্রিটিশ গ্র্যাজুয়েট কলেজ অব রোকলোরের একজন ফাউন্ডার। সারাজীবন এমন একটি স্বপ্ন বয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। হুসাইন সংগ্রামমুখর জীবনের অধিকারী। বাস্তবে এতটা পথ পাড়ি দিতে হুসাইনকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। তবে হুসাইনের ছিল তীব্র সাধনা, অদম্য ইচ্ছা, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য। ফলে স্বপ্ন ও সংগ্রামের ফসল পেয়েছেন তিনি। তিনি যে গ্রামে জন্মেছেন সেই গ্রামে কোনো স্কুল ছিল না। তার ইচ্ছা ছিল বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ার; যেন গরীবের চিকিৎসক হতে পারেন। ওই সময় গ্রামে পাকা রাস্তা ছিল না, বিদ্যুৎ ছিল না; এমনকি শিক্ষার আলো অনেক মানুষের ভাগ্যেই জোটেনি।

সন্ধ্যাবেলায় আশপাশের মানুষের চিৎকার-চেঁচামেচি ও গান-বাজনার কারণে হুসাইন পড়তে পারতেন না। ওই সময়টি মায়ের পরামর্শে ঘুমিয়ে কাটাতেন তিনি। রাতের বেলা পরিবেশ-পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে ছোট বোনকে সাথে নিয়ে লেখাপড়া করতেন। তিনি ও তার ছোট বোন একই ক্লাসে পড়তেন। অভাবের কারণে এক সেট বই দিয়েই দুজন পড়াশোনা চালিয়ে নিতেন। সেই পঞ্চম শ্রেণি থেকে থেকে টিউশনি করে টাকা আয় করছেন।

হুসাইন আলম অনার্স করেছেন লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অব সান্ডারল্যান্ড থেকে। মাস্টার্স করেছেন ক্যান্টারবেরি ক্রাইস্ট চার্চ ইউনিভার্সিটি থেকে। লন্ডনে তার লেখাপড়া ও জীবন যাপনের জন্য সব ধরনের কাজ করেছেন। ওই সময়ে তার এক বছরের খরচ ছিল ২০ থেকে ২২ হাজার পাউন্ড। এতোগুলো টাকা আয় করতে কিচেন পটার, ক্লিনিংসহ তাকে তিনটি খণ্ডকালীন চাকরি করতে হয়েছে। সকালে ক্লিনিং, তারপর ইউনিভার্সিটি অব ক্যান্টের হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের চাকরি এবং বিকালে ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতে হতো তাকে। ফলে সব কাজ শেষ করতে রাত বারোটা বেজে যেত। পরে সারারাত জেগে লেখাপড়া করতেন তিনি।

হুসাইন আলম দ্বিতীয় বাংলাদেশি যিনি ক্যান্টারবেরি ক্রাইস্ট চার্চ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছেন। তিনি একমাত্র বিদেশি পিএইচডির ছাত্র যিনি সাড়ে চৌদ্দশ ছাত্রের ভেতরে দুইবার বেস্ট স্টুডেন্ট কিঅ্যাক্টর স্কলারশিপ পেয়েছেন।

পোল্যান্ডের ইতিহাসে তিনি একমাত্র বিদেশি যিনি পলিশ এসোসিয়েশনের সাইন্টিফিক মেম্বার। তার ছয়টি আর্টিকেল বের হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল হাইক্লাস জারনালে। ২৫টিরও বেশি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে তিনি পেপার সাবমিট করেছেন।

হুসাইন আলমের মতে, কোনো স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হলে কঠিন পরিশ্রম ও সততার বিকল্প নেই। কঠোর পরিশ্রম, একান্ত মনোবল, তীব্র সাধনা ও সততার জীবন যাপনই হুসাইনের গল্প। যা আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়।

For Advertisement

সম্পাদক ও প্রকাশক:- এ এফ এম রিজাউর রহমান (রুমেল), এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট  
  • প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সহযোগী-সম্পাদক:
    • গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
সহ -সম্পাদক:
    • হাসিনা রহমান শিপন,
নিউজ রুম ইনচার্জ :
    রাশিকুর রহমান রিফাত
© সকল স্বত্ব প্রতিচ্ছবি ডটকম ২০১৫ - ২০২২ অফিস: ৭২/২ উত্তর মুগদাপাড়া, ঢাকা ই-মেইল: dailyprotichhobi@gmail.com | মোবাইল: ০১৮১৮০৯৩১৩৭ ফোন:+৮৮০২৭২৭৭১৪৭

Developed by WebsXplore