Friday 29 March, 2024

For Advertisement

সুস্থ থাকতে করুন শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম

18 April, 2021 7:33:30

সুস্থ থাকতে সাধারণ ব্যায়ামের পাশাপাশি শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়ামও জরুরি। শ্বাস গ্রহণ ও ত্যাগের মাধ্যমে আমরা শরীরে অক্সিজেন নিচ্ছি আর দূষিত কার্বন ডাই-অক্সাইড বার করে দিচ্ছি। শরীরে কোষের বিপাকের ফলে তৈরি কার্বন ডাই-অক্সাইড রক্তের সঙ্গে এসে পৌঁছয় হৃৎপিণ্ডে, সেখান থেকে চলে যায় ফুসফুসে। সেই সময়েই ফুসফুসে গৃহীত অক্সিজেন রক্তস্রোত থেকে সংগ্রহ করে প্রতিটি সজীব কোষে পৌঁছে দেয় হৃৎপিণ্ড।

কাজেই হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুস, এই দুই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের সুস্থ কার্যকারিতা শ্বাসক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা যথাযথ থাকে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, ঘুম ভাল হয়। শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা থেকে ফুসফুসে রোগ ও হৃদরোগ হতে পারে।

শৈশবে বাচ্চারা ঠিক পদ্ধতিতে শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়। অর্থাৎ শ্বাসগ্রহণ করলে বাচ্চাদের পেট ফুলে ওঠে এবং শ্বাস ছাড়লে পেট চুপসে যায়। ডায়াফ্র্যামেটিক ব্রিদিং এভাবেই হয়। কিন্তু ক্রমশ শারীরচর্চার অভাব, অস্বাস্থ্যকর কাজের ভঙ্গির ফলে ব্রিদিং কম্প্রোমাইজড হয়ে পড়ে। আমাদের শরীরের সামনের দিক দিয়েই কাজ করি, যেমন গাড়ি চালানো, কম্পিউটার, লেখালিখি। এর ফলে সামনের দিকের পেশিগুলো বেশি সক্রিয় হয়ে পড়ে এবং সহজেই পাশের পেশির কাজের সময়ে ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক্যালি চার্জড হয়ে যায়। যেমন শ্বাসক্রিয়ার সময়ে শেষ এক-তৃতীয়াংশে বুকের পেশির ভূমিকা দরকার। কিন্তু দেখা যায়, পুরো ব্রিদিংটাই চেস্টে হচ্ছে। এতে পেট থেকে শুরু না হয়ে, শ্বাস নিলে পেট চুপসে যাচ্ছে এবং শ্বাস ছাড়লে পেট ফুলে উঠছে। এতে শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ঢুকতে পারে না। শরীরের বায়ু গ্রহণ অর্থাৎ ‘প্রাণ’ এর পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে, সমস্ত শরীরই ধীরে ধীরে ক্ষতির দিকে এগিয়ে যাবে।

তাই শরীরকে ঠিক শ্বাসগ্রহণ ও শ্বাসত্যাগে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে হবে। শোয়ার সময়ে পেটের উপরে একটা হালকা বই রেখে খেয়াল করতে হবে, শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন বইটি ওঠানামা করে। এ ছাড়াও, নিয়মিত শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়ামের অভ্যাস থাকা জরুরি।

শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে পিঠ সোজা করে পদ্মাসনে বা সুখাসনে বসতে হবে। চোখ বন্ধ রেখে মনোনিবেশ করতে হবে শরীরে শ্বাসবায়ুর প্রবেশ এবং বেরিয়ে যাওয়ার উপরে। নাক দিয়ে গভীর ভাবে শ্বাস নিন। সাধ্যমতো কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন। তার পর ধীরে ধীরে ছেড়ে দিন। পুরো পদ্ধতিটি সাত-আটবার করে রিপিট করুন।

খেয়াল রাখতে হবে, শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাভি যেন বাইরের দিকে ঠেলে ওঠে এবং শ্বাস ছাড়ার সময়ে যেন নাভি ভিতরের দিকে ঢুকে যায়। এটাই অভ্যেস করতে হবে।

নিয়মিত এবং ঠিকমতো শারীরচর্চার মধ্য দিয়ে একজন মানুষ তার শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার পদ্ধতিকে সংশোধন করতে পারে। সচেতনভাবে চেষ্টা করতে করতেই একজন বুক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া চালানোর পরিবর্তে অ্যাবডোমিনাল ব্রিদিংয়ে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারে।

এ ধরনের ব্যায়াম নিয়মিত অনুশীলনের মধ্য দিয়ে ক্রমশ রোজকার অভ্যেসে পরিণত হয়। কেউ যদি মোটামুটি তিন মিনিট ধরে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়া-ছাড়ার প্রক্রিয়া চালায়, তা হলেই তার শ্বাস-প্রশ্বাসগত সমস্যা অনেকটাই কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রত্যেক দিন চার-পাঁচ মিনিট ধরে অ্যাবডোমিনাল ব্রিদিংয়ের অনুশীলন করলে, তা আমাদের সামগ্রিক শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়ার উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে ফুসফুস এবং হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়ার সামগ্রিক উন্নতি ঘটে।

বর্তমানে করোনা-পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখলে শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়ামকে গুরুত্ব দিতেই হবে। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে যতক্ষণ পারেন ধরে রেখে, পরে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে হবে। এর ফলে ফুসফুসের কোষগুলোর ব্যায়াম হয়, ভাইরাসজনিত কারণে সহজে তার ক্ষতি হওয়া আটকায়। রোগী সহজে শ্বাসকষ্টের শিকারও হন না।

পিঠের মেরুদণ্ড টানটান করে প্রথমে মুখ দিয়ে শ্বাস ছেড়ে ফুসফুসের সব বাতাস বার করে দিতে হবে। আবার গভীর শ্বাস নিয়ে যতটা সম্ভব ফুসফুসে বাতাস ভরে নিতে হবে। এর পর যতক্ষণ সম্ভব শ্বাস আটকে রাখুন। আবার সব বাতাস বের করে দিন। এই প্র্যাকটিস দিনে অন্তত দু’বার করা যেতে পারে। এতে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

Latest

For Advertisement

সম্পাদক ও প্রকাশক:- এ এফ এম রিজাউর রহমান (রুমেল), এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট  
  • প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সহযোগী-সম্পাদক:
    • গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
সহ -সম্পাদক:
    • হাসিনা রহমান শিপন,
নিউজ রুম ইনচার্জ :
    রাশিকুর রহমান রিফাত
© সকল স্বত্ব প্রতিচ্ছবি ডটকম ২০১৫ - ২০২২ অফিস: ৭২/২ উত্তর মুগদাপাড়া, ঢাকা ই-মেইল: dailyprotichhobi@gmail.com | মোবাইল: ০১৮১৮০৯৩১৩৭ ফোন:+৮৮০২৭২৭৭১৪৭

Developed by WebsXplore