For Advertisement
আবেদন নাকচ, বিদেশ যেতে পারছেন না খালেদা জিয়া
সাজাপ্রাপ্ত কারো বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার নজির না থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার দেশের বাহিরে চিকিৎসার বিষয়ে নেতিবাচক মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। ফলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে রবিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন মতামত দিয়েছেন। সেখানে মন্ত্রী বলেছেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামির বিদেশে চিকিৎসার বিধান নেই।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে রবিবার সকালে মতামত দেন আইনমন্ত্রী। পরে তা পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
বিকালে আবেদনের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সেখানে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি জানান তিনি।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আইনের বাহিরে গিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। তিনি (খালেদা জিয়া) হঠাৎ করে করোনা আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। এরমধ্যেই তার ছোট ভাই আমার কাছে আসছিলেন। তিনি যে আবেদনটি করেছিলেন আপনারা জানেন। তিনি বিদেশে যাওয়ার জন্য একটা অনুরোধ আমাদের কাছে করেছিলেন। আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে মতামতের জন্য পাঠিয়েছিলাম। আইন মন্ত্রণালয় থেকে মত আসছে, তারা স্পট জানিয়ে দিয়েছে ৪০১ ধারায় সাজা স্থগিত করে যে সুবিধা দেয়া হয়েছে সেটা দ্বিতীয়বার আবার সাজা মওকুফ করে তাকে বিদেশে পাঠানোর অবকাশ নেই। শর্ত সাপেক্ষে তার সাজা মওকুফ হয়েছিলো। সেই শর্তের অন্যতম হলো তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। বাসা থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত অনুযায়ী আমরা তাদের আবেদন মঞ্জুর করতে পারছি না। আমরা এখন তাদেরকে এটাই জানিয়ে দেব।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও বলেন, বিষয়টা মানবিক হিসেবে দেখার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আমরা আগে দেখতে চেয়েছি আইনের কোনো যায়গায় সুবিধা দেয়া যায় কি না। প্রধানমন্ত্রী তাকে সাজা স্থগিত রেখে বাসায় চিকিৎসা সেবা গ্রহণের সুযোগ দিয়েছে। বিএনপি কি অভিযোগ করলো সেটা প্রশ্ন আসে না। আমাদের আইন কি বলে সেটাও তো দেখতে হবে। আমরাতো আইনের বাইরে যেতে পারি না।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনে সরকার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে বিএনপি প্রধানকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়। মুক্ত থাকার সময়ে তাকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না শর্তে উল্লেখ করা হয়।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সেদিন তার বাসভবন ফিরোজায় আরও আটজন ব্যক্তিগত স্টাফও করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরে ২৭ এপ্রিল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে।
গত সোমবার সকালের দিকে শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে চিকিৎসকরা খালেদা জিয়াকে সিসিইউতে স্থানান্তর করেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
বিএনপি প্রধানের উন্নত চিকিৎসা করাতে বিদেশে নেয়ার জন্য গত বুধবার সরকারের কাছে আবেদন করে তার পরিবার। ওইদিন রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসায় আবেদনটি দিয়ে যান খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। এরপর সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আজ আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেতিবাচক মতামত দেয়া হয়।
২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর তিন মাসের চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছিলেন তিনি। এরপর খালেদা জিয়া আর কোনো দেশে যাননি।
যদিও আবেদন পাওয়ার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন সরকার আবেদনটি ইতিবাচকভাবে দেখছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও বিষয়টি নিয়ে সরকার আন্তরিক বলে দাবি করেছিলেন।
Latest
For Advertisement
- প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
-
- গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
-
- হাসিনা রহমান শিপন,
- রাশিকুর রহমান রিফাত
Developed by WebsXplore