For Advertisement
ঠান্ডায় গলা ব্যথা নাকি করোনা, প্রতিরোধের উপায়
শীতকালীন সর্দিকাশির বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে। ঘুষঘুষে জ্বর, কাশি, সর্দিতে ভুগছেন অনেকেই। কমবেশি অনেকেই এই শীতকালীন ঠান্ডা লাগার শিকার। এক বার ঠান্ডা লাগার উপসর্গগুলো দেখা দিতে শুরু করলে, সহজে তা কমতে চায় না। শীতের ঠান্ডায় হুট করে ঠান্ডায় হতে পারে গলা ব্যথা। এটি আমাদের জন্য বেশ অস্বস্তিদায়ক। কারণ গলা ব্যথার কারণে কথা বলতে, ঢোক গিলতে বেশ সমস্যা হয়।
বিশেষ করে করোনা সংক্রমণের মধ্যে এ বিষয়ে সাবধানতা দরকার। ঠান্ডা পানি পানে বা ঠান্ডা লাগার কারণে গলায় যে ব্যথা হয়, তা মূলত ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হয়। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত হলেও গলাব্যথা হয়। দুটি ক্ষেত্রেই ব্যথার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য থাকে না। লক্ষণগুলো অনেকটা একই রকম। কিন্তু গলাব্যথার কারণ যদি করোনার নতুন রূপ হয়, সে ক্ষেত্রে ব্যথার ধরনটা আলাদা হবে। গলাব্যথার ধরন দেখে তফাত করবেন কী ভাবে?
করোনার কারণে গলাব্যথা হলে গলার কাছে কিছু আটকে আছে বলে মনে হবে। খাবার গিলতে কষ্ট হবে। সব সময় গলা শুকিয়ে আসবে।
ঠান্ডা লেগে গলাব্যথা হলে শুধু গলায় নয়, অনেক সময় মাড়িতেও ব্যথা হয়। দু’-এক বার গার্গল করলে কমে যাওয়ার কথা।
করোনার গলাব্যথা সাধারণত পাঁচ দিনের বেশি থাকে না। পাঁচ দিনের বেশি গলা ব্যথা থাকলে, তা অন্য কোনও কারণে হয়েছে ধরে নেওয়া যেতে পারে।
ঠান্ডা লাগার কারণে গলাব্যথা একই রকম থাকে না। কখনও খুব বেশি হয়। আবার মাঝেমাঝে কম থাকে।
গরম পানীয় বা খাবার খেলেও করোনা সংক্রমণের গলাব্যথা অনেক সময় কমতে চায় না। অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ এই ধরনের গলাব্যথাকে জব্দ করতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের কারণে ঠান্ডা লেগে গলাব্যথা হলে গরম পানি বা গরম কোনও পানীয় খেলে অনেক সময় ব্যথা কমে যায়।
অধিকাংশ ভাইরাস নাক-মুখ দিয়ে প্রবেশ করে গলায় কিছুক্ষণ আটকে থাকে। গরম পানি দিয়ে কুলি করলে ভাইরাসগুলো ভেতরে প্রবেশের আগেই প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। অবশ্যই কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। সঙ্গে সামান্য লবণ ব্যবহার করা যেতে পারে।
গলাব্যথা প্রতিরোধে প্রতিদিন কমপক্ষে দুবার দাঁত ব্রাশ করতে হবে। বেশি করতে পারলে আরও ভালো। মেসওয়াক হতে পারে ভালো অভ্যাস। মাউথওয়াশ দিয়ে প্রতিদিন কয়েকবার কুলি করলে গলাব্যথা বা করোনা ভাইরাসের মতো জীবাণুগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
গলা ভেঙে গেলে বা গলার স্বর ভেঙে গেলে অনেকেই অতিরিক্ত গরম পানি পান করেন। এতে ক্ষতি হতে পারে। গরম পানিতে গলা শুকিয়ে আরও বেশি স্বর ভেঙে যেতে পারে। বড় বিষয় এমন সমস্যা দেখা দিলে ধূমপান বা অ্যালকোহল জাতীয় পণ্যগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
গলা ব্যথার সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ওষুধের চেয়েও বেশি প্রয়োজন বাড়িতেই নিজের যত্ন নেওয়া। ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করলেই সহজে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। চলুন জেনে নেয়া যাক-
আদা
গলা ব্যথা থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে আদা। এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য গলা ব্যথা সারাতে সহায়তা করে। পানি গরম করে তাতে কয়েক টুকরো আদা দিন। এটি প্রায় ৫-১০ মিনিটের জন্য ফোটান। দিনে কমপক্ষে দুইবার এই পানি পান করুন। গলা ব্যথা দূর হবে।
আদা ও মধু
আদা ও মধু খারাপ জীবাণু এবং সংক্রমণ ছড়িয়ে দেয়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কাজ করে। আদা একটি পরিচিত মসলা, যা গলা ব্যথার লক্ষণগুলো হ্রাস করতে কার্যকরী। মধু একটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট, যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। আদা ও মধু মিশিয়ে খেলে তা সাইনাসগুলো খুলে দেয়। ফলে শ্লেষ্মা থেকে মুক্তি মেলে এবং গলার ভেতরে খুশখুশে অনুভূতি বা চুলকানি দূর করে।
লেবুর রস
আমাদের শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে লেবু বেশ কার্যকরী। গলা ব্যথা হলে একগ্লাস গরম পানিতে লেবুর রস ও এক চা চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। দিনে অন্তত দুইবার পান করুন। গলা ব্যথা ও টনসিলের সমস্যা দূর হবে দ্রুত।
লবণ-পানির গার্গল
গলা ব্যথার প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে এটি বেশ জনপ্রিয়। একগ্লাস হালকা গরম পানি নিন। এবার তাতে এক চা চামচ লবণ দিয়ে সেটি ভালোভাবে মেশার। এটি গলা ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে সহায়তা করে।
মধু
এককাপ গরম পানিতে এক থেকে দুই চামচ মধু মেশান এবং দিনে দুই থেকে তিনবার পান করুন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক চা চামচ মধু খেতে পারেন। গলা ব্যথা দূর হবে।
হলুদ
অল্প হলুদ গুঁড়া এক গ্লাস গরম পানির সাথে মিশিয়ে নিন। এরপর সকালে খালি পেটে পান করুন। দুধের সাথেও হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন। দারুচিনি কয়েক ফোঁটা দারুচিনি তেলের সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশ্রিত করুন। দিনে একবার এটি ব্যবহার করুন, গলার ব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে সহায়তা করে।
রসুন
রসুন গলা ব্যথা নিরাময়ে সহায়তা করে। রসুনের মধ্যে থাকা অ্যালিসিন গলা ব্যথার কারণ ব্যাকটিরিয়াকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে। এটি কাঁচাও খাওয়া যায় এবং রান্না করেও খাওয়া যায়। তাই গলা ব্যথা হলে রসুন খান।
আপেল সিডার ভিনেগার
অ্যাপল সিডার ভিনেগারে রয়েছে ক্ষারযুক্ত বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি অক্সিমেলেসের প্রধান উপাদান যা কাশি এবং সর্দি নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি গলা ব্যথা উপশম করতে বিশেষভাবে সহায়ক। কারণ অ্যাসিডের উপাদানগুলো খারাপ ব্যাকটিরিয়া ছড়ানোর সংক্রমণটি দূর করতে সহায়তা করে। এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করতে পারেন। বাড়তি স্বাদের জন্য আপনি মধু যোগ করতে পারেন।
Latest
For Advertisement
- প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
-
- গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
-
- হাসিনা রহমান শিপন,
- রাশিকুর রহমান রিফাত
Developed by WebsXplore