Saturday 20 April, 2024

For Advertisement

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে হেলাফেলা নয়

24 May, 2021 5:40:20

যথেষ্ট পরিমাণে ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে। এতে হৃদযন্ত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। অধিক ওজনসম্পন্ন লোকদের উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে

কিছুদিন আগেও আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে একটা ধারণা ছিল, অসংক্রামক রোগ যেমন- হাইপ্রেসার, ডায়াবেটিস, হার্টের অসুখ ইত্যাদি রোগ শুধু উন্নত দেশের মানুষের মধ্যে হয়ে থাকে। কিন্তু সে ধারণা পুরোপুরি ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সারা পৃথিবীর মতো আমাদের দেশেও সংক্রামক রোগগুলো দিন দিন কমে এসেছে এবং অসংক্রামক ব্যাধিগুলোর প্রাদুর্ভাব অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

ADVERTISEMENT

উচ্চ রক্তচাপের সাধারণত কোনো লক্ষণ থাকে না, রোগীর কোনো শারীরিক কষ্ট থাকে না। তাই এই রোগে কেউ ভুগছেন কিনা, সেটা তিনি নিজে বুঝতে পারেন না। যখন উচ্চ রক্তচাপের জটিলতা যেমন- স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, কিডনি নষ্ট হওয়া এর কোনোটি হয়, তখন রোগীর বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই এ রোগ নির্ণয় করাই অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ শারীরিক সমস্যা না থাকায় কেউ নিজের অর্থ ব্যয় করে প্রেসার কেমন আছে, উচ্চ রক্তচাপ আছে কিনা, তা দেখার জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না। আবার যদি কারও উচ্চ রক্তচাপ নির্ণয় হয়, তবে প্রায় অর্ধেক রোগী নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণ করেন না। উচ্চ রক্তচাপ রোগীর ১ থেকে ৩ মাস পরপর কোনো সমস্যা না থাকলেও ফলোআপে আসতে হয়, চেক করতে হয় যে প্রেসার নিয়ন্ত্রণে আছে কি নেই। এ ছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসার পরও ওষুধ সারাজীবনের জন্য খেতে হয়।

লক্ষণ: উচ্চ রক্তচাপের একেবারে সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ সেভাবে প্রকাশ পায় না। তবে সাধারণ কিছু লক্ষণের মধ্যে রয়েছে-
>> প্রচণ্ড মাথাব্যথা করা, মাথা গরম হয়ে যাওয়া এবং মাথা ঘোরানো

>> ঘাড় ব্যথা করা

>> বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
>> অল্পতেই রেগে যাওয়া বা অস্থির হয়ে শরীর কাঁপতে থাকা
>> রাতে ভালো ঘুম না হওয়া

>> মাঝে মধ্যে কানে শব্দ হওয়া

>> অনেক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলা

এসব লক্ষণ দেখা দিলে নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করতে এবং ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।

উচ্চ রক্তচাপের কারণ

>> সাধারণত মানুষের ৪০ বছরের পর থেকে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে থাকে
>> অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা
>> পরিবারে কারও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে
>> নিয়মিত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম না করলে
>> প্রতিদিন ছয় গ্রাম অথবা এক চা চামচের বেশি লবণ খেলে
>> ধূমপান বা মদ্যপান বা অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাদ্য/পানীয় খেলে
>> দীর্ঘদিন ধরে ঘুমের সমস্যা হলে
>> শারীরিক ও মানসিক চাপ থাকলে

কী কী কারণে উচ্চ রক্তচাপ হয়?

৯০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না, একে প্রাইমারি বা এসেনশিয়াল রক্তচাপ বলে। সাধারণত বয়স্ক মানুষের উচ্চ রক্তচাপ বেশি হয়ে থাকে। কিছু কিছু বিষয় উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা বাড়ায়; যেমন উচ্চ রক্তচাপের বংশগত ধারাবাহিকতা আছে, যদি মা-বাবার উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তবে সন্তানেরও এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমনকি নিকটাত্মীয়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকলেও অন্যদের এর ঝুঁকি থাকে।

অধিক ওজন ও জীবনযাত্রা: যথেষ্ট পরিমাণে ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে। এতে হৃদযন্ত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। অধিক ওজনসম্পন্ন লোকদের উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে।

ধূমপান: ধূমপায়ী ব্যক্তির শরীরে তামাকের নানা রকম বিষাক্ত পদার্থের প্রতিক্রিয়ায় উচ্চ রক্তচাপসহ ধমনি, শিরার নানা রকম রোগ ও হৃদরোগ দেখা দিতে পারে।

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ: খাবার লবণে সোডিয়াম থাকে, যা রক্তের জলীয় অংশ বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তের আয়তন ও চাপ বেড়ে যায়।

খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার যেমন- মাংস, মাখন ও ডুবো তেলে ভাজা খাবার খেলে ওজন বাড়ে। ডিমের হলুদ অংশ এবং কলিজা, গুরদা, মগজ এসব খেলে রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হলে রক্তনালির দেয়াল মোটা ও শক্ত হয়ে যায়। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।

ডায়াবেটিস: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিসের রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। এ ছাড়া তাদের অন্ধত্ব ও কিডনির নানা রকম রোগ হতে পারে।

অতিরিক্ত উৎকণ্ঠা: অতিরিক্ত রাগ, উত্তেজনা, ভীতি এবং মানসিক চাপের কারণেও রক্তচাপ সাময়িকভাবে বেড়ে যেতে পারে। যদি এই মানসিক চাপ অব্যাহত থাকে এবং রোগী ক্রমবর্ধমান মানসিক চাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারেন, তবে এই উচ্চ রক্তচাপ স্থায়ী রূপ নিতে পারে।

করণীয়: অতিরিক্ত লবণ খাওয়া বাদ দিতে হবে, রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, সিগারেট ছাড়তে হবে। আর দুশ্চিন্তা যত কম করা যায় ততই ভালো। ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে রাখতে হবে। রক্তের কোলেস্টেরল যাতে না বাড়ে, সে জন্য ডিম, মাখন, পনির, খাসির মাংস, গরুর মাংস এসব থেকে দূরে থাকতে হবে। শরীরে মেদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপও বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাই ওজন কমানো দরকার। আসল যে কাজটি করতে হবে, তা হলো নিয়মিত ওষুধ খাওয়া। আপনি যতদিন বেঁচে থাকবেন, হাইপারটেনশনও আপনার সঙ্গে থাকবে। সুযোগ পেলেই তা আপনাকে আঘাত করবে। নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে এবং চেকআপ করাতে হবে।

For Advertisement

সম্পাদক ও প্রকাশক:- এ এফ এম রিজাউর রহমান (রুমেল), এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট  
  • প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সহযোগী-সম্পাদক:
    • গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
সহ -সম্পাদক:
    • হাসিনা রহমান শিপন,
নিউজ রুম ইনচার্জ :
    রাশিকুর রহমান রিফাত
© সকল স্বত্ব প্রতিচ্ছবি ডটকম ২০১৫ - ২০২২ অফিস: ৭২/২ উত্তর মুগদাপাড়া, ঢাকা ই-মেইল: dailyprotichhobi@gmail.com | মোবাইল: ০১৮১৮০৯৩১৩৭ ফোন:+৮৮০২৭২৭৭১৪৭

Developed by WebsXplore