ইন্টারনেট
হোম / টিপস / বিস্তারিত
ADS

বয়স কম দেখানোর উপায়, জেনে নিন কীভাবে

20 May 2024, 11:09:10

বার্ধক্য কারও নিয়ন্ত্রণে নেই। সুন্দর এই পৃথিবীতে বেশির ভাগ মানুষই দীর্ঘায়ু পেতে চান। দীর্ঘায়ু পেতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ এবং ফিট থাকা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থ ও ফিট থাকতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে তা হলো ডায়েট। বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীতে এমন অনেক কৌশল রয়েছে যা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির জীবনকে দীর্ঘায়িত করে না, বরং প্রকৃত বয়সের চেয়ে কম বয়সী দেখায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই টিপসগুলো অবলম্বন করার পরে, কেউ আপনার সঠিক বয়স অনুমান করতে পারবে না এবং আপনাকে প্রায় ১০ বছর ছোট দেখাবে।

অ্যান্টি এজিং ইনগ্রেডিয়েন্ট (যেমন রেটিনল) বলিরেখা হালকা করতে সাহায্য করবে, কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়াবে। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের সঙ্গে স্কিনকেয়ার রুটিন মেনে চললে ত্বকের ক্ষতি হবে না।

সপ্তাহে একদিন স্ক্রাবিং করে ত্বকের মৃতকোষ তুলে ফেলুন। স্ক্রাব করার সময় মুখ খুব আলতো করে ঘষবেন, না হলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে গোলাপজল দিয়ে মুখ টোনিং করুন, এতে ত্বকে একটা উজ্জ্বল ভাব আসবে। ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং ত্বক টানটান থাকবে।

সানস্ক্রিন নিয়মিত ব্যবহার আর্লি এজিং সাইনস রোধ করা সম্ভব। কেননা বেগুনি রশ্মি ত্বকের ডার্মিস লেয়ারে গিয়ে দীঘস্থায়ী ক্ষতি করতে পারে। প্রিম্যাচিউর এজিং সাইনস যেমন- বলিরেখা, ফাইন লাইনস, শুষ্কতা এ ধরনের সমস্যার জন্য এই বেগুনি রশ্মি দায়ী। এটি ত্বকের উপরিভাগ অর্থাৎ এপিডার্মিস লেয়ারের ক্ষতিসাধন করে। যখনই রোদে বের হবেন সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন, এটা অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচায়। এমনকি দিনের বেলা বাড়িতে থাকার সময়ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না। বাইরে থেকে এসে ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন, এতে মুখের ময়লা দূর হবে। দিনের বেলার জন্য ডে ক্রিম ও রাতের বেলার জন্য নাইট ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন, এতে ত্বক কোমল হবে।

ত্বক ভালো রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো প্রচুর পরিমাণ পানি খাওয়া। তাই সারাদিনে পর্যাপ্ত পানি খাওয়া হচ্ছে কি না, সেদিকে নজর রাখুন। প্রচুর পরিমাণ ফল ও শাকসবজি খান এবং ভাজাভুজি ও বাইরের খাবার এড়িয়ে চলুন।

নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী বাড়িতে সপ্তাহে দুবার কোনো ফেসপ্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

চোখের তলায় কালো দাগ এড়াতে শসা বা আলু ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক ভালো রাখতে ঘুমের বিকল্প নেই। বয়স বাড়লে অনিদ্রার সমস্যা দেখা দেয়। তাই পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। বিষাক্ত ধোঁয়া স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর ত্বকের জন্যও বেশ ক্ষতির কারণ।

চিরতরুণ থাকতে ডায়েটে যোগ করুন এইসব খাবার

খাবারে হাই গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এমন খাবার পাস্তা, হোয়াইট ব্রেড, আলু ইত্যাদি রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। যা শরীরে কোলাজন এবং ইলাসটিনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়, নিউ সেলস টার্নওভারেও বাধা সৃষ্টি করে। আর এ কারণে এজিং সাইনস খুব তাড়াতাড়ি পড়ে।

অ্যামিনো অ্যাসিড- ত্বকের টানটানভাব ধরে রাখে। কোলাজের উৎপাদন বাড়ায়। ত্বকে সহজেই বলিরেখা আসে না। গবেষণাতেও সেই উল্লেখ করা হয়েছে।

ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড – এর মধ্য়ে আছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। যেসব খাবারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তা গ্রহণ করলে ত্বকের জন্য ভালো।

পলি ফেনলস – আপনি যদি পলি ফেনলস গ্রহণ করতে পারেন, তাহলে তা আপনার ত্বককে অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচাবে। এর মধ্য়ে আছে অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস এবং অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। যা আপনার ত্বককে ভালো রাখে।

ভিটামিন ডি, ভিটটামিন ই ও ভিটামিন সি- এই দুই ভিটামিন আপনার ত্বককে ভালো রাখে।

আপনি এই ধরনের ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। তা আপনার ত্বককে ভালো রাখবে। জেনে নিন বয়স কম কমানোর জন্য যেসব খাবার খাবেন-

নিয়মিত পানি পান করুন

প্রতিদিন কম হলেও দুই লিটার পানি পান করুন। মাত্র কিছু দিন নিয়মিত দুই লিটার পানি পান করুন, ত্বকের পরিবর্তন আয়নায় অচিরেই ধরা পড়বে। ওহ, বাড়তি ওজন কমানোর জন্যও পানি পান হতে পারে দারুণ মাধ্যম।

পালং শাক

পুষ্টিগুণে ভরপুর, পালং শাকে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। দ্য ডায়েট ডিটক্সের লেখক ব্রুক অ্যালপার্ট দ্য হেলদি ওয়েবসাই টকে বলেছেন, পালং শাকে পাওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র‌্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। আয়রন ছাড়াও এতে উপস্থিত ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি ত্বকের নতুন কোষ তৈরি করে।

গাজর

গাজর শুধু জীবনকে দীর্ঘায়িত করে না, এটি আপনাকে আকর্ষণীয়ও করে তোলে। ইউনিভার্সিটি অফ গ্লাসগো এবং এক্সেটার দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছ যে, গাজরে উপস্থিত ক্যারোটিনয়েড বার্ধক্য কমায়। গাজরে মজুত ভিটামিন এ ত্বকের কোষকে সুস্থ করে তোলে এবং ত্বককে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস থেকে রক্ষা করে।

ব্রকলি

বার্ধক্যে এক ধরনের ওষুধ হিসেবে কাজ করে ব্রকলি। এই সবজিতে নিকোটিনামাইড মনোনিউক্লিওটাইড রয়েছে যা পেশী, লিভার এবং চোখের জন্য খুব ভাল বলে মনে করা হয়। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, শারীরিক কার্যকলাপ বাড়ায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।

ক্যাপসিকাম

ক্যাপসিকাম অ্যান্টি-এজিং খাবারের মধ্যে একটি। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এই দুটি জিনিসই দীর্ঘায়ুতে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাপসিকামে পাওয়া ক্যারোটিনয়েড, বয়সজনিত রোগ যেমন ছানি এবং ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধে সাহায্য করে

আখরোট

গবেষণায় বলা হয়েছে, নিয়মিত আখরোট খেলে ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কম থাকে। দুটিই এমন রোগ, যার সংঘটনের ঝুঁকি বয়সের সঙ্গে বৃদ্ধি পায়।

সার্ডিন মাছ

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড দীর্ঘায়ুর জন্য সবচেয়ে উপকারী বলে মনে করা হয়। অ্যাকাডেমি অফ নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটিক্সের মতে, এটি হার্ট এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। সার্ডিন মাছ ওমেগা-৩ এবং ভিটামিন বি ১২ সরবরাহ করে। ওমেগা -৩ এবং ভিটামিন বি -১২ উভয়ই দীর্ঘায়ুর জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি হিসাবে বিবেচিত।

অ্যাভোকাডো

অ্যাভোকাডো শুধুমাত্র সুস্বাদুই নয়, এটি পুষ্টিতেও ভরপুর। অ্যাভোকাডোতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট পাওয়া যায়, যা শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। এতে উপস্থিত ভিটামিন এ শরীরকে সংক্রমণ থেকে দূরে রাখে।

ব্লুবেরি

ব্লুবেরি ভিটামিন এ এবং সি এবং অ্যান্থোসায়ানিনের মতো অ্যান্টি-এজিং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, উচ্চ পরিমাণে অ্যান্থোসায়ানিন শরীরকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্যের লক্ষণগুলি কমায়। ব্লুবেরিতে পাওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট, ক্যান্সার এবং নিউরোলজি সংক্রান্ত গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা করে।

চিয়া সিডস

চিয়া সিডস পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বককে রক্ষা করে। চিয়া বীজে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, প্রোটিন এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বার্ধক্যবিরোধী খাবারে চিয়া বীজ অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।

আঙুর

আকারে ছোট চেহারার আঙুর অনেক প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-এজিং উপাদান পাওয়া যায়। আঙুরে ১৬০০ প্রাকৃতিক উদ্ভিদ যৌগ পাওয়া যায়। এছাড়াও, এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পলিফেনল রয়েছে যা, ধীরে ধীরে এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে বার্ধক্য বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, পলিফেনল চোখ, হাড়, লিভার এবং মস্তিষ্ক সুস্থ রাখে।

সাইট্রাস ফল

সাইট্রাস ফল কমলালেবু শুধুমাত্র ভিটামিন সি সমৃদ্ধ নয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টেও রয়েছে। এই উপাদানগুলো শুধু ত্বকের জন্যই ভালো নয়, ক্যান্সার প্রতিরোধে এবং কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

পেঁয়াজ

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধপেঁয়াজ ধমনী জমাট বাঁধা থেকে রক্ষা করে। এর পাশাপাশি পেঁয়াজ শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়।

টমেটো

টমেটো হল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং লাইকোপিনের অন্যতম প্রধান উৎস। এটি খাদ্যনালী, পাকস্থলী এবং কোলন ক্যান্সার থেকে শরীরকে রক্ষা করে। টমেটো তরুণ চেহারা রক্ষায় সহায়ক বলেই যুগ-যুগ ধরে প্রমাণিত।

টক দই

৩৫ বছর পেরোলেই হাড় দুর্বল হতে থাকে। বাত বা অস্টিওপরোসিসের মতো সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা রোধে সব থেকে দরকারী উপাদান হলো ক্যালসিয়াম। কারণ, বাত বা অস্টিওপরোসিসের মতো সমস্যায় শরীরে বুড়োটে ছাপ পড়ে যায়। হাড় সুস্থ রাখতে তাই প্রতিদিন ডায়েটে রাখুন এক বাটি টক দই। টক দইয়ের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম।

বাদাম

শরীর ও ত্বকের স্বাস্থ্যের পক্ষে বাদাম খুবই উপকারী একটি উপাদান। বাদামের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ভিটামিন, খনিজ, ফাইটোকেমিক্যাল ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে। তাই প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠে তিন-চারটে আমন্ড বা কাজু বা বিকেলে এক মুঠো চিনে বাদাম খেতে পারলে তা আপনার বয়স বাড়ার গতি কমিয়ে দিতে পারে। এ ছাড়াও বাদাম বেটে ফেশিয়াল বা বাদাম তেল দিয়ে চুলে ম্যাসাজ করলে ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

চকোলেট

প্রতিদিন ডায়েটে চকোলেট, কোকো বা ওই জাতীয় কিছু খেতে পারলে উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা এমনকি ডিমেনশিয়ার মতো অসুখ থেকে নিজেকে দূরে রাখা সম্ভব হবে। শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে চকোলেট।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: