For Advertisement
শিগগিরই আইপি টিভি চালু করতে যাচ্ছে বিটিসিএল
একটা সময় দুর্বলতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত বিটিসিএলকে (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড) প্রতি বছরই গুনতে হতো বড় অঙ্কের লোকসান। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার প্রচেষ্টা আর গতিশীল নেতৃত্বে সেই কোম্পানিতেই এখন ধীরে ধীরে ফিরছে সুদিন। চমকপ্রদ সেবা আর আয়বর্ধক বেশ কিছু প্রকল্পও হাতে নেয়া রাষ্ট্রায়ত্ব কোম্পানি বিটিসিএল এখন লাভজনক বলেও বলেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
চলতি বছরের শুরুতে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. রফিকুল মতিন নতুন নতুন সেবা নিয়ে আসার কথা বলেছিলেন আমার সংবাদকে। যে সেবার মাধ্যমে কোম্পানিটিতে ইতোমধ্যে আট লাখ গ্রাহকও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আমার সংবাদকে গতকাল জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও এ সেবার মাধ্যমে বছরে ২০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা প্রকাশ করে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘এ সেবা বিটিসিএলের আয় বাড়াবে’। শিগগিরই আইপি টিভিও চালু করতে যাচ্ছে বিটিসিএল— এমনটাও জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল আমার সংবাদকে বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘নতুন নতুন সেবা আমাদের আসছেই। হাওর-বাঁওড়ের ইউনিয়নগুলোতেও গড়ে আটটি করে ওয়াইফাই প্রজেক্ট আমরা করবো, যা বর্তমানে চলমান রয়েছে। প্রায় তিন শতাধিক হাওর-বাঁওড় এলাকায় এই প্রজেক্টের কাজে আগামী দু-এক সপ্তাহের মধ্যেই টেন্ডারেও যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ড. রফিকুল মতিন বলেন, ‘জিপন সেবাও আমরা বিভিন্ন জায়গায় শুরু করেছি। ঢাকার বাইরেও শুরু করছি। রাজশাহী, ময়মনসিংহ, বরিশাল, পটুয়াখালী, ফরিদপুর, পাবনা, রংপুর ও দিনাজপুরেও জিপন সেবা শুরু করেছি। আর এসব সেবা শুরু করাতে বিটিসিএলের গ্রাহকসেবা প্রতিনিয়তই বাড়ছেই বলে বলছেন তিনি। এ ছাড়াও কোম্পানিটির সুদিন ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে আয়বর্ধক বেশ কিছু প্রকল্প। যার মধ্যে অন্যতম বিনামূল্যে টেলিফোন সংযোগ প্রদান, মাসিক বিল (ভাড়া) উঠিয়ে প্যাকেজ বিল অফার, উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা, অর্থনৈতিক জোনে ইন্টারনেটভিত্তিক অবকাঠামো তৈরি, টাওয়ার শেয়ারিং ও ওটিটি (ওভার দ্য টপ) অ্যাপ চালু ইত্যাদি।
এদিকে ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিটিসিএল তার গ্রাহকদের সংযোগ দেয় বিনামূল্যে এবং ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ল্যান্ডফোনে বিনামূল্যে সংযোগ দেয়া শুরু হওয়ায় চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে বলেও জানা গেছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত এর সংখ্যা ৩২ হাজারেরও বেশি। এছাড়া কমানো হয়েছে ফোনের বিলও। ১৫০ টাকায় সারা মাস বিটিসিএল টু বিটিসিএলে এখন কলও করা যাচ্ছে আনলিমিটেড। ডিমান্ড নোট ছাড়াই পাওয়া যাচ্ছে ল্যান্ডফোন। যা অনেকের কাছেই বিস্ময়কর বলে মন্তব্য করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। শুধু তাই নয়, দেশের পাঁচটি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলে (মৌলভীবাজারের শ্রীহট্ট, টেকনাফের সাবরাং ও নাফ, মহেশখালীর সোনাদিয়া এবং জামালপুর) ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে উচ্চক্ষমতার টেলিযোগাযোগ সুবিধাও (ভয়েস কল, ইন্টারনেট, ডেটা ইত্যাদি) দেবে বিটিসিএল। এই পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে উচ্চগতির নিরবছিন্ন টেলিযোগাযোগ সুবিধাও নিশ্চিত করা হবে বলে জানা গেছে। এগুলো হবে ফাইভ-জি এনাবল নেটওয়ার্ক। প্রতিটি অর্থনৈতিক জোনেই তৈরি করা হবে একটি করে টেলিকম ভবনও। গিগাবাইট প্যাসিভ অপটিক্যাল নেটওয়ার্ক (জিপন) প্রযুক্তি এবং মডার্নাইজেশন অব টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের (এমটিএন) মাধ্যমে বিটিসিএল ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে। এই দুটি প্রযুক্তিতে এখন প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টি করে সংযোগ দেয়া হচ্ছে। দ্রুতগতির ইন্টারনেটের কারণে গ্রাহকদের এসব সেবার প্রতি আগ্রহও বেশি বলে জানা গেছে বিটিসিএল সূত্রে। জানা গেছে, সারা দেশে বিটিসিএলের রয়েছে সাড়ে পাঁচ শতাধিক টাওয়ার। এসব টাওয়ার বিভিন্ন টেলিকম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবে বিটিসিএল। এটি কোম্পানিটির আয়বর্ধক প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম একটি। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি পারমিটও পেয়েছে। যদিও বিটিসিএল নতুন করে কোনো টাওয়ার নির্মাণ করতে পারবে না। বিদ্যমান টাওয়ারগুলোর সক্ষমতাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবে। বিভিন্ন ধরনের ট্রান্সমিশনের জন্যও টাওয়ারগুলো সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ব্যবহার করে। ভবিষ্যতে টেলিটক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব টাওয়ার ব্যবহার করতে পারবে বলে জানা গেছে।
এদিকে আগে নিষ্ক্রিয় থাকা গ্রাহকের সংখ্যাও কমিয়ে এনেছে বিটিসিএল। যাদের বছরের পরে বছর কোম্পানিটিকে টানতে হয়েছে। নিষ্ক্রিয় সেইসব নম্বরগুলো বন্ধ করে দেয়ায় বিটিসিএলের যা আয় হয়, তার থেকে খরচ বাদ দিলেও এখন টাকা থেকে যায় বলে জানিয়েছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল মতিন। কিন্তু সমস্যা করে ডেপ্রিসিয়েশন (অবচয়) খরচ। এর পরিমাণ বছরে ৪৫০ কোটি টাকা। এর প্রকৃত পরিমাণ বোঝার জন্য বিটিসিএল শিগগিরই দুটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানও নিয়োগ দিতে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠান দুটি প্রকৃত চিত্র দেখাতে পারবে এবং অবচয়ও কমে যাবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘বিটিসিএলের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি অনেক বেশি হওয়ায় গ্রাহকেরও আগ্রহ বেশি। যে কারণে এ খাতও এখন ভালো করছে।’ জানা গেছে, ২০১১ সালের পর থেকে বিটিসিএলের ল্যান্ড ফোনের চাহিদা কমতে থাকে। ২০১৮ সালের পর গ্রাহক সংখ্যা সাড়ে চার লাখ থেকে পাঁচ লাখের মধ্যে ওঠা-নামা করছিল। ২০১৮ সাল থেকে আবার তা বাড়তে শুরু করে। যা বর্তমানে চার লাখ ৯০ হাজার। বিটিসিএল বলছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ল্যান্ডফোন ছিলো পাঁচ লাখ ৯৫ হাজার ৪৭৭। ২০১১ সালেও সারা দেশে ১০ লাখের মতো গ্রাহক ছিলো। ১০ বছরে পাঁচ লাখ ১০ হাজারের মতো গ্রাহক হারালেও নতুন নতুন উদ্ভাবনী সেবার কারণেই আবারো গ্রাহক ফিরতে শুরু করেছে বিটিসিএলে । -আমার সংবাদ
Latest
For Advertisement
- প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
-
- গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
-
- হাসিনা রহমান শিপন,
- রাশিকুর রহমান রিফাত
Developed by WebsXplore