ইন্টারনেট
হোম / Breaking News, খেলাধুলা / বিস্তারিত
ADS

বাংলাদেশকে লজ্জায় ডোবালো ডাচরা

28 October 2023, 10:50:00

বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে বাংলাদেশকে রানে ৮৭ রানে হারিয়ে লজ্জায় ডোবালো নেদারল্যান্ডস। নেদারল্যান্ডসের দেওয়া ২৩০ রানের লক্ষে ব্যাটিং করতে নেমে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ৪২ ওভার খেলেই মাত্র ১৪২ রানেই অল আউট হয়েছে বাংলাদেশ। আর নেদারল্যান্ডস তুলে নিয়েছে ৮৭ রানের জয়। এর হারের ফলে টানা পাঁচ ম্যাচে হারলো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের বোলিং তোপে মাত্র ২২৯ রানেই অল আউট হয় ডাচরা। সহজ লক্ষ তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। মাত্র ১৯ রানেই ২ ওপেনারতে হারায় বাংলাদেশ। পুরো বিশ্বকাপজুড়ে ব্যর্থ বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। ১৯, ১৪, ০, ৯৩, ১০, ১৯ এই হলো ছয় ম্যাচে বাংলাদেশেরর ওপেনিং জুটির রান। আজ ওপেনিং জুটির পর ব্যর্থ মিডল অর্ডারও। যার ফলে মাত্র ৭০ রানেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৭০ রনে ৬ উইকেট পড়ে যাওযার পর আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শেখ মেহেদিকে নিয়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যর্থ হন। ১১৩ রানে ৮ উইকেট হারানো বাংলাদেশের ইনিংস শেষ পর্যন্ত ১৪২ রানে থামে তাসকিন আহমেদের ১১ ও মুস্তাফিজের ২০ রানে ভর করে।

কলকাতার বিখ্যাত ইডেন গার্ডেনসে ডাচদের দেওয়া ২৩০ রানের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানিজিদ হাসান তামিম শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলছিলেন। ৪ ওভারে নিয়েছেন মাত্র ১৯ রান।

কিন্তু এর পরের দুই ওভারেই ঘটলো ছন্দপতন। পরেই দুই ওভারেই ফিরে গেলেন দুই ওপেনার। আজ ডাচদের বিপক্ষে মাত্র ৩ রান করে ফিরে গেলেন লিটন দাস। ১২ বলে ৩ রান করা লিটন আরিয়ান দত্তের শিকার হয়ে ফিরে গেলেন সাজঘরে। তার বিদায়ে ১৯ রানেই ভাঙে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি।

লিটনের বিদায়ের পরের ওভারেই ফিরে গেলেন তানজিদ তামিমও। ১৬ বলে ১৫ রান করে লোগান ফন বেকের শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি। তামিমের বিদায়ে ১৯ রানেই ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

১৯ রানে ২ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর জুটি গড়েন মিরাজ ও শান্ত। কিন্তু এই জুটিও বেশিদূর যেতে পারেনি। দলীয় ৪৫ রানে শান্তর বিদায়ে ভেঙে যায় এই জুটি।

১৮ বলে ৯ রান করা শান্ত পল ফন মিকারেনের বলে সেকেন্ড স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে।

শান্তর পথ ধরে ফিরে যান সাকিব,মিরাজ ও মুশফিক। অভিজ্ঞ সাকিব মুশফিক আজ পৌঁছাতে পারেনি দুই অঙ্কের ঘরে।

আাগর ম্যাচের মতো ব্যাট হাতে আজ ব্যর্থ সাকিব। নিজের রানের খরা কাটাতে নেদারল্যান্ডসের ম্যাচের আগে ঢাকা এসে নিজের শৈশবের কোচের কাছে পরামর্শও নিয়েছিলেন। তবু আজ রানের দেখা পেলেন না তিনি। ১৪ বলে মাত্র ৫ রান করে পল ফন মিকারেনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে যান সাজঘরে।

সাকিবের পথ ধরে ফিরে যান মিরাজও। সবার মাঝে তিনিই আজ ব্যতিক্রম ছিলেন। একপ্রান্ত আগলে রেখে রান তুলছিলেন। কিন্তু সাকিবের পথ ধরে তিনিও ফিরে যান সাজঘরে।

৪০ বলে ৩৫ রান করা মিরাজ বাস ডি লিডির শিকার হয়ে পথ ধরেন প্যাভিলিয়নের। মিরাজের বিদায়ের পরের ওভারেই ফিরে যান ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ মুশফিক। ৫ বল খেলে মাত্র ১ রান করে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে মাত্র ৭০ রানেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

৭০ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর মেখ মেহেদি হাসানকে নিয়ে জুটি গড়নে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই জুটিতে ভর করে ২৭ ওভার ৩ বলে দলীয় শতক পার করে বাংলাদেশ।

কিন্তু এই জুটিও বেশিদূর আগাতে পারেনি। দলীয় ১০৮ রানে মেহেদির বিদায়ে ভেঙে যায় এই জুটি। ৩৮ বলে ১৭ রান করা মেহেদি রান আউটের শিকার হয়ে ফিরে যান সাজঘরে।

শেখ মেহেদির বিদায়ের পর বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাস ডি লিডির বলে মিড উইকেটে আরিয়ান দত্তের হাতে ক্যাচ তুরে দিয়ে পথ ধরেন প্যাভিলিয়নের। আউট হওয়ার আগে করেন ৪১ বলে ২০ রান।

১১৩ রানে ৮ন উইকেট পড়ে যাওযার পর তাসকিন ও মুস্তাফিজ জুটি গড়নে। শেষ পর্যন্ত ১১ ও মুস্তাফিজের ২০ রানে ভর করে ৪২ ওভার ২ বল খেলে সব উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান করে বাংলাদেশ। যার ফলে ৮৭ রানের জয় পায় ডাচরা।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আজ মাত্র ৪ রানেই ২ উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। তাসকিন এবং শরিফুল জোড়া আঘাতে ফেরান দুই ওপেনারকে। ৪ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন ওয়েসলি বারেসি ও কলিন অ্যাকারম্যান। তবে সাকিব এবং মোস্তাফিজ জোড়া আঘাতে ফেরান এই দুই জনকে। যার ফলে ৬৩ রানেই ৪ উইকেট হারায় ডাচরা। এরপর দলের হাল ধরেন স্কট এডওয়ার্ডস ও বাস ডি লিডি। তবে এই জুটিও বেশিদূর যেতে পারেনি। দলীয় ১০৭ রানে ৫ উইকেট হারানো ডাচদের হাল ধরেন সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট ও স্কট এডওয়ার্ডস। এই জুটির ৭৮ রানে ভর করে শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২২৯ রান তুলে নেদারল্যান্ডস। স্কট এডওয়ার্ডস আজ তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক।

নেদারল্যান্ডসের হয়ে ওপেনিংয়ে নামা ম্যাক্স ও’ডাউড ও বিক্রমজিৎ সিং নিজেদের ওপেনিং জুটিকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারলেন না। ৯ বলে ৩ রান করা বিক্রমজিৎ সিং দুই ম্যাচ পর খেলতে নামা তাসকিনের বলে অধিনায়ক সাকিবের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ে তিন রানেই ভাঙে ডাচদের ওপেনিং জুটি। তাসকিনের পর ডাচ শিবিরে আঘাত হানেন আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম। তাসকিনের পর তিনি ফেরালেন আরেক ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউডকে। ৩ বলে শূন্য রান করা ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড শরিফুলের বলে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন। স্লিপে দাঁড়ানো তানজিদ হাসান তামিম ক্যাচটি তালুবন্দি করে নেন। ম্যাক্স ও’ডাউডের বিদায়ে মাত্র ৪ রানেই ২ উইকেট হারায় ডাচরা। ৪ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন ওয়েসলি বারেসি ও কলিন অ্যাকারম্যান। এই জুটিতে ভর করে ঘুরে দাঁড়াতে থাকে ডাচরা। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজ। ৪১ বলে ৪১ রান করা ওয়েসলি বারেসি মোস্তাফিজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাকিবের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। তার বিদায়ে ৫৯ রানে ভেঙে যায় এই জুটি।

ওয়েসলি বারেসির বিদায়ের পরের ওভারেই কলিন অ্যাকারম্যানকে ফেরান সাকিব। সাকিবের বলে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে দেন কলিন অ্যাকারম্যান। শর্ট ফাইন লেগে দাঁড়ানো মোস্তাফিজ ক্যাচটি তালুবন্দি করে নেন। যার ফলে ৩৩ বলে ১৫ রান করা কলিন অ্যাকারম্যানকে পথ ধরতে হয় প্যাভিলিয়নে। তার বিদায়ে ৬৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে ডাচরা। ৬৩ রান ৪ উইকেট হারানোর পর দলকে বিপর্যয় থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন স্কট এডওয়ার্ডস ও বাস ডি লিডি। এই জুটিতে ভর করে ২৫ ওভারে দলীয় শতক পার করে ডাচরা।

অবশেষে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ। ৩২ বলে ১৭ রান করা বাস ডি লিডি দলীয় ১০৭ রানে তাসকিন আহমেদের শিকারে হয়ে ফিরে যান সাজঘরে। বাস ডি লিডির বিদায়ের পর সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটের সঙ্গে জুটি বাঁধেন স্কট এডওয়ার্ডস। এই জুটিতে ভর করে দলের বিপর্যয় কাটিয়ে উঠছিলো নেদারল্যান্ডস। এরই মাঝে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। ৭৮ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন তিনি।

ক্রমে বাংলাদেশের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠছিল এই জুটি। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। মোস্তাফিজের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান স্কট এডওয়ার্ডস। আউট হওয়ার আগে করেন ৮৯ বলে ৬৮ রান। তার বিদায়ে ভাঙে ৭৮ রানের জুটি।

এডওয়ার্ডসের বিদায়ের পরের ওভারেই সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখটে ফেরান শেখ মেহেদি হাসান। মেহেদির বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান তিনি। আউট হওয়ার আগে করেন ৬১ বলে ৩৫ রান। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২২৯ করে নেদারল্যান্ডস।

বাংলাদেশের হয়ে শরিফুল ইসলাম ২টি, তাসকিন আহমেদ ২টি, মোস্তাফিজ ২টি, শেখ মেহেদী হাসান ২টি উেইকেট নেন।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: