ইন্টারনেট
হোম / Breaking News, খেলাধুলা / বিস্তারিত
ADS

মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির পরও ১৪৯ রানে হার বাংলাদেশের

24 October 2023, 10:42:01

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের নবম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি এখন মাহমুদউল্লাহ ও মোস্তাফিজের। আগের সর্বোচ্চ জুটিতেও ছিলেন মাহমুদউল্লাহ, ২০১১ সালে ইংল্যান্ডকে হারানো ম্যাচে শফিউল ইসলামকে নিয়ে তিনি যোগ করেছিলেন ৫৮ রান।

১১টি চারে ১১১ বলে ১১১। মাহমুদউল্লাহ থামলেন তাতেই। কোয়েৎজির বলে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরার পথে দক্ষিণ আফ্রিকানদের অভিনন্দনও পেয়েছেন। একা হাতে লড়াই যেটিকে বলে, আজ সেটিই করেছেন তিনি।

রাবাদার বলে লেগ সাইডে খেলে ডাবলস। মাহমুদউল্লাহ ৯৯। এরপর শর্ট বলে ফাইন লেগে খেলে সিঙ্গেলে মাহমুদউল্লাহ পেয়েছেন সেঞ্চুরি! উদ্‌যাপনে লাফ দিয়েছেন, এরপর আঙুল দিয়ে ইশারা করেছেন ওপরের দিকে। এরপর দিয়েছেন সিজদা।

বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিটি পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে টানা দুই ম্যাচে ১০০ পেরিয়েছিলেন।। মাহমুদউল্লাহর পরের সেঞ্চুরিটি ছিল চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। ২০১৭ সাল কার্ডিফে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওই সেঞ্চুরিই ছিল মাহমুদউল্লাহর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সর্বশেষ।

অথচ বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপের দলেও ছিলেন না তিনি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে দলে ফেরানো হয়। এরপর বিশ্বকাপ দলেও জায়গা পান।

আগের দুই ম্যাচে লড়াই করলেও ইনিংস বড় করার সুযোগ পাননি সেভাবে। আজ ছয়ে এসেছিলেন। দলের অবস্থা সুবিধার ছিল না মোটেও। এখনো যে আছে, তা নয়। তবে লড়াইটা চালিয়ে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। এমন দিনে ব্যক্তিগত অর্জনই হতে পারে সান্ত্বনা!

কোয়েৎজিকে টেনে এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে ছক্কা। শতক থেকে এক শট দূরে তাতেই গেছেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক রেখেছেন নিজের কাছে। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ৯৭ রানে।

কোয়েৎজির প্রথম বলে চার, এরপর ডাবলস, এরপর নো বল। তবে ফ্রি হিটে চাইলেও স্ট্রাইক ধরে রাখতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। মোস্তাফিজ অবশ্য ৪২তম ওভারের বাকিটা নিরাপদেই কাটিয়ে দিয়েছেন। সেঞ্চুরি থেকে ১২ রান দূরে মাহমুদউল্লাহ।

মার্কো ইয়ানসেনের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের স্লোয়ার। মিড অফে ক্যাচ উঠেছিল। পেছনের দিকে গিয়ে মাথার ওপরে হাতে নিতে পারলেও রাখতে পারেননি উইলিয়ামস। ৭৩ রানে জীবন পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। এ ম্যাচে এখন রোমাঞ্চের বিষয় হতে পারে একটিই—১০০ পাবেন মাহমুদউল্লাহ?

৮.১ ওভার এ জুটি হতাশ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। অবশেষে হাসান মাহমুদ ক্যাচ তুললেন কাগিসো রাবাদার বলে। বাংলাদেশের বাকি ২ উইকেট।

৬৭ বলে ৫০*। ৩৫তম ওভারের খেলা চলছে। ছয় নম্বর ব্যাটসম্যানের জন্য আদর্শ ইনিংস হতে পারত। কিন্তু এটি রান তাড়া। লক্ষ্য ৩৮৩ রান। মাহমুদউল্লাহর ইনিংস দক্ষিণ আফ্রিকাকে শুধু অপেক্ষাতেই রাখতে পারছে।

তা যাই হোক, শেষ পর্যন্ত আরেকটি ফিফটি তো। গত ডিসেম্বরের পর ওয়ানডেতে যা প্রথম মাহমুদউল্লাহর। ক্যারিয়ারে ২৮তম।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলেননি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আট, ভারতের বিপক্ষে নেমেছিলেন সাত নম্বরে।

১৭৫ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে নেমে খেলেছিলেন ৪৯ বলে অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংস। বাংলাদেশ তাতে ২০০ পেরিয়ে গিয়েছিল ২৫০-এর কাছাকাছি। ভারতের বিপক্ষেও নেমেছিলেন ১৭৯ রানে ৫ উইকেট যাওয়ার পর। এবার ৩৬ বলে ৪৬ রান। বাংলাদেশ পেরিয়েছিল ২৫০।

দুটি ম্যাচেই মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশকে একটু লড়াইয়ে রেখেছিলেন, সেটি বলাই যায়। কিন্তু যথেষ্ট হয়নি তা। দুবারই নিচের দিকে সঙ্গীহীনতায় ভুগতে হয়েছে তাঁকে।

আজ মাহমুদউল্লাহকে পাঠানো হয় ছয়ে। যদিও আজ নেমেছেন ৪২ রানেই ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর। ৩৮৩ রানের লক্ষ্যে এরপর ছয় নম্বর ব্যাটসম্যানের খুব বেশি কিছু থাকার কথা নয়। মাহমুদউল্লাহ অবশ্য তাঁর ধাঁচেই খেলে যাচ্ছেন। ৫৯ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত তিনি এখন পর্যন্ত।

নির্ধারিত সময়ের ২ সেকেন্ড বাকি থাকতে রিভিউ নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগে কাছাকাছি একটি রিভিউ ব্যর্থ হয়েছিল তাদের। এবারও সেটিই হলো। আবার মহারাজের বোলিং। আবার আম্পায়ার আহসান রাজা। আবার বল ট্র্যাকিং দেখিয়েছে, সেটি পড়েছে লেগ স্টাম্পের বাইরেই।

জেরাল্ড কোয়েৎজির আরেকটি শর্ট বলে এল আরেকটি উইকেট। নাসুম আহমেদ তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন কোয়েৎজির হাতেই। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে নাসুমের সপ্তম উইকেট জুটিতে উঠেছে ৩৯ বলে ৪১ রান। ইনিংসে সেটিই সর্বোচ্চ এখন পর্যন্ত।

কোয়েৎজির বাউন্সারে মাথায় আঘাত পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। স্বাভাবিকভাবেই নিয়ম অনুযায়ী কনকাশন পরীক্ষার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। সে বলে আবার রিভিউ নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে হেলমেটের আগে ব্যাটের সঙ্গে কোনো সংযোগ ঘটেনি বলের। দক্ষিণ আফ্রিকা রিভিউ হারিয়েছে। মাহমুদউল্লাহও ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত হয়েছেন।

পরের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে কাভার দিয়ে চার মেরেছেন মাহমুদউল্লাহ। সে বাউন্ডারিতে বাংলাদেশ পেরিয়েছে ১০০। সেটি কতটা সান্ত্বনা জোগাবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে অবশ্য।

মহারাজের বলে এলবিডব্লু হাত থেকে বেঁচেছিলেন মিরাজ। স্লগ সুইপ করে এবার আর বাঁচলেন না। বদলি ফিল্ডার আন্দিলে ফিকোয়াওয়ের হাতে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েছেন তিনি। ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশের। হাইনরিখ ক্লাসেনের স্কোর ছুঁতে এখনো ৯ রান দরকার। কুইন্টন ডি ককের স্কোর ৯৩ রান দূরে।

বল প্যাডে লাগার পর থেকেই মাথা ঝাঁকাচ্ছিলেন মিরাজ। আম্পায়ার আহসান রাজা অবশ্য আউট দেন ঠিকই। মিরাজ রিভিউ করেন সেটি। বেঁচেও গেলেন। সূক্ষ্ণ ব্যবধানে কেশব মহারাজের বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরে পড়েছে—হকআই দেখিয়েছে এমন। মিরাজ অক্ষত।

দুজনের ব্যাটিং পজিশন নিয়েই এর আগে কথা হয়েছে। মাহমুদউল্লাহকে ওপরে খেলানো যায় কি না, মিরাজকে ওপরে কেন খেলানো হচ্ছে কি না।

আজ মাহমুদউল্লাহ নেমেছেন ছয় নম্বরে। এবারের বিশ্বকাপে এত ওপরে এর আগের ৩ ইনিংসে ব্যাটিং করেননি তিনি। মিরাজ এসেছেন সাত নম্বরে। এবারের বিশ্বকাপে এত নিচে খেলেননি তিনি এর আগে।

তবে দুজনই এখন জুটি গড়ার চেষ্টায়। এবং এমন একটা সময়ে দুজন একসঙ্গে ব্যাটিং করছেন, যখন জয়ের কথা ভাবনায় আনার সাহসটাও হয়ত করতে পারছেন না তাঁরা!

দলের স্কোর যে ৫ উইকেটে ৬৪ রান, ১৮ ওভারশেষে। লক্ষ্য? ৩৮৩।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: