Saturday 20 April, 2024

For Advertisement

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে ইসলাম

11 September, 2022 12:05:45

মানবজীবন পরিচালনার পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা হলো ইসলাম। জীবন ও সমাজের এমন কোনো দিক নেই, যে বিষয়ে ইসলাম সুস্পষ্ট নীতিমালা উপস্থাপন করেনি।

কৃষক-মজুর, কুলি-মালি, অফিসার-প্রফেসর, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-গরিব সবার জন্য ইসলামের রয়েছে ভারসম্যপূর্ণ সুনিপুণ জীবনপদ্ধতি।

রাসূল (সা.) তার দীর্ঘ ২৩ বছরের নবুওয়াতি জীবনে ওহির শিক্ষার আলোকে এ জীবন পদ্ধতির বাস্তব উদাহরণ পেশ করে গেছেন। ভোক্তা অধিকার রক্ষায় তাঁর সুস্পষ্ট ঘোষণা ‘মুসলমান ভাই ভাই। কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে, সে তার ভাইকে না জানিয়ে তার কাছে ত্রুটিযুক্ত কোনো কিছু বিক্রি করবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)।

ইসলামি আইনে পণ্য সম্পর্কিত সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য ভোক্তাকে অবগত করা ওয়াজিব। পণ্যের ত্রুটি গোপন রাখা মহাঅপরাধ। পণ্যের যথাযথ দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করে বিক্রি না করলে ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণার কারণে বিক্রেতা প্রতারক সাব্যস্ত হবে এবং প্রতারণার গোনাহের কারণে কেয়ামতের দিন কঠিন আজাবের মুখোমুখি হবে। আল্লাহর রাসূল (সা.) প্রতারকদের উম্মত থেকে বের করে দিয়েছেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসূল (সা.) একটি খাদ্য স্তূপের পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে স্তূপের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে তা ভেজা দেখতে পেলেন। তখন পণ্যের মালিককে প্রশ্ন করলেন কী ব্যাপার? সে জবাব দিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! বৃষ্টিতে ভিজে গেছে।

রাসূল (সা.) বললেন, তা হলে তা তুমি গোপন করলে কেন? ওপরে রাখতে পারলে না? যেন ক্রেতারা দেখে-শুনে নিতে পারে? মনে রাখবে, যারা প্রতারণা করে তারা আমার উম্মত নয়।’ (রিয়াদুস সালেহিন)।

ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে মজুতদারিকে ইসলামে কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মজুতদারকে পাপিষ্ঠ বলে ঘোষণা করেছেন রাসূল (সা.)। মুসলিম শরিফের হাদিস-নবিজি (সা.) বলেন, ‘পাপিষ্ঠ ব্যক্তি ছাড়া কেউ মজুতদারি করে না। হানাফি মাজহাবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুত করা মাকরুহ তাহরিমি (হারাম পর্যায়ের)। অন্যান্য মাজহাবে এটি হারাম। কেননা এর ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায় এবং বহু মানুষ দুর্ভোগে পতিত হয়। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ৪০ দিন খাদ্যদ্রব্য মূল্যবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে গুদামজাত করে রাখবে, সে আল্লাহর হেফাজত থেকে বেরিয়ে যাবে। আর আল্লাহ তাঁর ওপর থেকে তাঁর দায়িত্ব তুলে নেবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)।

সাধারণ ভোক্তাদের কষ্ট দিয়ে কেউ সাময়িক সম্পদশালী হয়ে গেলেও কোনো লাভ নেই। এ সম্পদে তার জন্য দুনিয়ায়ই কাল হয়ে দাঁড়াবে। ডেকে নিয়ে আসবে বহু রকমের বিপর্যয়। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘কেউ যদি খাদ্য গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, আল্লাহতায়ালা তাকে দুরারোগ্য ব্যাধি ও দারিদ্র্য দ্বারা শাস্তি দেবেন।’ (ইবনে মাজাহ ২১৫৫)।

একজন ভোক্তার প্রধানতম অধিকার সঠিক ওজনে পণ্য বুঝে নেওয়া। যে ওজনে কম দেয় সে মহান রবের দৃষ্টিতে অভিশপ্ত। আল্লাহ তাকে ঘৃণা করেন। এমন হারাম ভক্ষণকারীদের থেকে দূরে থাকতে আল্লাহ নির্দেশ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা মাপে পূর্ণমাত্রায় দেবে, যারা মাপে কম দেয় তোমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না এবং সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওজন করো। এবং মানুষকে তাদের বস্তু কম দিয়ো না।’ (সূরা : শুআরা, আয়াত : ১৮১-১৮৩)।

মানবতার কল্যাণে ইসলামের আবির্ভাব। মানবতার শান্তি ও মুক্তিই ইসলাম। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হলো নিজ নিজ জায়গা থেকে-ভোক্তা অধিকারের প্রতি সতর্ক থাকা। ভোক্তার মৌলিক চাহিদা পূরণ যেমন-খাদ্য, পানীয়, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার প্রতি সর্বাবস্থায় সজাগ ও সচেতন থাকা ইমানদারে মৌলিক দায়িত্বও বটে।

For Advertisement

সম্পাদক ও প্রকাশক:- এ এফ এম রিজাউর রহমান (রুমেল), এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট  
  • প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সহযোগী-সম্পাদক:
    • গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
সহ -সম্পাদক:
    • হাসিনা রহমান শিপন,
নিউজ রুম ইনচার্জ :
    রাশিকুর রহমান রিফাত
© সকল স্বত্ব প্রতিচ্ছবি ডটকম ২০১৫ - ২০২২ অফিস: ৭২/২ উত্তর মুগদাপাড়া, ঢাকা ই-মেইল: dailyprotichhobi@gmail.com | মোবাইল: ০১৮১৮০৯৩১৩৭ ফোন:+৮৮০২৭২৭৭১৪৭

Developed by WebsXplore