ইন্টারনেট
হোম / প্রবাস / বিস্তারিত
ADS

জর্ডানে আটকা ১২ বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চান

8 February 2023, 7:03:28

মানিকগঞ্জের মেয়ে সালমা আক্তার। ২০১২ সালে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য গার্মেন্টেসের কাজে জর্ডানে পাড়ি জমান। ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত একটি কোম্পানিতে বৈধভাবে চাকরি করেন। এর পরে আর ভিসার মেয়াদ বাড়েনি। তার পরেও ন্যূনতম বেতনে সেই কোম্পানিতে কাজ করে যান। কিন্তু গত কয়েক মাস বেতনভাতা না পাওয়ায় এবার ফিরতে চান বাংলাদেশে। কিন্তু সেটিও সম্ভব হচ্ছে না। কারণ কোম্পানি ও বাংলাদেশ দূতাবাসের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না তারা। এতে অসহায় ও মানবেতর জীবন পার করছেন তারা।

জানা গেছে, ভিসা ছাড়া অবস্থান করায় গত চার বছরের ট্যাক্স পরিশোধ করে তাদের বাংলাদেশে ফিরতে হবে। কিন্তু কোম্পানি তাদের সে ট্যাক্স পরিশোধ করতে রাজি নয়। অন্যদিকে তাদেরও সে ট্যাক্স পরিশোধ করার সামর্থ্য নেই। এই চার বছর অল্প বেতন দিলেও এখন প্রায় দুই মাস ধরে বেতন বন্ধ। অন্যদিকে তাদের ভিসার মেয়াদ নেই। যে কারণে পুলিশের গ্রেফতারের ভয়ে বাসার বাইরেও যেতে পারছেন না। শুধু সালমা আক্তার নন, এমন ১২ জন বাংলাদেশি আটকা পড়েছেন সেই কোম্পানিতে।

সালমা আক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লাস ভ্যাগাস নামে একটি গার্মেন্টসে তারা দীর্ঘদিন কাজ করতো। নিচতলায় কাজ ও ওপরের তলায় থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। দীর্ঘদিন কাজ করলেও তাদের কাগজপত্রের মেয়াদ শেষ হয়ে যায় ২০১৯ সালে। এর পরে তাদের কাগজপত্র বৈধ করার আশ্বাস দেওয়া হলেও সেটি আর করা হয়নি। কারণ সেই কোম্পানির ঐ দেশের অনুমোদন বাতিল হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে মানবেতর জীবন কাটছে তাদের।

তিনি আরো বলেন, আমরা বাংলাদেশ দূতাবাসে বহুবার গেলেও আজ নয় কাল এমন অজুহাতে আমাদের ঘুরাচ্ছে। বাসা থেকেও বের হতে পারছি না। কাজও নেই। এ অবস্থায় আমরা আসলে কি করব বুঝতে পারছি না। দয়া করে আমাদের দেশে আসার বিষয়ে সহযোগিতা করুন। বাংলাদেশ দূতাবাস কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে আমাদের চাইলেই দেশে পাঠাতে পারে।

এ বিষয়ে জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা যদি ওখানে গিয়ে কোনো সমস্যায় পড়ে আর সে ক্ষেত্রে দূতাবাস যদি সহযোগিতা না করে তাহলে এটি দুঃখজনক। হয়তো তারা ঠিকঠাক যোগাযোগ করতে পারেননি। নয়তো দূতাবাস তাদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে না। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা উচিত।

এ বিষয়ে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভস কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, তারা যদি ওখানে বৈধভাবে গিয়ে থাকে তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে দূতাবাসের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে কোম্পানির সঙ্গে কথা বলে হোক অথবা তাদের যদি সামর্থ্য না থাকে তাহলে বাংলাদেশে তাদের পরিবারের মাধ্যমে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করে হোক, যে কোনো উপায়ে তাদের সহযোগিতা করা উচিত।

এ বিষয়ে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক (অর্থ ও কল্যাণ) শোয়াইব আহমাদ খান বলেন, তারা আসলে কী সমস্যায় পড়েছে সেটা জেনে আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

এ বিষয়ে জর্ডানে বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার উইংয়ের কনসুলার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: