ঢাকায় এলো মেট্রোরেলের দ্বিতীয় ট্রেন সেট

2 June 2021, 10:06:29

রাজধানী ঢাকাবাসীর স্বপ্নের প্রকল্প মেট্রোরেলের ছয় কোচের আরেকটি সেট ট্রেন ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ট্রেন সেটটি উত্তরার দিয়াবাড়ীতে জেটিতে এসে পৌঁছায়। এর আগে গত ২১ এপ্রিল মেট্রোরেলের প্রথম সেট ঢাকায় পৌঁছায়।

মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা যায়, ট্রেনের ছয়টি কোচ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার থেকে ৯টার মধ্যে রাজধানীর দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেল ডিপোর কাছে ডিএমটিসিএলের নতুন জেটিতে পৌঁছেছে।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামীকাল বুধবার সকাল আটটা থেকে কোচগুলো বার্জ থেকে নামিয়ে উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সূত্র জানায়, দ্বিতীয় মেট্রো ট্রেন সেটবাহী জাহাজ গত ২১ এপ্রিল জাপানের কোবে সমুদ্রবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। ৯ মে বাংলাদেশের মোংলা সমুদ্র বন্দরে পৌঁছায়। মোংলা বন্দরে শুল্ক ও ভ্যাট সম্পর্কিত কার্যাদি সম্পন্ন করে ২৪ মে বার্জে করে নদী পথে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। তবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় ঝালকাঠিতেই নোঙর করে রাখা হয়। ২৮ মে পুনরায় ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।

এর আগে গত ২১ এপ্রিল মেট্রোরেলের প্রথম একসেট ট্রেন ঢাকায় আসে। গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ সেট ট্রেন তৈরি হয়। তৃতীয় সেট আগামী ১৩ আগস্ট ডিপোতে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে গত ১২ মে স্বপ্নের এই ট্রেন উত্তরা ডিপোর ভেতরেই ৫০০ মিটার এলাকায় চালিয়ে দেখা হয়। এর মাধ্যমে বৈদ্যুতিক ট্রেনের যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ।

জাপানের কাওয়াসাকি–মিতসুবিশি কনসোর্টিয়ামকে ২৪ সেট ট্রেন নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয় ২০১৭ সালে। দুপাশে দুটি ইঞ্জিন আর চারটি কোচের সমন্বয়ে ট্রেনের সেটগুলো তৈরি হচ্ছে জাপানে। এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়েছে পাঁচ সেট ট্রেন, যার দুটি এসে পৌঁছেছে।

সব মিলিয়ে ২৪ সেট ট্রেনের দাম পড়ছে তিন হাজার ২০৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। শুল্ক ও ভ্যাট মিলিয়ে এসব ট্রেন বাংলাদেশে আনার পর মোট খরচ হবে চার হাজার ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ট্রেনগুলোয় ডিসি ১৫০০ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা থাকবে। স্টেইনলেস স্টিল বডির ট্রেনগুলোয় থাকবে লম্বালম্বি সিট। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দুটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দুপাশে থাকবে চারটি করে দরজা। জাপানি স্ট্যান্ডার্ডের নিরাপত্তাব্যবস্থা–সংবলিত প্রতিটি টেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে এক হাজার ৭৩৮ জন। ভাড়া পরিশোধের জন্য থাকবে স্মার্ট কার্ড টিকিটিং ব্যবস্থা।

দেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি প্রায় ৬৫ শতাংশ। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৮৫ শতাংশ। দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৬০ শতাংশ এবং ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক ও ডিপো ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ৫৫ শতাংশ।

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।