নোয়াখালীতে বাদলের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা, ককটেল উদ্ধার

12 March 2021, 5:53:18

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে চলমান বিরোধ ও সহিংসতায় সিএনজিচালক আলা উদ্দিন নিহতের ঘটনার তৃতীয় দিন শুক্রবারও সর্তক অবস্থানে রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। পৌর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে সাতটি ককটেল ও ২৫টি লাঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এদিকে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করা হয়েছে। তবে আলা উদ্দিন ও আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ এনে বাদী পক্ষ থানায় বসে থাকলেও তা এখনও নথিভুক্ত করেনি পুলিশ।

গ্রেপ্তার মিজানুর রহমান বাদলকে চাপরাশীরহাট পূর্ব বাজারে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার দুপুরে নোয়াখালী বিচারিক আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীষা।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি জানান, বসুরহাট রূপালী চত্বর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে সাতটি ককটেল ও ২৫টি গাবের লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এসময় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। অস্ত্র উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যহত রয়েছে।

এদিকে বসুরহাট পৌর ভবনে হামলার অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার রাতে পৌরসভার কর্মচারী নূর নবী বাদী হয়ে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে প্রধান আসামি করে ৯৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন।

অন্যদিকে মঙ্গলবারের সংঘর্ষে সিএনজি অটোরিকশা চালক আলা উদ্দিন নিহতের ঘটনায় তার ছোট ভাই এমদাদ হোসেন বাদী হয়ে ১৬৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিলেও পরবর্তীতে আবেদনে সংশোধন হবে বলে আবেদনটি জমা নেয়নি পুলিশ।

আবেদনটিতে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, তার ভাই শাহাদাত হোসেন ও ছেলে মির্জা মাসরুর কাদের তাসিককে আসামি করা হয়েছে।

মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি মির্জা কাদেরের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা পিস্তল, শর্টগান, পাইপগান, রামদা, লোহার রড নিয়ে অর্ধশতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং প্রতিবাদ সভায় হামলা চালায়। এসময় মামলার চার নম্বর আসামি নাজিম উদ্দিন বাদল তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আলা উদ্দিনের পেটে গুলি করে মারাত্মক জখম করে।

এরপর পাঁচ নম্বর আসামি নাজিম উদ্দিন মিকনসহ তাদের সমর্থকরা আলা উদ্দিনকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। পরে ছয় নম্বর আসামি মাঈন উদ্দিন কাঞ্চন তার হাতে থাকা লোহার রড আলা উদ্দিনের পেটের মধ্যে ডুকিয়ে দেয়। পরে হামলাকারীরা চলে গেলে আলা উদ্দিনকে উদ্ধার করে প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ১১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে নোয়াখালী প্রেসক্লাব এলাকার রেডক্রিসেন্ট ভবনের সামনে থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলকে গ্রেপ্তার করে সাদা পোষাকের পুলিশ।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় আলা উদ্দিন নামের একজন সিএনজিচালক নিহত হন। হাসপাতালে এসে নিহত আলা উদ্দিনকে নিজের সমর্থক দাবী করেন মিজানুর রহমান বাদল।

সংঘর্ষে ওসি মীর জাহিদুল হক রনি ও পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত ১০জন।

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।