দেশে ইন্টারনেটের দাম বেশি না : মোস্তাফা জব্বার

14 May 2021, 9:19:22

দেশের বিভিন্ন মহল থেকে ইন্টারনেটের দাম বেশি বলে অভিযোগ উঠলেও তা সত্য নয় বলে দাবি করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ইন্টারনেটের যে দাম, তা মোটেই বেশি না। এটা এক ধরনের পুরনো ধারণা থেকেই তৈরি হয়েছে যে ইন্টারনেটের দাম বেশি।’

টেলিফোনে জাগো নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান (আইএসপি), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন এবং বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানি ইন্টারনেটের ওপর ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও সারচার্জ কমানোর দাবি জানিয়ে আসছে। আসন্ন বাজেটে এই দাবির প্রতিফলন দেখতে চায় তারা।

তবে আসন্ন বাজেটে মোবাইল ইন্টারনেটের ওপর ট্যাক্স কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে আবেদন দিয়ে রাখা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ইন্টারনেটের দাম বেশি এ বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত না। আপনি এ ব্যাপারে যদি তুলনা করেন একমাত্র ভারতের জিওর (মোবাইল নেটওয়ার্ক, ব্রডব্যান্ড ও ডিজিটাল সার্ভিস প্রোভাইডার) সঙ্গে তুলনা করতে পারবেন। একটি বিষয় আমরা ভুলে যাই, ভারতে ১২০ কোটি লোক বসবাস করে। তাদের ইন্টারনেটের পরিধি এবং অন্যান্য বিষয়গুলো যে পরিমাণ বড় সেই পরিমাণ বড় ইনফ্রাস্ট্রাকচার আমাদের দেশে গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) যে প্রাইসগুলো আছে এখন আমরা সেগুলো জেলা পর্যায়ে এমনকি ১২ থেকে ১৬ ইউনিয়ন পর্যন্ত কানেকশনগুলো দেই। সেগুলোর চার্জ মোটেই বেশি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনি যদি পৃথিবীর উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনা শুরু করে দেন তবে এই ভুলটা করবেন। কারণ বাংলাদেশ একটি কৃষিভিত্তিক দেশ। এখানে পাহাড়, নদী, জঙ্গল আছে। এরকম একটি দেশে ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়ে তোলা কঠিনতম কাজ ছিল। আমরা একসময় দেখেছি কেবল শহরের কিছু মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে। কিন্তু এই করোনাকালে এটি সম্প্রসারিত হয়েছে গ্রাম পর্যন্ত। আমরা ইনফ্রাস্ট্রাকচারকে থ্রিজি থেকে ফোরজিতে রূপান্তরিত করছি। আমাদের দিক থেকে যদি বলেন সরকার মাত্র ২৮৫ টাকা পার এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে। যা এক সময় এক লাখ সাতাশ হাজার টাকা ছিল।’

এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যেটা কমানোর দরকার সেটা কমানো হয়েছে। আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ৫৮৭ টি ফ্রি ওয়াইফাই জোন করে দিয়েছি। টেলিটক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন পরিচালিত বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন নেটওয়ার্ক (বিডিরেন) থেকে মানুষ বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে। আমি পারলে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট দিতে চাই। পারলে সাবসিডি দিতে চাই। কিন্তু ইন্টারনেটভিত্তিক বিজনেসের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের দাম বেশি বলে আমার মনে হয় না।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনি যদি একটি দিনমজুরের ক্যাপাসিটি থেকে দেখেন, তাহলে ইন্টারনেটের দাম একটু বেশি হবেই। তবে ইন্টারনেটের দামের চাইতে এখন যে সমস্যাটা অনেক বেশি সেটা হলো ইন্টারনেট ব্যবহার করার ডিভাইস আছে কি-না সেটা। কেউ যদি একটি ফিচার ফোন ইউজ করে তাকে আমি যে দামেই ইন্টারনেট দেই না কেন সেতো ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে না। সঙ্গে একটা স্মার্টফোন লাগবে। এই স্মার্টফোন কিনতে তার যে ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা দাম দিতে হবে সেটুকু সামর্থ্য তার নেই। তাই পরে ইন্টারনেটের দাম কমার প্রশ্ন । তাকে কম দামের দেশীয় মোবাইল কেনার সুবিধা করে দিতে হবে।’

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।