স্মার্ট সমাজ বিনির্মাণে নারী-পুরুষ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
মানুষ এবং সমাজের অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারিত করেছি। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সুবিধা পাচ্ছেন।”
‘নারীর অধিকার নিশ্চিত এবং তাদের ক্ষমতায়নের দায়িত্ব পালন করতে হবে পুরুষদের’ এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটি পরিবারে একজন পুরুষ কোনো নারীর স্বামী, কন্যা সন্তানের পিতা, বোনের ভাই। কাজেই পরিবারের নারীদের সুশিক্ষিত করে, স্বাবলম্বী করে তোলার প্রাথমিক দায়িত্ব পুরুষের। সংসারের ঘরকন্নার কাজ শুধু নারীরাই করবে, পুরুষরা চেয়ে চেয়ে দেখবে এই মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি নারীকেও শিক্ষা গ্রহণ করে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য নিজেদের সচেষ্ট হতে হবে। পরনির্ভরতা হওয়ার মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তবেই আমাদের নারীরা সমাজে মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারবেন।”
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সারা দেশে রাজস্ব ও উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে নারীর দারিদ্র্য নিরসন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য সরকার সময়োপযোগী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এশিয়ার দেশগুলোর শীর্ষে। জেন্ডার সমতা সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অবস্থান আজ বিশ্বে ৭ম। এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরাসরি অংশগ্রহণ করে ১৯ জন নারী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে সংরক্ষিত আসন ও নির্বাচিত ১৯ জনসহ মোট ৬৯ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। নতুন গঠিত মন্ত্রিসভায় দুইজন পূর্ণমন্ত্রী এবং ছয়জন প্রতিমন্ত্রিসহ মোট আটজন নারী রয়েছেন।”
তিনি বলেন, “আমাদের স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী, তৈরি পোশাক কর্মীদের ৮০ শতাংশের বেশি নারীকর্মী। স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচিত নারী প্রতিনিধির সংখ্যা ১০ হাজারের অধিক। নারী উন্নয়নের স্বীকৃতি হিসেবে আমরা জাতিসংঘের ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছি। এসডিজি অর্জনে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সূচকে এগিয়ে থাকায় আমরা ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’ অর্জন করেছি। তাই বাংলাদেশ আজ নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বিশ্বের কাছে অনুকরণীয়।”
শেখ হাসিনা বলেন, “নারী-পুরুষের সম্মিলিত অংশগ্রহণে একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমাদের লক্ষ্য। আশা করা হচ্ছে ২০৩৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন সুরক্ষা পায় এবং উন্নত ভবিষৎ গড়ে তুলতে পারে, সেজন্য আমরা ডেল্টা-প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন করেছি। আজ আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার পথে আমরা অনেকটাই সফল।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “‘বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়নকে টেকসই করতে একুশ শতকের স্মার্ট নাগরিক হিসেবে স্মার্ট সমাজ বিনির্মাণে নারী-পুরুষ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি নারীর প্রতি ইতিবাচক ব্যবহার করা এবং নারী-পুরুষ সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, “বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নারী-পুরুষ প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করব, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ এ এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।