টিকা সংগ্রহ ও প্রয়োগের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চায় বিএনপি

2 May 2021, 4:15:31

চুক্তি অনুযায়ী করোনার টিকা না দেয়ায় ভারতের সমালোচনা করেছে বিএনপি। একইসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের শুধুমাত্র ভারত থেকে সংগ্রহের চুক্তি জাতির জন্য এক চরম স্বাস্থ্য বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে বলেও মনে করে দলটি। অবিলম্বে টিকা সংগ্রহ, টিকা প্রদানের পরিকল্পনা ও সুস্পষ্ট রোডম্যাপ জনগণের সামনে সুনির্দিষ্টভাবে জানানোর দাবি জানিয়েছে দলটি।

শনিবার বিকালে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সরকারের কাছে এমন দাবি জানানো হয়। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়- বৈঠকে গত ২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বৈঠকের গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো অনুমোদিত হয়।

এছাড়া তারেক রহমান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সদস্যদের অবহিত করেন। তার পরিপূর্ণ রোগমুক্তির জন্য দোয়া কামনা করা হয়।

বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক সংকটের কথা বলে করোনার প্রথম ডোজের টিকা দেয়া হঠাৎ করে বন্ধ করায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিএনপি মনে করে, সকল বিশেষজ্ঞ ও বিএনপি এই বিষয়ে প্রথম থেকেই সরকারকে সতর্ক করেছে। কিন্তু সরকার কোনও কর্ণপাত না করে সরকারের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শুধুমাত্র ভারত থেকে একটি কোম্পানির ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে কার্যক্রম গ্রহণ করায় আজ সমগ্র জাতি বিপদগ্রস্ত হয়েছে।

বিএনপি মনে করে, টিকার বিকল্প উৎস অনুসন্ধান এবং বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের পরিকল্পনা আগে থেকেই প্রয়োজন ছিল। চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে টিকা সংগ্রহের সুযোগ থাকার পরেও তা করা গ্রহণ করা হয়নি। চীন প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলো ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য। কিন্তু এরপর পরেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বাংলাদেশে আগমন ও বাংলাদেশ সরকারের শুধুমাত্র ভারত থেকে সংগ্রহের চুক্তি জাতির জন্য এক চরম স্বাস্থ্য বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। সরকারকে এই দায়িত্বহীনতা এবং দুর্নীতির জন্য অবশ্যই জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে।

বৈঠকে বলা হয়, ‘মহান মে’ দিবসে দেশের ও বিশ্বের সকল শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে বিএনপি একাত্মতা ঘোষণা করা হয়। দেশে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক কোটি শ্রমিকের বহুমুখী কল্যাণে এই অনির্বাচিত সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, শ্রমিকদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এর নিশ্চিয়তা প্রদান, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা তাদের সন্তানদের উপযুক্ত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার। বিশেষ করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে লকডাউনে চাকরিচ্যুত, বেতন না পাওয়া, শ্রমিকদের মানবেতর জীবনের দিকে ঠেলে দিয়েছে। অবিলম্বে সব শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ, কাজের নিশ্চয়তা প্রদান এবং লকডাউনে কর্মচ্যুত শ্রমিকদের ক্ষতি পূরণ, খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

বিএনপির প্রস্তাবিত প্রণোদনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের কমপক্ষে তিন মাসের জন্য ১৫ হাজার টাকা হারে এককালীন অনুদান দেয়ার দাবি জানানো হয়।

সভায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে নিহত ও আহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও আটক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়।

এছাড়া সম্প্রতি ভারত কর্তৃক একতরফাভাবে অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায় শুধুমাত্র ভারতের ওপর নির্ভর না করে বিকল্প উৎস থেকে অক্সিজেনসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির ব্যবস্থা গ্রহণ ও দেশে অক্সিজেন উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।

বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু অংশ নেন।

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।