আমদানি বন্ধ হলেও পেঁয়াজের দাম বাড়েনি ঝিনাইদহে

22 March 2023, 11:32:19

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পরও ঝিনাইদহে চাষি পর্যায়ে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। হাটবাজারে নতুন ওঠা পেঁয়াজ আসছে প্রচুর। চাষিরা এ সময়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে বলেন, নইলে দরপতনে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

দেশের মধ্যে অন্যতম পেঁয়াজ উত্পাদনকারী এলাকা ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার ৯ হাজার ৭৫৪ হেক্টরে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। তন্মধ্যে শৈলকূপা উপজেলাতে ৮ হাজার ১৯০ হেক্টরে চাষ হয়েছে। এ বছর পেঁয়াজ চাষ কমেছে। গত বছর শৈলকূপা উপজেলায় ৮ হাজার ৭৮৫ হেক্টরে পেঁয়াজ চাষ হয়েছিল। উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৬৩ হাজার টন। এখন পুরোদমে খেত থেকে পেঁয়াজ তোলা চলছে।

তবে চাষিরা জানান, নাবি পেঁয়াজের ফলন কম হচ্ছে। আবার ভেজাল বীজের কারণে চাষি মারও খেয়েছেন। রত্নাট গ্রামের চাষি মো. মজিদ বিশ্বাস জানান, এবার এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। ফলন ভালো হয়নি। মঙ্গলবার শৈলকূপা হাটে ১ হাজার ১০০ টাকা মণ দরে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। অর্থাৎ প্রতি কেজি সাড়ে ২৭ টাকা। পার্বতীপুর গ্রামের চাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এবার এক বিঘাতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। ৪০ মণ ফলন হয়েছে। মঙ্গলবার হাটে এসে ১ হাজার ৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেন। অর্থাৎ প্রতি কেজি ২৬ টাকা ২৫ পয়সা। ফলন ভালো না হওয়ায় তার লাভ থাকবে না।

তেঘরি গ্রামের চাষি হবিবর রহমান জানান, এবার পাঁচ বিঘাতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। ২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ভেজাল বীজের কারণে চাষে মার খেয়েছেন। শৈলকূপা উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে বড় চাষি নুরুল আমিন পাপ্পু বলেন, এবার ১৪ বিঘায় পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনি আগাম চাষ করেছেন। বিঘাপ্রতি ১০০ মণের বেশি ফলন হচ্ছে। ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে চাষি এবার দাম পাবেন বলে জানান তিনি।

শৈলকুপার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, সাপ্তাহিক হাটের দিনগুলোতে প্রচুর পেঁয়াজ উঠছে। পাইকারি বাজারে দাম বাড়েনি। দিন ১৫ আগে প্রতি মণ ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। দাম বর্তমানে স্থির আছে। মঙ্গলবার শৈলকূপা হাট থেকে প্রায় ৫০ ট্রাক পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান যায়।

আড়ৎদার রেজাউল ইসলাম জানিয়েছেন, মানভেদে উপরে ১১০০ টাকা নীচে ৮০০ টাকা মন দরে পেঁয়াজ কিনেছেন। তিনি আরো বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে মণপ্রতি অন্তত ২০০ টাকা। শৈলকূপা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আনিসুজ্জামান খান বলেন, পেঁয়াজের ভরা মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। হেক্টরে ১৭ মেট্রিক টন করে ফলন হচ্ছে। আর বিঘাপ্রতি ৫৫ মণ থেকে ৬০ মণ ফলন হচ্ছে। তবে দাম ভালো পাচ্ছেন চাষি বলে জানান তিনি।

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।