ইন্টারনেট
ADS

বাংলাদেশের জন্য জিএসপি সুবিধা আরও ছয় বছর বাড়াতে ইইউর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

26 October 2023, 11:07:49

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলডিসি থেকে উত্তরণে উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশের জন্য ব্যবসায়িক সুবিধা (জিএসপি+) আরও ছয় বছর বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

ব্রাসেলসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে তাদের ব্যবসায়িক (জিএসপি) সুবিধাগুলো তিন বছরের পরিবর্তে ছয় বছর করার জন্য অনুরোধ করছি কেন না স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মতো বাংলাদেশ এখন কোভিড-১৯ মহামারি এবং যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিকভাবে চাপের মধ্যে রয়েছে।’

ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রীর কর্মব্যস্ততার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যবসায়িক সুবিধার সম্প্রসারণ এলডিসি দেশগুলোর উত্তরণের পর সমৃদ্ধির যাত্রাকে মসৃণ করবে।’

ইউরোপীয় কমিশন (ইসি), ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্যাংক (ইআইবি) এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।

২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশন এবং দ্বিপাক্ষিক আলোচনা, অন্যান্য পার্শ্ব ইভেন্টসহ মোট নয়টি ইভেন্টে যোগ দেন।

ইসি প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইন, ট্রেড কমিশনার এবং ইসি নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ভালদিস ডোমব্রোভস্কিস, ইসি ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিশনার জেনেজ লেনারসিক, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নিকোলা বিয়ার, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ড. হোয়ার এবং ইসি ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ কমিশনার জুটা উরপিলাইনেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে উপস্থিত তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আলাপকালে তার সঙ্গে দেখা হওয়া প্রতিটি ব্যক্তিই শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বিষয় আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের মাত্র দুই মাস আগে প্রধানমন্ত্রীকে এমন একটি বিশ্ব ফোরামে যোগদানের আমন্ত্রণ প্রমাণ করেছে বিশ্ব ও ইইউ প্রধানমন্ত্রীর পাশে রয়েছে।’

উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইইউর ভূমিকার প্রশংসা করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিনিয়োগের সবচেয়ে অনুকূল পরিবেশ উল্লেখ করে ইইউভুক্ত দেশগুলোকে বাংলাদেশে আরও বৃহত্তর বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মূলত রোহিঙ্গা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সম্পর্কের বিষয়টি এসেছে।

তবে আগামী নির্বাচন ও মানবাধিকার নিয়ে কোনো ইস্যু আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মানবাধিকার, মানবিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ একটি রোল মডেল। কেননা এই মহৎ উদ্দেশ্যেই দেশের ৩০ লাখ মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছেন।’

মোমেন জানান, ইসির ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিশনার জেনেজ লেনারসিক রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশকে বাড়তি সাড়ে ১০ মিলিয়ন ইউরো দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী ও ইইউ নেতারা বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যে বিদ্যমান ৫০ বছরের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে অনন্য উচ্চতায় উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছেন বলেও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ইইউর সঙ্গে একটি অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনার সম্মতি দিয়েছেন।

ড. মোমেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এবং সব বাঙালির তাকে নিয়ে গর্ব করা উচিত।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) পুরো অনুষ্ঠানের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় যুদ্ধ ও অস্ত্র বন্ধের আহ্বান জানানোয় অধিবেশনে উপস্থিত সব নেতা বার বার হাততালি দেন, তার কাছে ছুটে আসেন এবং তার বক্তব্যের জন্য তার প্রশংসা করেন।’

এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পুরো অধিবেশনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন শেখ হাসিনা।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া বক্তৃতার মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণটি ছিল সবচেয়ে মর্মস্পর্শী এবং সবচেয়ে আকর্ষণীয়।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।

ADS ADS

প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Comments: