Friday 26 April, 2024

For Advertisement

রোজায় পানিশূন্যতা যেন না হয়

29 April, 2021 5:24:12

গরমে বেশি বেশি পানি পান করতে হয়। কিন্তু রোজা রেখে তো আর সারাদিন পানি খাওয়ার সুযোগ নেই। তারওপর ঘাম, প্রসাবের মাধ্যমে সারাদিনে শরীর থেকে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়। কিন্তু রোজা রাখায় তা আর পূরণ করা সম্ভব হয় না। বয়স্কদের এ সমস্যা আরও বেশি। আবার যারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য ডাই-ইউরেটিকজাতীয় ওষুধ সেবন করেন, তাদেরও এ সমস্যা হতে পারে।

এদিকে ইফতারে শরবত বা অন্য কোনো পানীয় খেয়ে পিপাসা মেটানোর পর অনেকেই পর্যাপ্ত পানি খাবার কথা মনে রাখেন না। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়; যা থেকে সৃষ্টি হয় নানারকম শারীরিক সমস্যা। শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিলে শরীরে ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালান্স হয়। অর্থাৎ শরীরে তরলরূপে থাকা বিভিন্ন লবণ যেমন- সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্লোরাইড, ক্যালসিয়াম, ফসফেট, পটাসিয়ামের মতো বিভিন্ন উপাদানের অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়। এই অসামঞ্জস্যতার মাত্রা বাড়লে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই রোজা রাখলেও শরীর যেন পানিশূন্য না হয় সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

পানিশূন্যতার লক্ষণ
শরীরে পানিশূন্যতা হলে চোখ গর্তে চলে যায়, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া, মাথাব্যথা, কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া, দুর্বলতা, ত্বক শুকিয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা হয়।

প্রতিকার
সাধারণত প্রতি ঘণ্টায় এক গ্লাস পানি খেতে হয়। রোজা রাখলে সারাদিনের পানির চাহিদা পূরণ করতে সেই হিসাবে ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত বয়স, ওজন ও উচ্চতাভেদে প্রায় ১২ থেকে ১৬ গ্লাস পানি খাওয়া প্রয়োজন। ইফতারিতে বেশি খাবার খাওয়া ঠিক নয়। কারণ খাদ্য পরিপাকি করতে গিয়ে প্রচুর পানি ব্যয় হয়। ফলে শরীরে দ্রুত পানিশূন্যতা দেখা দেয়। পানিশূন্যতা থেকে বাঁচতে রমজানে শুধু পানি পরিমাণমতো খেলেই চলবে না। পাশাপাশি বেশি বেশি অন্যান্য তরল খাবার খেতে হবে, যাতে ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালান্স না হয়। যেমন: ডাবের পানি, লেবুর শরবত, স্যালাইন, গুড়ের শরবত, ফলের জুস, লাচ্ছি, দুধ, স্যুপ ইত্যাদি। মাছের ঝোল, ডাল খেলেও কিছুটা পানির চাহিদা পূরণ হবে।

ইলেকট্রোলাইট ব্যালান্সে ফলের রস
পানির চাহিদা পূরণের জন্য ফলের রস খেতে পারেন। এটি ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স করবে। এখন তরমুজ, বাঙ্গি, কাঁচা আম, মাল্টা, নাশপাতি, কমলা, বেলসহ নানারকম মৌসুমি ফল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এসব ফল দিয়ে জুস বা শরবত বানিয়ে খেতে পারেন।

শিশুদের পানিশূন্যতা রোধে
অনেক পরিবারেই ছোটদেরও রোজা রাখতে দেখা যায়। এতে শিশুদেরও দেখা দিতে পারেন পানিশূন্যতা। শিশুদের পানিশূন্যতা দূর করার জন্য ইফতারের পর বেশি পানি, ফলের জুস, ফল, ডাবের পানি খাওয়াতে হবে। কিছুক্ষণ পর পর খাওয়ানো ভালো। খেয়াল রাখুন বাচ্চারা যেন খুব বেশি ঠাণ্ডা পানি পানি না করে। নয়তো গলাব্যথা, জ্বর, ঠাণ্ডা বা টনসিলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বড়দের মতো ইফতারে ভাজাপোড়া বা তেলজাতীয় খাবার শিশুরাও খুব পছন্দ করে। কিন্তু এগুলো কম খেতে দিয়ে ফল, সালাদ বেশি খাওয়াতে হবে। পেট ঠাণ্ডা থাকবে।

বাড়তি সতর্কতা
আসলে রোজার সময় একটু সতর্ক হলেই আমরা পানিশূন্যতা থেকে বাঁচতে পারি। প্রয়োজন শুধু নিয়ম করে সঠিক পরিমাণে পানি খাওয়া আর যেসব কারণে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যায় সেগুলো এড়ানো। এজন্য ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত দৈনিক কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। একবারে বেশি পানি খাবেন না, বরং অল্প অল্প করে তৃষ্ণা অনুযায়ী পানি পান করুন। সাহরি ও ইফতারে তাজা ফল আর শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এই খাবারগুলোতে আছে প্রচুর আঁশ আর পানি। ফলে দেহে পানিশূন্যতা কমায়। খুব ঝাল-মসলাযুক্ত, ভাজাপোড়া খাবার সাহরি বা ইফতারে এড়িয়ে চলুন। এসব খাবার তৃষ্ণা বাড়ায়। খাবারে লবণ কম ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত লবণ শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি করে। ইফতারের পর চা বা কফি পানের অভ্যাস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে আনুন, অতিরিক্ত চা-কফি প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ায়, যার ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। ইফতারে কোমল পানীয় এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। এতে তৃষ্ণা তো মেটেই না বরং শরীর আরও পানি হারায়, এর সাথে যোগ হয় অতিরিক্ত ক্যালোরি। ঘামের সাথেও শরীর থেকে প্রচুর লবণ ও পানি বের হয়ে যায়। তাই রোজায় বাইরে গেলে রোদ এড়াতে ছাতা ব্যবহার করুন এবং দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকা এড়িয়ে চলুন।

For Advertisement

সম্পাদক ও প্রকাশক:- এ এফ এম রিজাউর রহমান (রুমেল), এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট  
  • প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সহযোগী-সম্পাদক:
    • গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
সহ -সম্পাদক:
    • হাসিনা রহমান শিপন,
নিউজ রুম ইনচার্জ :
    রাশিকুর রহমান রিফাত
© সকল স্বত্ব প্রতিচ্ছবি ডটকম ২০১৫ - ২০২২ অফিস: ৭২/২ উত্তর মুগদাপাড়া, ঢাকা ই-মেইল: dailyprotichhobi@gmail.com | মোবাইল: ০১৮১৮০৯৩১৩৭ ফোন:+৮৮০২৭২৭৭১৪৭

Developed by WebsXplore