Friday 29 March, 2024

For Advertisement

পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে, প্রতিষ্ঠান খোলার দাবি শিক্ষকদের

19 June, 2021 10:48:06

নন-এমপিও এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক লাখ শিক্ষকের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাঁরা একই সঙ্গে আর্থিক ও মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। একদিকে পরিবার-পরিজন নিয়ে হিমশিম অবস্থা, অন্যদিকে নিজেদের প্রিয় শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সামনে ফেরার ব্যাকুলতা—দুইয়ে মিলে রীতিমতো ট্রমার মধ্যে সময় পার করছেন তাঁরা। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে জোরালো মত দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

কালের কণ্ঠ’র সঙ্গে আলাপকালে তাঁরা বলছেন, এ মুহূর্তে এক লাখের বেশি শিক্ষক আছেন, যাঁরা এমপিওভুক্ত হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। করোনাকালে তাঁরা দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন। এর বাইরে ব্যক্তিমালিকানায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক লাখ শিক্ষক-কর্মচারী দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। সংসারের চাকা সচল রাখতে অনেকে দিনমজুর, রংমিস্ত্রি, মুদি দোকান, হকারি, রাইড শেয়ারিংয়ের মতো পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন। সমাজে শিক্ষকদের মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনও অভিন্ন সুরে বলেছেন, এটি জাতীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যদি মনে করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাহলে খুলে দেওয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে।

গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে দেশে শুরু হয় কঠোর লকডাউন। লকডাউনে বহু ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ খুঁজে পায়নি সরকার। এ কারণে দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ১৫ মাস পূর্ণ হলো। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

শিগগিরই যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না তার ইঙ্গিত মিলেছে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে। গত মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জে একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞরাও বলে থাকেন, করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। দুঃখজনকভাবে দেশে এখনো সে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। গত মার্চে খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি ছিল; কিন্তু প্রতিদিন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। এ অবস্থায় ঘরে বসে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, যাঁরা সরকারি বেতন-ভাতার আওতায় আসেননি, তাঁরা সাধারণত সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামান্য বেতনের সঙ্গে টিউশনির আয় দিয়ে সংসার চালাতেন। হঠাৎ করোনা মহামারি দেখা দেওয়ার পর লকডাউন শুরু হলে বিপদে পড়ে যান এসব শিক্ষক। টানা ১৫ মাস রোজগারের পথ বন্ধ থাকায় শিক্ষকরা যে কতটা দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছেন, সেটি বলে বোঝানো সম্ভব নয়।

তিনি আরো বলেন, এত দিন তো মানুষ দেখেছে শিক্ষার্থী ঝরে পড়তে। এখন মানুষ দেখছে শিক্ষকরাই ঝরে পড়ছেন। এটি এক অশনিসংকেত। বেঁচে থাকার সংগ্রামে শিক্ষকরা এভাবে ভিন্ন পেশায় চলে গেলে ভবিষ্যতের শিক্ষাব্যবস্থা হুমকিতে পড়বে। এ মুহূর্তে শিক্ষকদের আর্থিক সংকট থেকে বের করে আনার পাশাপাশি তাঁদের মানসিকভাবে শক্ত রাখার পদক্ষেপ নিতে হবে।

স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু কালের কণ্ঠকে জানান, করোনায় বিপর্যস্ত শিক্ষাকে গতিশীল করতে তাঁরা সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে ছয়টি দাবি তুলে ধরেছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বোর্ড কর্তৃক যথাযথ নিয়মে অ্যাফিলিয়েশনপ্রাপ্ত সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ বোনাস, উৎসব ভাতা, মেডিক্যাল ভাতা এবং বাড়িভাড়া দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন। প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষকদের চাহিদার প্রতিফলন ঘটেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য খাতে বরাদ্দ কমিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষা খাতে পুনর্জাগরণ জরুরি।

বঙ্গবন্ধু কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিষদের সভাপতি মো. কাবুল মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, দীর্ঘদিন প্রিয় শ্রেণিকক্ষের বাইরে থাকায় শিক্ষকরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এ অবস্থায় শুধু শ্রেণিকক্ষে ফেরা নয়, তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আর সরকারের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের জন্য প্রণোদনার পাশাপাশি সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা।

For Advertisement

সম্পাদক ও প্রকাশক:- এ এফ এম রিজাউর রহমান (রুমেল), এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট  
  • প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সহযোগী-সম্পাদক:
    • গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
সহ -সম্পাদক:
    • হাসিনা রহমান শিপন,
নিউজ রুম ইনচার্জ :
    রাশিকুর রহমান রিফাত
© সকল স্বত্ব প্রতিচ্ছবি ডটকম ২০১৫ - ২০২২ অফিস: ৭২/২ উত্তর মুগদাপাড়া, ঢাকা ই-মেইল: dailyprotichhobi@gmail.com | মোবাইল: ০১৮১৮০৯৩১৩৭ ফোন:+৮৮০২৭২৭৭১৪৭

Developed by WebsXplore