For Advertisement
ভোজ্য তেল: বিশ্ববাজারে কম, দেশে দাম বেশি হওয়ায় প্রশ্ন
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে চলছে সয়াবিনের মৌসুম; অন্যদিকে শীতের কারণে পাম তেলের চাহিদা কমায় আন্তর্জাতিক বাজারে কমছে এ দুই ভোজ্য তেলের দাম। গত এক সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে টনপ্রতি ভোজ্য তেল দুটির দাম সাত হাজার টাকার বেশি কমেছে। তবে দেশের বাজারে এর প্রভাব নেই। দাম কমার পরিবর্তে উল্টো বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে ক্রেতাদের প্রশ্ন—দেশের বাজারে কবে কমবে ভোজ্য তেলের দাম? একই প্রশ্ন পাইকারি ব্যবসায়ীদেরও। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় পাইকারি ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে আমদানিকারদের দাম কমাতে চাপ দিচ্ছেন।
তবে আমদানিকারকরা বলছেন, দেশের বাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমতে আরো সময় লাগবে। কারণ এখন যে তেল আসছে, তা আগে বাড়তি দামে বুকিং দেওয়া। এখনকার দামে বুকিং দেওয়া তেল আসতে লাগবে আরো দুই থেকে তিন মাস।
অর্থনৈতিক সূচক এবং আর্থিক বাজারের তথ্য সরবরাহকারী ট্রেডিংইকোনমিকস ডটকমের তথ্যানুসারে, গত ৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন পাম তেল বিক্রি হয়েছে এক লাখ চার হাজার ৯৬৬ টাকা। এক সপ্তাহ পর গত মঙ্গলবার সাত হাজার ১০৭ টাকা ৯৪ পয়সা কমে প্রতি টন পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৯৭ হাজার ৮৫৮ টাকায়। কিন্তু দেশীয় বাজারে পণ্যটির দাম কমার পরিবর্তে এই এক সপ্তাহে মণপ্রতি বেড়েছে ৪৫০ টাকা।
গত মঙ্গলবার খাতুনগঞ্জে প্রতি মণ পাম তেল বিক্রি হয়েছে পাঁচ হাজার ৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে ছিল চার হাজার ৬০০ টাকা।
একইভাবে এক সপ্তাহ আগে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে প্রতি টন এক হাজার ৪০০ ডলার, বর্তমানে তা কমে এক হাজার ১৮০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে। এ সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম টনপ্রতি কমেছে ২২০ ডলার।
গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে মণপ্রতি সয়াবিন তেলের বুকিং মূল্য ছিল পাঁচ হাজার ২৭৬ টাকা। এক সপ্তাহ পর ৭৬৫ টাকা কমে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৫১১ টাকায়। তবে অভ্যন্তরীণ বাজারে মণপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৪৬০ টাকা। খাতুনগঞ্জে বর্তমানে প্রতি মণ সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে পাঁচ হাজার ৪৬০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে যা বিক্রি হয়েছে পাঁচ হাজার টাকায়।
মালয়েশিয়ান পাম অয়েল কাউন্সিলের (এপিওসি) রিজিওনাল ম্যানেজার (বাংলাদেশ-ভারত) এ কে এম ফখরুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর—এই সময়টা যুক্তরাষ্ট্রে সয়াবিনের মৌসুম হওয়ায় বাজারে তেলের সরবরাহ পর্যাপ্ত। আবার শীত আসায় এশিয়ার দেশগুলোয় কমেছে পাম তেলের চাহিদা। এর ফলে পাম তেলের স্টক বেড়েছে। দেওয়ালির কারণে ভারতে ভোজ্য তেলের যে বাড়তি চাহিদা ছিল, তা-ও এখন নেই। চীনের স্থানীয় উত্পাদনও কিছুটা বেড়েছে। সব মিলিয়ে ভোজ্য তেলের দাম কমছে। তবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভোজ্য তেলের বাজারে। ফলে যে হারে ভোজ্য তেলের দাম কমার কথা, তার চেয়ে ধীরে কমছে। তিনি আরো বলেন, আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে দেশে যে তেল আসবে এখন তার জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দেওয়া হচ্ছে। এই তেল দেশে পৌঁছতে সময় লাগবে অন্তত দুই মাস। এর আগে তেলের দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে ২০ লাখ টনের বেশি। এর বেশির ভাগ আমদানি করা হয়। সাধারণত দক্ষিণ আমেরিকা (ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ আরো কয়েকটি দেশ), যুক্তরাষ্ট্র ও মালেশিয়া থেকে আমদানি করা হয় ভোজ্য তেল। নানা কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় দেশের বাজারে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ছয় দফা বাড়ানো হয় ভোজ্য তেলের দাম।
সিটি গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিত্ সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম কমেছে—এমন তথ্য এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে নেই।’
Latest
For Advertisement
- প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
-
- গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
-
- হাসিনা রহমান শিপন,
- রাশিকুর রহমান রিফাত
Developed by WebsXplore