Friday 19 April, 2024

For Advertisement

শীর্ষ দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স কমেছে

22 March, 2021 1:05:17

দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম রেমিট্যান্স। তবে এখনো পর্যন্ত অল্প কয়েকটি দেশ থেকেই রেমিট্যান্সের সিংহভাগ আসছে। আমাদের দেশের রেমিট্যান্স এখনো মধ্যপ্রাচ্যনির্ভর। তবে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী শীর্ষ দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। রেমিট্যান্স বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ত্রৈমাসিক প্রকাশনায় এ তথ্য দেখা গেছে।

মূলত করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন দেশে শ্রমিক ছাটাই হয়েছে। বাংলাদেশি শ্রমিকরাও ছাটাই থেকে বাদ পড়েনি। এছাড়াও করোনার কারণে শ্রমিকরা বিপাকে পড়েছেন। যার কারণে শীর্ষ দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর সময়ে আগের তিন মাসের তুলনায় কমলেও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, আলোচ্য সময়ে প্রবাসীরা ৬২৩ কোটি ১৫ লাখ ডলার বা ৫২ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা আগের প্রান্তিকের (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) তুলনায় ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ কমেছে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। এ সময়ে দেশটি থেকে প্রবাসীরা মোট ১৪৫ কোটি ৩১ লাখ ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা মোট আহরিত রেমিট্যান্সের সাড়ে ২৩ দশমিক ৩২ শতাংশেরও বেশি। রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ বাকি দেশগুলো হচ্ছে—আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন। এসব দেশ থেকে আগের প্রান্তিকের চেয়ে রেমিট্যান্স কমেছে।
অন্যদিকে যেসব দেশ থেকে বেশি রেমিট্যান্স আসে এমন হাতে গোনা দুয়েকটি দেশ থেকে রেমিট্যান্স বেড়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, কুয়েত ও অস্ট্রেলিয়া। যুক্তরাষ্ট্র থেকে অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে প্রবাসীরা ৮৩ কোটি ১৩ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। যা আগের প্রান্তিকের চেয়ে প্রায় দুই শতাংশ বেশি। আর আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি। কুয়েত থেকে গত তিন মাসে ৪৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার এসেছে। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। আর আগের প্রান্তিকের চেয়ে এক দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি। জার্মানি থেকে আগের প্রান্তিকের চেয়ে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। আগের বছরের একই সময়ে চেয়ে তা প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। গত তিন মাসে এদেশ থেকে ১ কোটি ৯০ লাখ ডলার এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা গেছে, শীর্ষ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘ দিন ধরে শীর্ষ দশে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান থাকলেও আগে অবস্থান আরো নিচে ছিল। রেমিট্যান্সের ওপর দুই শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার পর থেকে এদেশ থেকে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়ে গেছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার কারণে এদেশ থেকে রেমিট্যান্স বাড়তে পারে। আর অগ্রণী ব্যাংক রেমিট্যান্সের ওপর আরো এক শতাংশ বেশি ভর্তুকি দিচ্ছে। অর্থাত্ কেউ যদি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠায় তাহলে সে ১০৩ ডলার পাচ্ছে। আবার এ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র পাঠিয়ে একইভাবে আবার পাঠালে বাড়তি অর্থ পাওয়া যাচ্ছে। এভাবে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি ভর্তুকি থেকে অর্থ উঠিয়ে নিচ্ছে বলে ধারণা করছেন তারা। অবশ্য এক্ষেত্রে অন্যান্য খরচ কতটুকু সে বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা তারা দিতে পারেননি।

আরও পড়ুন:
প্রতি বছর নষ্ট হয় বিপুল টাকার চামড়া

অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের দেশে ব্যবসা বেশি। এক্সপোর্টের ক্ষেত্রেও অনিয়ম হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করেছেন। তারা বলছেন, কেউ যদি ১০০ ডলারের এক্সপোর্ট করে ৩০ ডলার রেমিট করতে বলেন তাহলে ঐ রপ্তানিকারক ৩০ ডলারের ওপর ভর্তুকি পাচ্ছেন। এভাবে রপ্তানি থেকেও রেমিট্যান্স বাড়তে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।

এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবীদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক হুন্ডি অনেক কমে গেছে। ভিসা বাণিজ্য নেই বললেই চলে। মধ্যপ্রাচ্যে অর্থনৈতিক লকডাউনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এসব কারণে আগের প্রান্তিকের চেয়ে বছরের শেষ প্রান্তিকে রেমিট্যান্স কমতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যারা থাকেন তাদের বেশির ভাগই স্থায়ী ভিত্তিতে থাকেন। তাদের আত্মীয়স্বজন এদেশে থাকে। ঐ স্বজনদের প্রয়োজন মাফিক তারা অর্থ পাঠান। করোনার সময়ে শহরের মানুষ বেশি আক্রান্ত হয়েছে। যাদের অনেকেই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর আত্মীয়। আবার তাদের অনেক আত্মীয়স্বজনের চাকরি এ সময় চলে গেছে। ফলে তারা বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকতে পারেন। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী ট্রাভেল কমে যাওয়ায় ব্যাগেজ রুলের আওতায় আমদানিও এ সময় কমেছে। যারা এ ধরনের ব্যবসা করে তারা সাধারণত প্রবাসীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে পণ্য কিনে আনেন এবং দেশে এসে প্রবাসীদের আত্মীয়দের টাকা ফেরত দেন। ট্রাভেল বন্ধ হওয়ায় এ ধরনের ব্যবসা কমে গেছে।

For Advertisement

সম্পাদক ও প্রকাশক:- এ এফ এম রিজাউর রহমান (রুমেল), এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট  
  • প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সহযোগী-সম্পাদক:
    • গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
সহ -সম্পাদক:
    • হাসিনা রহমান শিপন,
নিউজ রুম ইনচার্জ :
    রাশিকুর রহমান রিফাত
© সকল স্বত্ব প্রতিচ্ছবি ডটকম ২০১৫ - ২০২২ অফিস: ৭২/২ উত্তর মুগদাপাড়া, ঢাকা ই-মেইল: dailyprotichhobi@gmail.com | মোবাইল: ০১৮১৮০৯৩১৩৭ ফোন:+৮৮০২৭২৭৭১৪৭

Developed by WebsXplore