- রমজানের জুমার দিন যা যা করবেন
- টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, রিশাদের অভিষেক
- পালিয়ে বিয়ের পর কিশোরীকে ভবনের ছাদ থেকে নিক্ষেপ
- ব্রয়লার মুরগি ২২০ টাকা, কমেছে ডিমের দাম
- পর্ন তারকাকে অর্থপ্রদান মামলায় অভিযুক্ত ট্রাম্প
- উত্তরা থেকে আগারগাঁও মেট্রোরেলের সব স্টেশন চালু
- কাশিমপুর কারাগারে সাংবাদিক শামসুজ্জামান
- ২৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
- এবার মামুনুর রশীদ ইস্যুতে মুখ খুললেন শাহনাজ খুশি

বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে নতুন মুদ্রানীতি

প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের ওপর সবচেয়ে জোর দিয়ে চলতি অর্থবছরের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবারও বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়াতে ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। সরকারের লক্ষ্যমাত্রার আলোকে ৭৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ যোগান রাখা হয়েছে। মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, সংশ্লিষ্ট নির্বাহী পরিচালক ড. মো. হাবিবুর রহমানসহ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে গভর্নর বলেন, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে কাক্সিক্ষত গতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে বর্তমানে একটি সম্প্রসারণমূলক ও সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
‘অর্থবছরের সামনের দিনগুলোতে ব্যাংকিং খাতের সার্বিক তারল্য পরিস্থিতিসহ বিশ্ব অর্থনীতি ও আমাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির গতি-প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে মুদ্রানীতি ও এর হাতিয়ারসমূহের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষভাবে সদা প্রস্তুত রয়েছে।’
ফজলে কবির বলেন, ব্যাংকিং খাতে ইতোমধ্যে সৃষ্ট উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উদ্বৃত্ত তারল্য উৎপাদনশীল খাতসমূহের পরিবর্তে অনাকাক্সিক্ষতভাবে অনুৎপাদনশীল খাতসমূহে ব্যবহৃত হয়ে সার্বিক মূল্য পরিস্থিতি ও আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় যাতে কোনরূপ বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক সদা সতর্ক রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বার্ষিক ভিত্তিতে মুদ্রানীতি সম্বলিত ‘মনিটরি পলিসি স্টেটমেন্ট’ প্রকাশিত হলেও দৈনিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সার্বিক তারল্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখে প্রয়োজনে ‘ওপেন মার্কেট ওপারেশন’ পরিচালনার পাশাপাশি পরিস্থিতি বিবেচনায় অর্থবছরের যে কোনো সময়ই মুদ্রানীতির নীতিগত দিক পরিবর্তন বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই বিবেচিত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের বিষয়টি আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। চলমান করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে সরেজমিনে নিরীক্ষা কার্যক্রম অনেকটা শিথিল থাকায় প্রণোদনা প্যাকেজসমূহের কিছু অপব্যবহারের বিষয়ে ইতোমধ্যে দেশের গণমাধ্যম ও বিভিন্ন মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
ফজলে কবির জানান, বর্তমানে করোনার দুর্যোগময় পরিস্থিতির কারণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরেজমিনে পরিদর্শন/নিরীক্ষা কার্যক্রম কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে প্রযুক্তিনির্ভর অফ-সাইট নিরীক্ষা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
প্রণোদনা প্যাকেজসমূহের টাকা যেন অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যাংকসমূহের নিজস্ব নজরদারি বাড়িয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা জারি করা হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, করোনা পরিস্থিতির কাক্সিক্ষত উন্নতির সঙ্গে প্রণোদনা প্যাকেজসমূহের যথাযথ ব্যবহারের বিষয়ে সরেজমিনে নিরীক্ষা কার্যক্রম জোরদারকরণের পাশাপাশি এর ব্যবহার ও ফলাফল বিষয়ে বিশেষ সমীক্ষা পরিচালনার বিষয়টিও বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
‘এছাড়া আর্থিক খাতে দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং বিদেশে অর্থ পাচার রোধকল্পে বিএফআইইউ কর্তৃক আর্থিক গোয়েন্দা কার্যক্রম বাড়াতে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।’
গভর্নর বলেন, করোনা মহামারিজনিত কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি প্রত্যাশিত মাত্রায় উজ্জীবিত না হওয়ায় ব্যাংকিং খাতে ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে তারল্য বা তরল সম্পদ গড়ে উঠলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখনো অর্থনীতিতে অনেকটা অনিশ্চয়তাময় পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। পরিস্থিতিতে সিআরআর হ্রাসসহ মুদ্রানীতিতে ইতোপূর্বে যেসব শিথিলতা আনয়ন করা হয়েছিল তা পর্যায়ক্রমে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার সময় এখনো আসেনি বলে আমাদের বিবেচনায় প্রতিভাত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া মুদ্রানীতি প্রণয়নের পূর্বে ইলেকট্রনিক মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতির প্রবীণ কর্ণধার, বিশেষজ্ঞ মহল, প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ, প্রাক্তন গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালক পর্ষদের সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অংশীজনের নিকট থেকে যেসকল মতামত পেয়েছি সেখানেও মুদ্রানীতিতে ইতোমধ্যে প্রদত্ত শিথিলতা পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহারের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও এখনই তা করা সমীচীন হবে না বলেই সার্বিকভাবে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ফজলে কবির বলেন, আমরা তারল্যের মাত্রিক সম্প্রসারণ না ঘটিয়ে সরকারের সম্প্রসারণমূলক রাজস্ব নীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সতর্কতার সাথে একটি সম্প্রসারণমূলক ও সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি প্রণয়ন করেছি। প্রণীত মুদ্রানীতিতে অনুৎপাদনশীল খাতে ঋণের প্রসার না ঘটিয়ে অধিক উৎপাদনশীল ও কর্মসংস্থানসহায়ক খাত ও উদ্যোগসমূহে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।


প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Comments: