
ডিবি হেফাজতে আইনজীবীর সহকারীকে হত্যার অভিযোগ

বগুড়ায় ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে হাবিবুর রহমান হাবিব (৪০) নামে আইনজীবীর সহকারীকে (মুহুরি) গ্রেফতারের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার বিকালে তাকে কোর্টের দরজা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সন্ধ্যায় অচেতন অবস্থায় তাকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত পৌনে ৯টার দিকে তিনি মারা যান।
তার মামা অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল হক দাবি করেছেন, ডিবি পুলিশ তার ভাগ্নেকে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে।
জানা গেছে, গত ৩ আগস্ট তিনি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন খুকি বেগম নামে এক বৃদ্ধা। তিনি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের জোড়া তালপুকুর গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করেন। খুকি তালপুকুরে ছেলেদের সঙ্গে থাকতেন। ৫ আগস্ট সকালে বাড়ির কাছে লিচু বাগানে তার বস্তাবন্দি পচা দুর্গন্ধ লাশ পাওয়া পায়। তার দুই পা (হাঁটুর ওপর) বিচ্ছিন্ন ছিল।
নিকটে এক পা পাওয়া গেলেও অপর পায়ের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে শাজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা হয়। ডিবি পুলিশ ছায়া তদন্ত করছিল।
শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার পুলিশ জোড়া তালপুকুর গ্রামে মনোয়ারা (৬০) নামে এক নারীর বাড়ির পায়খানার সেপটিক ট্যাংকে নিখোঁজ ওই পা পায়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মনোয়ারাকে আটক করা হয়। তার বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে তাকে ডিবি পুলিশ অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। তিনি সম্ভবত এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার ব্যাপারে শাজাহানপুর উপজেলার জোড়া দামারপাড়ার আবদুল কুদ্দুস বাবলুর ছেলে মহুরি হাবিবুর রহমান হাবিবের নাম প্রকাশ করেন।
ডিবি ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজ হাসান দাবি করছেন, শাজাহানপুরে বৃদ্ধা খুকি বেগম হত্যা মামলায় মনোয়ারা নামে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিকালে হাবিবকে গ্রেফতার করে ডিবি অফিসে আনা হলে তিনি মনোয়ারাকে দেখে বুকে ব্যথা বলে চিৎকার করতে থাকেন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে তার মৃত্যু হয়।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শফিক আমিন কাজল বলেন, পুলিশ অচেতন অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনেন। সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ভর্তির পর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হলেও রাতে পৌনে ৯টার দিকে তিনি মারা যান।
তবে হাবিবের মামা বগুড়া অ্যাডভোকেট বার সমিতির সদস্য ও বগুড়া আইন কলেজের শিক্ষক মঞ্জুরুল হক দাবি করেন, তার আপন ভাগ্নে ও মহুরি হাবিব কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে তার মহুরির দায়িত্ব পালন করতো। মঙ্গলবার বিকালে তার (উকিল) মালতিনগর বাসায় ফাইলপত্র রাখার জন্য কোর্ট থেকে বের হলেই ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর ডিবি অফিসে নিয়ে পুলিশ তাকে হত্যা করেছে। তারা এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।


প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Comments: