Sunday 19 May, 2024

For Advertisement

ভারতকে ১৫ মার্চের মধ্যে সেনা সরাতে বললো মালদ্বীপ

14 January, 2024 11:15:18

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতকে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে দেশটি।

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট বলেন, ভারতীয় সামরিক কর্মীদের ১৫ মার্চের মধ্যে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। নির্বাচিত হওয়ার পর চীনে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মোহাম্মদ মুইজ্জু সাক্ষাৎকার করার কয়েকদিন পরেই এই ঘোষণা দিয়েছেন।

মালদ্বীপের মন্ত্রীরা নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফরের পর তার বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। এর জেরে ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আর ক্ষমতায় আসার পর চীনপন্থী মুইজ্জু সরকার বেইজিংয়ের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হতে থাকে।

তবে মন্তব্যের জেরে ওই তিন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়েছিল এবং মালদ্বীপের বিরোধীরা এই মন্তব্যের সমালোচনাও করেছিল। কিন্তু রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন ‘আমরা ছোট হতে পারি কিন্তু আমাদের ধমক দেওয়ার লাইসেন্স কারও কাছে নেই।’

মালদ্বীপ কী বলল

রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের পাবলিক পলিসি সেক্রেটারি আবদুল্লাহ নাজিম ইব্রাহিম বলেছেন, ‘ভারতীয় সেনারা মালদ্বীপে থাকতে পারবে না। এটি রাষ্ট্রপতি ডক্টর মোহাম্মদ মুইজু ও এই প্রশাসনের নীতি।’

রিপোর্ট অনুযায়ী, মালদ্বীপে ভারতের প্রায় ৮৮ সেনা রয়েছে।

মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি দুই মাস আগে ক্ষমতায় আসার পরপরই ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন, নিশ্চিত করতে হবে মালদ্বীপের মাটিতে যেন কোনও বিদেশি সেনার উপস্থিতি না থাকে।’

বর্তমান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার ছিল মুইজ্জুর একটি প্রধান নির্বাচনী ইশতেহার।

মালদ্বীপ ও ভারত সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি উচ্চ-পর্যায়ের কোর গ্রুপ গঠন করেছে। রোববার সকালে মালে’তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদর দড্তরে গ্রুপটির প্রথম বৈঠক হয়। বৈঠকে ভারতীয় হাইকমিশনার মুনু মাহাওয়ারও উপস্থিত ছিলেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

নাজিম বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বৈঠকের এজেন্ডা ছিল ১৫ মার্চের মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের অনুরোধ।

‘কার্যকর সমাধান’

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু নভেম্বরে মালদ্বীপ সফর করেন ও বর্তমান রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন। ভারত সরকারের সূত্রগুলি এর আগে এনডিটিভিকে বলেছিল, উভয় পক্ষ দ্বীপরাষ্ট্রের মাধ্যমে ভারতীয় সামরিক পরিষেবা ব্যবহার চালু রাখার জন্য ‘কার্যকরী সমাধানে’ সম্মত হয়েছে, কারণ সেনারা তাদেরই জনগণের স্বার্থে কাজ করে।

সেনারা ভারতের রাডার ও নজরদারি বিমান পরিষেবা দিয়ে আসছে। এই অঞ্চলে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ দেশের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে টহল দিতে সাহায্য করে। আয়তনে ছোট হলেও আঞ্চলিক রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে মালদ্বীপের। বিশেষ করে এর উত্তর ও দক্ষিণ অংশে কৌশলগত সামুদ্রিক রুটের কারণে দেশটি ভারত মহাসাগরে একটি মূল টোল গেটে পরিণত হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি মুইজ্জু এর আগে অসংখ্য জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থায় দুটি ভারতীয় হেলিকপ্টার, ধ্রুব-এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা স্বীকার করেছেন। ভারতীয় সেনাদের এই ছোট দলটি বেশ কয়েক বছর ধরে মালদ্বীপে অবস্থান করছে।

এর আগে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সহযোগিতা যৌথভাবে ভাগ করা চ্যালেঞ্জ ও অগ্রাধিকারের ওপর ভিত্তি করে। দেশটির জনকল্যাণ, মানবিক সহায়তা, দুর্যোগ ত্রাণ ও দ্বীপ রাষ্ট্রে অবৈধ সামুদ্রিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে ভারতের সামরিক সহায়তা।

মালদ্বীপের সাবেক রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম সোলিহের ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি থেকে ‘ইন্ডিয়া আউট’-এ স্থানান্তর কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়। ইব্রাহিম সোলিহের পূর্বসূরি আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে বলা হয় প্রথম মালদ্বীপের নেতা যিনি ২০১৩ সালে ভারতের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করেছিলেন এবং দ্বীপ দেশটির সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করে তোলেন। তার উত্তরসূরি ইব্রাহিম সোলিহ ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মেয়াদে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। আবদুল্লাহ ইয়ামিনের মেয়াদে ভারতের বিরুদ্ধে আখ্যান তৈরিতে সোশ্যাল মিডিয়া ও মালদ্বীপের ধিয়ারেস নিউজের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য বলে মনে করা হয়।

আবদুল্লাহ ইয়ামিন একটি ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত ও দুর্নীতির জন্য ১১ বছরের কারাদণ্ড পাওয়ায় গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকরতে পারেননি। তাই তিনি প্রার্থী হিসেবে মুইজ্জুকে মনোনীত করেছিলেন।

মুইজ্জু এর আগে বলেছিলেন, তিনি চীনা সৈন্যদের সঙ্গে ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে প্রতিস্থাপন করে আঞ্চলিক ভারসাম্য নষ্ট করতে চান না। মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ভারত ও চীনের সঙ্গে তার সম্পর্কের মধ্যে একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছেন। মালদ্বীপে বেইজিংয়ের অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে এবং এটি তার বৃহত্তম বহিরাগত ঋণদাতা। তবে চীনের ঋণ ফাঁদ নীতির কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে দ্বীপ দেশটি দেউলিয়ার শিকার হতে পারে।—– ইত্তেফাক

Latest

For Advertisement

সম্পাদক ও প্রকাশক:- এ এফ এম রিজাউর রহমান (রুমেল), এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট  
  • প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সহযোগী-সম্পাদক:
    • গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
সহ -সম্পাদক:
    • হাসিনা রহমান শিপন,
নিউজ রুম ইনচার্জ :
    রাশিকুর রহমান রিফাত
© সকল স্বত্ব প্রতিচ্ছবি ডটকম ২০১৫ - ২০২২ অফিস: ৭২/২ উত্তর মুগদাপাড়া, ঢাকা ই-মেইল: dailyprotichhobi@gmail.com | মোবাইল: ০১৮১৮০৯৩১৩৭ ফোন:+৮৮০২৭২৭৭১৪৭

Developed by WebsXplore