খৎনার সময় শিশুর মৃত্যু: দুই চিকিৎসককে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ
রাজধানীর মালিবাগে জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খৎনা করতে গিয়ে শিশু আহনাফ তাহমিদের (১০) মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার হাসপাতালের পরিচালক ডা. এসএম মুক্তাদির ও ডা. মাহাবুব মোরশেদকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক রুহুল আমিন তাদের সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
অপরদিকে তাদের রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী তাদের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে দুদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার রাতে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে শিশু আহনাফ তাহমিদের মৃত্যু হয়। তার বাবার নাম ফখরুল আলম। সে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আহনাফ তামহিদকে সুন্নতে খৎনা করানোর জন্য তার বাবা ফখরুল আলম হাতিরঝিল থানাধীন জেএস হাসপাতালের চিকিৎসক এসএম মুক্তাদিরের কাছে নিয়ে যান। তিনি ওই সময় কিছু টেস্ট লিখে দেন। ওই হাসপাতালেই টেস্টগুলো করে ছেলেকে নিয়ে বাসায় চলে যান। রাতে চিকিৎসক ফোন করে জানান, রিপোর্টগুলো ভালো আছে। খৎনা করতে কোনো সমস্যা নেই।
পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ৮টায় ছেলের খৎনা করানোর জন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি হাসপাতালে যান। পরে ছেলেকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। আসামিরা জানান, তাদের ২০/২৫ মিনিট সময় লাগবে। তখন আহনাফের বাবা-মা বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। ৩০/৩৫ মিনিট পর ওটি রুমের দরজায় নক করলে তারা জানান আরও কিছুক্ষণ সময় লাগবে।
এভাবে এক ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পর আহনাফের বাবা ফখরুল ওটি রুমে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে নিষেধ করা হয় এবং আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে বলেন চিকিৎসকরা। পরবর্তীতে সন্দেহ হলে ফখরুল জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করে দেখতে পান- তার ছেলে অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ডাক্তাররা আহনাফের বুকে হাত দিয়ে চাপাচাপি করছে এবং তার নাক ও মুখে নল দিয়ে রক্ত বের হওয়া অবস্থায় দেখেন।
তখন চিকিৎসক এসএম মুক্তাদিরকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সঠিক উত্তর দেননি। ছেলের এ অবস্থা দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে তারা কর্ণপাত না করে নিজেরাই আহনাফের দেহ-বুকে চাপাচাপি, হাত-পা মালিশ করতে থাকেন। এরপর জোর করে শিশুটির বাবাকে ওটি রুম থেকে বের করে দেওয়া হয়।
দুই ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও ডাক্তাররা শিশু আহনাফের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। পরবর্তীতে জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করে ফখরুল জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছে।
ঢাকা
প্রতিছবি ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Comments: