Thursday 28 March, 2024

For Advertisement

পশ্চিমবঙ্গে ভোট পুনর্গণনার দাবিতে আদালতে যাচ্ছে বিজেপি

6 May, 2021 7:14:04

পশ্চিমবঙ্গের একুশের ভোটে বিজেপি এক হাজার বা তার কম ভোটে হারা আসনে ভোট পুনর্গণনার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে। গেরুয়া শিবিরের দাবি, এমন আসনের সংখ্যা ৯২টি। তাদের ধারণা, এই অপ্রত্যাশিত হারের পেছনে এমন কিছু একটা ঘটনা রয়েছে যা সামনে আসা দরকার। এক্ষেত্রে নন্দীগ্রামসহ চারটি আসনে পুনর্গণনায় বিজেপি প্রার্থীদের জয়লাভ গেরুয়া শিবিরের দাবিকে উসকে দিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

সামাজিক মাধ্যমের সর্বত্র বিজেপি কর্মী-সমর্থক থেকে একুশের বিধানসভায় লড়াই করা প্রার্থীরাও এই দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। বুধবার কলকাতায় মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির রাজ্য কার্যালয়ের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, ভোট গণনায় কারচুপি হয়েছে। এটি আদালতে যাবেন বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।

বিজেপি সূত্র বলছে, গেরুয়া শিবিরের আইটি সেল নির্বাচন কমিশন থেকে এই কম ভোটে হারা আসনগুলোর তালিকা ও পরিসংখ্যান যোগাড় করেছে। যেমন তমলুক বিধানসভা আসন। এই আসনে তৃণমূলের কাছে মাত্র ৭৯৩ ভোটে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। তৃণমূল প্রার্থী সৌমেন কুমার মহাপাত্র পেয়েছেন এক লাখ আট হাজার ২৪৩ ভোট। অপর দিকে বিজেপি প্রার্থী হরেকৃষ্ণ বেরা পেয়েছেন এক লাখ সাত হাজার ৪৫০ ভোট। ঠিক একইভাবে দাঁতন বিধানসভায় বিজেপি মাত্র ৬২৩ ভোটে হেরেছে। এখানে তৃণমূলের প্রার্থী বঙ্কিমচন্দ্র প্রধান পেয়েছেন ৯৫ হাজার ২০৯ ভোট। আর বিজেপি প্রার্থী শক্তিপদ নায়েক পেয়েছেন ৯৪ হাজার ৫৮৬ ভোট।

এই পরিসংখ্যান ও তথ্য কলকাতায় আসা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার হাতে তুলে দেওয়া হবে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই আইনি পদক্ষেপের পথে যাওয়া হবে এমনটাই সূত্রের খবর।

গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপের বিষয়টি জানিয়ে বিজেপির রাজ্য নেতা রন্তিদেব সেনগুপ্ত বলেন,‘আমি যতদূর জানি স্বপন দাশগুপ্তর নেতৃত্বে ১৬ জনের একটি টিম পুনর্গণনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাবেন। যদি এই আবেদনে আদালত সাড়া দেন, তাহলে বড় ধরনের জালিয়াতি ফাঁস হতে পারে। এর তদন্ত হওয়া দরকার। এর পেছনে নির্বাচন কমিশনের কেউ যুক্ত কি না তা-ও দেখতে হবে। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী, ময়নায় অশোক দিন্দা, দিনহাটা নিশীথ প্রামানিক, ঘাটালে শীতল কাপাট এবং বীরভূমে অনুপকুমার সাহা কিন্তু পুনর্গণনায় জিতেছেন বলেই আমাদের সন্দেহ আরও বেড়েছে।’

অন্যদিকে মধ্যমগ্রামে বিজেপি প্রার্থী রাজশ্রী রাজবংশী অভিযোগ করেছেন ইভিএম হ্যাক করে তাকে হারানো হয়েছে। তার দাবি, ‘ভোটগ্রহণের শেষে আমার এজেন্টরা ইভিএমে কতটা চার্জ অবশিষ্ট আছে, তা লিখে এনেছিলেন। কিন্তু গণনার দিন ইভিএম খুলতে দেখা গিয়েছিল সেগুলোতে ৯৯ শতাংশ চার্জ রয়েছে। যা নিয়ে আমি অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। আমি জানতে চাই, ১০ ঘণ্টা ইভিএম চলার পর এবং এতোদিন স্ট্রং রুমে পড়ে থাকার পর কী করে ইভিএমে ৯৯ শতাংশ চার্জ থাকতে পারে? যে ইভিএমগুলোতে অপেক্ষাকৃত কম চার্জ দেখাচ্ছিল সেগুলিতে এগিয়ে ছিলাম আমি। আর যে ইভিএমগুলিতে ৯৯ শতাংশ চার্জ রয়েছে সেগুলোতে পিছিয়ে ছিলাম। শুধু তাই নয়, গত ১৭ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত মাত্র একদিন সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে আমাদের স্ট্রং রুমের মধ্যে ইভিএম দেখানো হয়।’

বিজেপির রাজ্য নেতা দিপ্তীমান সেনগুপ্ত অভিযোগ করেছেন, ‘এটা রাজ্যের ফলাফল হতেই পারে না। নির্বাচন কমিশনে রাজ্য সরকারের অনেক কর্মী ছিল। তাই সন্দেহ রয়েছে আমাদের। আমি দিনহাটার গণনায় ছিলাম। আমাদের ৫০২ ভোটে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে আমরা পুনর্গণনা করে জয় পেয়েছি। আমরা দলের রাজ্য নেতৃত্বর কাছে বাংলার সব আসনেই পুনর্গণনার দাবিতে সোচ্চার হওয়ার আবেদন জানিয়েছি। প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে আমাদের।’

আমতা বিধানসভা কেন্দ্র বিজেপি প্রার্থী দেবতনু ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটা অবাস্তব ফলাফল। পুনর্গণনার দাবি করছি। উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের তুলসীবেড়িয়া গ্রামে তৃণমূল নেতার বাড়িতে ভোটের পর পাঁচটি ইভিএম মেশিন উদ্ধার হয়েছিল। যার খবর আমরা সংবাদমাধ্যমে দেখেছি। তাহলে রাজ্যজুড়ে সব কেন্দ্রের মেশিন বাইরে বের হয়ে যাইনি এর গ্যারান্টি কে দেবে?’

সাংসদ তথা শান্তিপুরের নবনির্বাচিত বিধায়ক জগন্নাথ সরকারের অভিযোগ, ‘একটা কিছু হয়েছে। নাহলে মাত্র এক হাজার ভোটের ব্যবধানে এতগুলো আসন বিজেপি হারতে পারে না। আমারও প্রত্যাশিত ব্যবধান কম হয়েছে। রাজ্যের বেশিরভাগ বিধানসভা আসনে আমরা প্রথম দিকে ব্যাপকভাবে এগিয়ে ছিলাম। পরের দিকে ভোট কমে গেলো। মমতা বলেছিলেন, প্রথম দিকে আমরা পিছিয়ে থাকব। পরের দিকে জিতব। ঠিক তাই হয়েছে। এখানেই আমার সন্দেহ। পোস্টাল ব্যালট এবং বয়স্কদের ভোটেও গরমিল করা হয়েছে। এটা জনগণের রায় নয়। বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি নাড্ডাজি আমাদের নিয়ে বসবেন। পর্যালোচনা হবে। তাতে পুনর্গণনার দাবিকেই জোর দেওয়া হবে।’

For Advertisement

সম্পাদক ও প্রকাশক:- এ এফ এম রিজাউর রহমান (রুমেল), এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট  
  • প্রধান উপদেষ্টা: মোঃ আব্দুল্লাহ আবু, এডভোকেট- বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
সহযোগী-সম্পাদক:
    • গোলাম কিবরিয়া খান (রাজা),
সহ -সম্পাদক:
    • হাসিনা রহমান শিপন,
নিউজ রুম ইনচার্জ :
    রাশিকুর রহমান রিফাত
© সকল স্বত্ব প্রতিচ্ছবি ডটকম ২০১৫ - ২০২২ অফিস: ৭২/২ উত্তর মুগদাপাড়া, ঢাকা ই-মেইল: dailyprotichhobi@gmail.com | মোবাইল: ০১৮১৮০৯৩১৩৭ ফোন:+৮৮০২৭২৭৭১৪৭

Developed by WebsXplore